• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

অবরোধের কারণে কলাহাটে মন্দা

প্রকাশ: শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ৯:২০

অবরোধের কারণে কলাহাটে মন্দা

স্টাফ রিপোর্টার: কলাচাষেও পিছিয়ে নেই রাজশাহী। জেলার হাটগুলো থেকে কলা সরবরাহ হয়ে আসছে সারাদেশে। শুধুমাত্র পুঠিয়া উপজেলায় এক গ্রামের হাটে মাসে প্রায় ৮ কোটি টাকার কলা বেচাকেনা হয়। তবে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধের কারণে বর্তমানে মুখ থুবড়ে পড়েছে এ হাটের বাণিজ্য। চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দাবি করেছেন কলাচাষি ও ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ বছরের ব্যবধানে রাজশাহীতে কলাচাষ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। চলতি মৌসুমে জেলায় কলাবাগানের পরিমাণ ২ হাজার ৩৪৫ হেক্টর। কলার সবচেয়ে বড় হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ও ঝলমলিয়া বাজার। তবে নজর কাড়ছে অজপাড়াগায়ের মোল্লাপাড়া হাটও। প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার সকালে এ হাট বসে। শুধুমাত্র কলা বেচাকেনায় দেশজুড়ে ছড়িয়েছে এ হাটের নাম। কলা কিনতে মোল্লাপাড়া হাটে আসেন রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, সিলেট ও পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বড় বড় ব্যবসায়ীরা।
হাট ইজারাদাররা জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে কলার সিজন বৈশাখ ও চৈত্র মাস। সিজনে প্রতি হাটে এক কোটি টাকার কলা বেচাকেনা হয়। মাসে প্রায় ৮ কোটি টাকার কলা ক্রয়বিক্রয় হয় এ মোল্লাপাড়া হাটে। তবে অন্য সময়ে প্রতিহাটে বেচাকেনা হয় প্রায় ৬০-৭০ লাখ টাকার কলা।
তারা জানান, প্রায় এক হাজার চাষি কলা বিক্রির জন্য এ হাটে আসেন। ব্যাপারীর সংখ্যা ৫০০। তবে বড় ব্যাপারী রয়েছেন ১০০ জন। কলার কাঁদি স্থানীয় ভাষায় ‘কাইন’ নামে পরিচিত। সিজনে প্রতি কাইনের দাম পাওয়া যায় এক হাজার টাকা। তবে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০০-৫০০ টাকা দরে। বড় সাইজের কাইনের দাম পরিস্থিতি বিবেচনায় ৬০০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা।
স্থানীয়রা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতি হাটে ১৬-১৭ হাজার কলার কাইন বিক্রি হত। কিন্তু বর্তমানে অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে বেচাকেনা। মাত্র ৭-৮ হাজার কাইন বিক্রি হচ্ছে। দামও অনেক কম। দফায় দফায় হরতাল-অবরোধে বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের কারণে কলা পরিবহণে তৈরি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। নাশকতার শঙ্কায় গাড়ি পাঠানোর ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে এখানকার কলাচাষি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
জাকির হোসেন নামে এক কলাচাষি বলেন, ‘তুলনামূলক যে বাজার যাচ্ছে, এ বাজারের তুলনায় আরও কাইনপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা হতে হবি। তাইলেগ্যানি (তাহলে) আমরা জমিওয়ালা যেগল্যা, মানে আমরা কলা যারা করি, তাদের কিছু থাকবে। প্রতি কাইনে আমাদের খরচই ২০০-২৫০ টাকা আমাদের জমিতেই, অতটা ভাল করতে পারছি না। কিন্তু এটা পার ৫০০ টাকা আসতে হবে।’
এসময় একটি কাইন হাতে তুলে দেখিয়ে এ কলাচাষি বলেন, ‘এটা বিক্রি করেছি ২৪০ টাকা, কিন্তু এতে খরচই আমার ২৫০ টাকা চলে গেছে অলরেডি। সবদিয়ে আমরা লাভবান না।’
আরিফুল ইসলাম নামে এক কলা ব্যবসায়ী বলেন, ‘ব্যবসা হচ্ছে না। বাগানে গাছ মরে যাচ্ছে, রোগবালাই আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। আরেকটা বড় ঝামেলা আছে- দেশের অবস্থা খারাপ, গাড়ি-ঘোড়া আসতে পারছে না, ভাঙচুর হচ্ছে, ব্যাপারিরা আসতে পারছে না। এ কারণে আমরা কলা নায্য দামে বিক্রি করতে পারছি না। আমরা লস খাচ্ছি।’ আব্দুর রহিম নামে এক কলা ব্যাপারী বলেন, ‘বর্তমান যে বাজার, এ বাজারে কলা কিনে আসলে আমাদের লস হইতেছে। আগে ভাল ছিল, এখন মাইর হইতাছে।’
এ বিষয়ে কথা হয় মোল্লাপাড়া হাটের ইজারাদার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে যে সমস্ত ব্যাপারী আসেন, এদের গাড়ি নিয়ে আসা একটু সমস্যা। যার কারণে একটু মন্দা ভাব। যারা এ গাড়ি ভাঙচুর ইত্যাদি করছে এবং হরতাল-অবরোধ করছে, আমার মনে হয় এ হরতাল-অবরোধ না করা ভাল।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, তার কারণ, আমরা সাধারণ মানুষ কৃষক, আমরা এখানে লাঞ্ছিত হচ্ছি, এখানে ফসলের নায্য মূল্য পাচ্ছি না। একটা গাড়ি যখন ভাঙচুর হচ্ছে, তখন মালিকের ক্ষতি হচ্ছে। তো এখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমি মনে করব যে, এ ক্ষতির দিকে না গিয়ে, হরতাল-অবরোধ আছে; তবে এভাবে না, ভাঙচুর করে না। এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হওয়া উচিত।
অবশ্য কৃষি কর্মকর্তারাও চাষিদের লোকসানের বিষয়টি উপলব্ধি করছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিকল্প পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এ ব্যাপারে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, কলার মতো একটা বাণিজ্যিক ফল। এটা কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে যায়। রাজধানী ঢাকা, চিটাগাং, সিলেট সব জায়গায় যায়। এখন দূরে যেতে হলে, পরিবহন তো স্বাভাবিক হতে হবে। এখন স্বাভাবিক না হলে কী হবে, যে ভোক্তা বা কনজ্যুমার সে কিন্তু অনেক বেশি দামে কিনবে। আর যে বিক্রেতা সে কিন্তু কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হবে। এ জটিতলায় কিন্তু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মোজদার হোসেন আরও বলেন, কলাবাগান যেগুলো আছে, সে বাগানে ৪-৫ হাত পরপর গাছ দিতে হয়। দুই গাছের মাঝখানে ফাঁকা থাকে, ৫-৬ হাত। এর ভেতর দিয়ে কিন্তু আমরা আদা এবং হলুদ চাষ করতে পারব। তাতে কলাবাগান তো তার সর্বোচ্চ ফলন দিবে এবং আদা-হলুদে কিন্তু আমাদের ঘাটতি পূরণ করার পর দেশের প্রয়োজনে আমরা ব্যাপকভাবে উৎপাদন করতে সক্ষম হব।

সর্বশেষ সংবাদ

লম্বা ছুটিতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫ ১২:০৮
১০৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিপিএম ও পিপিএম পদক প্রত্যাহার
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫ ১২:০৮
নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিদায় বাংলাদেশের
মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫ ১২:০৮
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675