লালপুর প্রতিনিধি: দুবার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পরাজিত হন গ্রামপুলিশ মো. এসকেন আলী। তবুও থামেননি তিনি। বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। কিন্তু এবারও ভেস্তে যায় তাঁর সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্ন।
মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণার খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সোমবার যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়ন পত্র বাতিল করে নাটোর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা। উপজেলার লালপুর ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বালিতিতা ইসলামপুরের গ্রাম পুলিশ এসকেন আলী। তাঁর বাবা ওই এলাকার মৃত আকবর আলী মণ্ডল।
কান্না জড়িত কণ্ঠে এসকেন আলী বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু সাড়ে ৩ হাজার ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হবে এটা জানা ছিলনা। তৃতীয় শ্রেণিতে ওঠার পর বাবা মারা যান। সংসারের হাল ধরতে গিয়ে আর পড়াশোনা করা হয়নি। যেকোনো ভোট এলে খুব আনন্দ লাগে। অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছে করে। এর আগে দুবার ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হয়। ইউপি নির্বাচনের খরচ মেটানোর জন্য একটি গরু বিক্রি করতে হয়েছিল।
এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য সবার দোয়া চেয়ে পোস্টার লাগান এসকেন আলী। কিন্তু সে বছর আর্থিক সংকটের জন্য নির্বাচন করতে পারেন নি।
এসকেন আলী বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট করার পরিকল্পনা করেছিলাম। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ বছর নির্বাচন করার জন্য বাড়ির পাশের এক কাঠা জমি আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। মনোনয়ন ফরম তুলে ভোটের কাজ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত এতে ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বসত ভিটের আর এক কাঠা জমি অবশিষ্ট রয়েছে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, কোনো এলাকায় নির্বাচন করতে হলে সে এলাকার মোট ভোটার সংখ্যার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর পূরণ করে জমা দিতে হবে। নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে ১ শতাংশ ভোটার সংখ্যাছিল ৩ হাজার ৪৯৪ জন। কিন্তু এসকেন আলী মাত্র ৯৮০ জনের স্বাক্ষর জমা দিয়েছেন। তাই নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী শর্তপূরণ করতে না পারায় তাঁর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে।