• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

বরেন্দ্রভূমিতে অভিযাত্রীদের মিলনমেলা

প্রকাশ: শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১০:৫৬

বরেন্দ্রভূমিতে অভিযাত্রীদের মিলনমেলা

স্টাফ রিপোর্টার : অনুষ্ঠানের নাম ‘ব্যাকপ্যাক’। মিলনায়তন ভর্তি মানুষ। সবাই অভিযাত্রী। কেউ ছুটে বেড়ান পাহাড়-পর্বতে, কেউ ঘুরে বেড়ান পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু। নিজ নিজ অভিজ্ঞতার গল্প শোনাতে শনিবার দেশের সব বরেণ্য অভিযাত্রীরা এক ছাদের নিচে হয়েছিলেন বরেন্দ্রভূমির রাজশাহীতে।
ট্যুর মুরল্যান্ড নামের একটি সংগঠন তাদের একযুগ পূর্তিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডা. কাইছার রহমান মিলনায়তনে এ আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সঞ্চালক চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইউসুফ আলী বললেন, ‘যারা ভ্রমণ করেন তাদের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র বলে কোন কথা নেই। সবাই বন্ধু। তাই অনুষ্ঠানে সবাই অতিথি। কে আগে, কে পরে বক্তব্য দেবেন- এমন কোন বিষয় নেই। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অতিথিদের অভিজ্ঞতা বিনিময় চলল সেভাবেই।
শুরুতেই ট্যুর মুরল্যান্ড নিয়ে দেখানো হলো একটি প্রামাণ্যচিত্র। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমানের হাত ধরে ২০১১ সালে কীভাবে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা হলো এবং এরপর দেশ-বিদেশে এর সদস্যরা কতগুলো অভিযান করলেন তার সবই দেখানো হলো এতে।
এরপর বক্তব্য নিয়ে এলেন বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক এবং সুমেরু ও অ্যান্টার্কটিকা অভিযাত্রী ইনাম আল হক। বললেন, ‘ভ্রমণের বড় অসুবিধে হলো- যে এলাকায় বেশি ভ্রমণ হয় সেই এলাকার সবকিছু নষ্ট হয়। স্থাপনা, প্রাণী, উদ্ভিদ, মানুষও কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা শূন্যে নামানো যাবে না। কিন্তু যারা ভ্রমণে যাবেন তারা যেন এটা মনে করে যান যে, ক্ষতিগুলো সেগুলো সবচেয়ে কমিয়ে রাখবেন।’
কথা বললেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মামুন হুসাইন। বললেন, ‘বাংলাদেশ এত অপরূপ একটা দেশ-আপনি একেবারে খালি হাতে ভ্রমণ করতে পারেন। মানুষ আপনাকে ভালবাসার যে শক্তি সেটি কিন্তু আমার-আপনার সামনে চলে আসে। ভ্রমণ করলে মনে হয়, পুরো পৃথিবীটিই একটা গৃহ। আমরা সেই গৃহ খুঁজে বেড়াই।’
দুইবার এভারেস্ট আরোহনকারী একমাত্র বাংলাদেশী এম এ মুহিত বললেন, ‘আমরা চাই, এমন কোন দুর্গম জায়গা থাকবে না যেখানে বাংলাদেশের মানুষের পা পড়বে না। কিন্তু প্রকৃতির স্বাস্থ্য ভাল রাখতে হবে। প্রকৃতি ভাল না থাকলে আমি ভাল থাকব না। তাই যেখানে যাব, সেখানে অপচনশীল কোন কিছু কোথাও ফেলা যাবে না। পরিবেশটা ঠিক রাখতে হবে।’
পর্বতারোহী, আলোকচিত্রী ও চলচ্চিত্র গবেষক মীর শামসুল আলম বাবু বললেন, ‘ভ্রমণ করলে নিজেকে অবিষ্কার করা যায়। নিজের সক্ষমতা-অক্ষমতা বোঝা যায়। তাই মানুষের জীবনের জন্য ভ্রমণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ বিশ^ পরিব্রাজক ও সুমেরু অভিযাত্রী তারেক অণু বললেন, ‘ভ্রমণের জন্য চাই ইচ্ছাশক্তি। একজন রিকশাচালক দেশের সব শহর দেখবেন বলে সেই শহরে গিয়ে রিকশা চালান। এই ভ্রমণের জন্য ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন। অর্থ অনেক পরে।’
এসেছিলেন সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে বড় অবদান রাখা সাংবাদিক মোহসীন-উল হাকিম। তার কথা, ‘যারা সাগরে, নদীতে, পাহাড়ে-পর্বতে ঘুরে বেড়ান, তাদের আজ মিলনমেলা বসেছে। ভ্রমণ হলো লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটা চেষ্টা। এখান থেকেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর মনোবল পাওয়া যায়।’
মোটর সাইক্লিস্ট ও প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে খারদুংলা জয়ী বাইকার আবদুল মোমেন রোহিত তাঁর দুঃসাহসিক অভিযানের গল্প শোনান। শারীরীক সমস্যায় শরীরচর্চার অংশ হিসেবে সাঁতার শিখতে গিয়ে কীভাবে সাঁতারু হয়ে উঠলেন সেই গল্প শোনালেন বাংলা চ্যানেল বিজয়ী ডা. সাকলায়েন রাসেল। ‘নারীর চোখে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রামাণ্যচিত্র দেখালেন ভ্রমণ কন্যা’র সভাপতি ডা. সাকিরা হক। বাইকে ভ্রমণ কন্যাদের সারাদেশ ভ্রমণের গল্পও শোনান তিনি।
ভ্রমণকন্যা সাকিরা হকের সঙ্গে এসেছিলেন আইরিশ অভিযাত্রী মিস জেসিকা। তিনি বললেন, ‘বাংলাদেশ খুবই সুন্দর দেশ। ঢাকার পরে দ্বিতীয় স্থান হিসেবে রাজশাহী এসেছি। এই শহর অনেক সুন্দর।’ অনুষ্ঠানে পায়ে হেঁটে ৬৪ দিনে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করা ডা. বাবর আলী নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ‘পায়ে পায়ে ৬৪ জেলা’ শীর্ষক তিনিও একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখান।
ভ্রমণলেখক কালপুরুষ অপু কথা বলেন ভ্রমণের উপকারিতা তুলে ধরেন। পর্বতারোহী কাওছার রূপক আর সালেহীন আরশাদীও তাদের পর্বত আরোহনের দুঃসাহসিক অভিযানের বর্ণনা দেন। অনুষ্ঠানে পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল, আ.ন.ম জাফর সাদেক, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ট্রেকার মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, বাংলা চ্যানেল বিজয়ী আরেক সাঁতারু ডা. জ্যানজিবুল তারেকসহ দেশ বরেণ্য আরও অনেক অভিযাত্রী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ট্যুর মুরল্যান্ডের একযুগ পূর্তি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে একটি বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে মিলনায়তনের সামনের শহীদ মিনার চত্বরে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে আয়োজনের উদ্বোধন করেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী। পরে সংগঠনের একযুগ পূর্তি উপলক্ষে কেক কাটা হয়। এরপরই সকালের মিষ্টি রোদে দাঁড়িয়ে দেশবরেণ্য অভিযাত্রীরা একে-অপরের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন। ছবি তোলেন। বিকালে এই অভিযাত্রীদের রাজশাহীর পদ্মা নদীতে নৌভ্রমণ, আর রাতে শহরের আলোকায়ন ঘুরে দেখার কথা ছিল।

সর্বশেষ সংবাদ

সিগারেটের সর্বনিম্ন দাম ৯ টাকা করার দাবি
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫ ৫:০৮
দেশের বাজারে আলুর দাম কম, বাড়ছে রপ্তানি
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫ ৫:০৮
গুলশানে দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবক নিহত
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫ ৫:০৮
গাজায় তিন দিনে ২০০ শিশুর প্রাণ কাড়ল ইসরায়েল
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০, ২০২৫ ৫:০৮
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675