• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে স্বর্ণালী মুকুল

প্রকাশ: শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০২৪ ৫:০৪

গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে স্বর্ণালী মুকুল

স্টাফ রিপোর্টার : আমের জন্য খ্যাত রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গাছে গাছে এখন কেবলই আমের মুকুল। সারি সারি আমের গাছে এখন সৌরভ ছড়াচ্ছে মুকুল। আম চাষিরাও পরিচর্যায় নেমেছেন বাগানে বাগানে। এবার আমের ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।

তীব্র শীত পেরিয়ে আম গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার সঠিক সময়েই মুকুলের দেখা মিলেছে। আম চাষিরা গত বছরের তুলনায় এ বছর আমের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন। তবে পরিচর্যা খরচ বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

আমের গাছে এখন সৌরভ ছড়াচ্ছে মুকুল।

রাজশাহীতে গাছে গপাছে এরই মাঝে আসতে শুরু করেছে গুটি। এবার রাজশাহীর ৮৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, গাছে মুকুল কম আসলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এতেই বাম্পার উৎপাদন হবে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, এবার রাজশাহী জেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। এসব বাগন থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরে রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৫৭৮.৮ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছিলো। এসব বাগন থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার ছয় মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়।

গত বছর আম থেকে আয় হয়েছিলো ১৫২৮ কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৭৭০ টাকা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে আমের মুকুল আসা শুরু হয়েছে। এখন মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত মুকুল আসছে। এখন পর্যন্ত ৮৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে।

আরও পড়ুনঃ  সাফিক্স প্রিক্যাডেট কিন্ডারগার্টেনের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও বিদায় অনুষ্ঠান

এদিকে, রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট ও নগরীরর বেশ কিছু এলাকার অগ্রিম জাতের আমের গাছে গুটি এসেছে। এসব গাছে গুটির যত্ন নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে এখনও বেশিরভাগ বাগানে আমের গুটি ফুটেনি। ফলে মুকুলের পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

রাজশাহীর বাঘা এলকার চাষি আব্দুল কাদির বলেন, কিছু গাছে গুটি এসেছে। তবে সব গাছে মুকুল এবার সেভাবে আসেনি। কিছু কুড়ি এখনও আছে। কিছু মুকুল ফুটতে পারে। তবে ছোট ছোট গাছে মুকুল এসছে অনেক বেশি। রাজশাহীর চারঘাট এলকার আম চাষি একরামুল হক বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও যথা সময়ে আমের গুটি এসেছে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই সব গাছে গুটি আসবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ততেরর উপ-পরিচালক মাজদার হোসেন বলেন, এবার ৮৫ ভাগ আম গাছে মুকুল এসছে। কিছু গাছে এরই মধ্যে গুটিও দেখা দিয়েছে। রাজশাহীতে এবার প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। বাকিগুলোতে পর্যায়ক্রমে চলে আসবে। আমার আশা করছি মুকুল কম হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কম মুকুলেও ভালো উৎপাদন হবে। যেসব গাছে এখন গুটি এসছে সেগুলোকে একবার করে স্প্রে করতে পরামর্শ দিচ্ছি।

আরও পড়ুনঃ  নতুন তথ্য উপদেষ্টা হলেন মাহফুজ আলম

তবে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছু গাছে একবার ভালো ফলন দিলেও পরেরবার আর ভালো ফলন হয় না। ফলে রাজশাহীতে গতবছর বেশ ভালো মুকুল এসছিলো। এবার গড়ে ৫৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে। কিছু গাছে এখনও মুকুল আসবে। তবে সেটি খুব রেয়ার। যেসব গাছে গুটি দেখা দিয়েছে সেসব গাছে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে। তবেই ক্ষতি কম হবে।

এদিকে উত্তরের সীমান্তবর্তি জেলা চাঁপাইবাবগঞ্জে চলতি মৌসুমে ফুটেছে সোনালি মুকুল। অনেক গাছে আমের গুটিও আসতে শুরু করেছে। এ জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ২৫ হাজার মেট্রিকটন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে এই জেলায় প্রায় ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এই হিসাবে এবার জেলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন আম। গত মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিকটন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই কম-বেশি আমের চাষ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় শিবগঞ্জ উপজেলায়।

আরও পড়ুনঃ  এইচটিআই এর স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প পরিচালনা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একাধিক আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানের সারি সারি গাছে আমের মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগানমালিকেরা। ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রায় সব জাতের আমের উৎপাদন হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর কৃষিজমিতে বাড়ছে আমের আবাদ। আম্রপালি, ফজলি, ক্ষীরসাপাতি, ল্যাংড়া, গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আমের বাগান গড়ে উঠেছে। সম্প্রপ্রতি জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে ফজলি আম। এ কারণে আম রফতানির পরিমাণ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য, ইতালি, সুইডেন, কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম রফতানি হয়। উৎপাদিত আম বেচাকেনায় এই অঞ্চলের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি চাঙা থাকে সারাবছরই। আমভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য গোটা এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে নিয়ে আসে পরিবর্তন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, চলতি বছর আমের মুকুল কিছুটা কম হলেও উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না। দামে পুষিয়ে নেবেন কৃষকেরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ২৫ হাজার টন বেশি হয়ে উৎপাদন দাঁড়াবে ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675