• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

ঘূর্ণিঝড় রিমাল আসছে, উপকূলের ৫১ কিমি বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে

প্রকাশ: রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪ ১:৩৩

ঘূর্ণিঝড় রিমাল আসছে, উপকূলের ৫১ কিমি বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে

অনলাইন ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতের ১৫ বছর পরও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে খুলনা উপকূলের ৫১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। এই অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে উপকূলে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে দুটি মেগা প্রকল্পসহ বেশ কিছু প্রকল্প নেওয়া হলেও সেগুলোর বাস্তবায়নকাজ চলছে ধীরগতিতে। ফলে ওই অঞ্চলে দুর্যোগে ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এমন অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে নতুন ঘূর্ণিঝড় রিমাল।

তবে রিমাল মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৬০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। এ ছাড়া ৩টি মুজিব কিল্লা ও ৫ সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ের সময় এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে এবং ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাংশে আঘাত হানে। টানা ১৫ ঘণ্টার ঝড় ও ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। বিস্তীর্ণ এলাকায় দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম লবণপানিতে তলিয়ে যায়। বহু কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি, ফসলের খেত ও মাছের ঘের ভেসে গিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। নিহত হন শিশুসহ ৭৩ জন নারী-পুরুষ। এ ছাড়া হাজার হাজার গবাদিপশুর মৃত্যু হয়। উপকূলজুড়ে অর্থনীতিতে পড়ে বিরূপ প্রভাব।

আরও পড়ুনঃ  ‘লক্ষ্য ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া’

আইলার সেই ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলবাসী। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ৪ মে ফণী, ওই বছরের ১০ নভেম্বর বুলবুল, ২০২০ সালের ২০ মে আম্ফান, ২০২১ সালে ২৬ মে ইয়াস, ২০২২ সালের ১২ মে অশনি এবং ২০২৩ সালের ১৪ মে মোখা আঘাত হানে। এতে আরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বশেষ উপকূলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাত হানার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের বার্তা উপকূলবাসীকে নতুন করে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে; বিশেষ করে দুর্বল বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন উপকূলীয় জনপদে বসবাসকারী জনসাধারণ।

স্থানীয়রা জানান, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট উপকূলে দুই হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ৫১ কিলোমিটার জরাজীর্ণ ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। বাঁধের ওই অংশ ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট প্লাবন মোকাবিলার সক্ষমতা রাখে না। এমনকি আগামী বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকার প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

আরও পড়ুনঃ  সাহরি-ইফতারের সময়সূচি আলেম-ওলামাদের তৈরি : এটি নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা দাবি করছেন, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাটসহ উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অনেকটাই সংস্কার করা হয়েছে। আরও কিছু এলাকা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু পাউবো কর্মকর্তাদের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির মিল পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, শুধু মেগা প্রকল্প নয়, বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে। প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সময়মতো মেরামতের উদ্যোগ নিলে কম খরচ এবং কম সময়ের মধ্যে মানসম্মত কাজ করা সম্ভব। কিন্তু বর্ষার আগমুহূর্তে নদীতে জোয়ারের পানি বাড়লে পাউবো কর্তৃপক্ষ বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়। এতে একদিকে খরচ বাড়ে, অন্যদিকে তড়িঘড়িতে কাজ হয় নিম্নমানের। ফলে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকার ঝুঁকি কমছে না, বরং বাড়ছে।

আরও পড়ুনঃ  গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

জানতে চাইলে খুলনার উপকূলীয় বেশ কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে জানান পাউবো খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম। তিনি বলেন, বিভিন্ন পোল্ডারের বাঁধ পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েক স্থানে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত শুরু করা হবে। এ ছাড়া জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে সরকারিভাবে ৫ সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকেরাও দায়িত্ব পালন করবেন।

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675