• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

রাজশাহীর আদালতে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচ খেলোয়াড়ের জামিন

প্রকাশ: সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩ ৬:৪১

রাজশাহীর আদালতে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচ খেলোয়াড়ের জামিন

স্টাফ রিপোর্টার : ট্রেনে হারানো ব্যাগ খুঁজতে গিয়ে ধাক্কা লাগলে পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়া আগে এক নারী খেলোয়াড়কে চড় মারেন। থামতে বললে কলার ধরে চড় মারেন আরেক পুরুষ খেলোয়াড়কে। তার এমন আচরণ দেখে খেলোয়াড়েরাও তাকে মারেন। এতে তাঁর নাক ফেটে যায়। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের রোববার দুপুরের ঘটনার এ রকমই বর্ণনা দিচ্ছেন খেলোয়াড়েরা। সোমবার সকালে ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী পাঁচ খেলোয়াড় রাজশাহীর আদালতে জামিন নিতে গিয়ে ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এমন বর্ণনা দিয়েছেন। আদালত এই পাঁচ খেলোয়াড়কে মামলার পুলিশের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন। তাঁরা জামিনে থাকাকালীন সময় সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা তাদের দিকে খেয়াল রাখবেন। তাঁকেও খেলোয়াড়দের আচরণ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুপুরে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন পেয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে খেলোয়াড়েরা বাবা-মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। জামিন পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে চারজন মেয়ে ও একজন ছেলে। এদের বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যকে মারধর ও তাঁর স্ত্রীর গলার চেইন চুরির মামলা করা হয়েছে। শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস শেষ করে ট্রেনে ঢাকা থেকে রাজশাহী আসেন ২২ জন খেলোয়াড়। দুপুরে স্টেশনে নামার সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কর্মরত পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে তাদের ঝামেলা হয়। এরপর রাজশাহী রেলওয়ে থানা পুলিশ দুইপক্ষকেই স্টেশন থেকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে একজন কোচ ও ১২ জন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়া। এদের মধ্যে একজন খেলোয়াড় ছাড়া সবাইকেই থানায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতে তাদের আদালতে তোলা হয়। এই ১১ খেলোয়াড়ের মধ্যে তিনজন ছেলে ও আটজন মেয়ে। এদের মধ্যে ছয়জনের বয়স ১৮ বছরের বেশি। তাঁরা হলেন- আলী আজম (১৯), আকাশ আলী মোহন (২০), রিমি খানম (১৯), পাপিয়া সারোয়ার পূর্ণিমা (১৯), মোছা. দিপালী (১৯) ও সাবরিনা আক্তার (১৯)। আর গ্রেপ্তার কোচের নাম আহসান কবীর (৪৫)। রাতে এদের রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্যদিকে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচজন খেলোয়াড়কে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ তোলা হয়। এ সময় তাদের আইনজীবী মাইনুর রহমান জামিন প্রার্থনা করেন। তবে রাত হয়ে যাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়নি। আদালত এই শিশুদের সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত জামিন দেন। পরে সোমবার সকালে তারা আবার আদালতে হাজির হলে পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক এই পাঁচজনের জামিন মঞ্জুর করেন। আইনজীবী মাইনুর রহমান বলেন, এই শিশুদের বিরুদ্ধে এজাহারে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ নেই। যে অভিযোগ আছে তাও জামিনযোগ্য। তাই পুলিশ প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন। একইসঙ্গে আদালত আদেশ দিয়েছেন যে এই শিশুদের বিষয়ে খেয়াল রাখবেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা। তিনিও একটা প্রতিবেদন দেবেন। এই পাঁচজনের জামিন শুনানির সময় কারাগারে থাকা খেলোয়াড়দের স্বজনেরাও আদালতে গিয়েছিলেন। কারাগারে থাকা কুস্তি খেলোয়াড় আকাশ আলী মোহনের (২০) ভ্যানচালক বাবা আসাদ আলী বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ। ইউসেপ স্কুলে আমার ছেলেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়েছি। সাত-আট বছর ধরে আমার ছেলে খেলে। পুরস্কার-টুরস্কার ম্যালা আছে বাড়িতে। ট্রেনে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদস্যই প্রথমে মহিলা খেলোয়াড়ের গালে থাপ্পড় মারে। তখন প্লেয়ারদের মাথা গরম হয়ে গেছে। একটা ঘটনা ঘটে গেছে। এই ছেলেদের মধ্যে কয়েকজন আগামী ১৮ তারিখে ভারতে খেলতে যাবে। এই সুযোগটা যেন নষ্ট না হয়।’ কারাগারে থাকা খেলোয়াড় রিমি খানমের (১৯) মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘যুব গেমসে এবার তিনজনকে হারিয়ে আমার মেয়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছে। এদের ক্যারিয়ারটা নষ্ট হয়ে যাবে না বলেন? সবাইকে যে টাকাগুলো দিয়েছিল তা কোচের একটি ব্যাগেই ছিল। সেই ব্যাগই ট্রেনে হারিয়ে যায়। সবার মাথা খারাপ। সেই সময় ব্যাগ খুঁজতে গেলে এক খেলোয়াড়ের সাথে পুলিশের ধাক্কা লাগে। তখন সে স্যরি বলে। তারপরও প্রথমে মেয়েটাকে এবং পরে ছেলেটার কলার ধরে ওই পুলিশ থাপ্পড় মেরেছে। এরা তো ছেলে মানুষ, তখন এরাও মেরেছে। নাক লাজুক জায়গা, একটু লাগলেই রক্ত বের হয়ে যায়। অনেক অনুরোধ করেছি মামলা না করার জন্য। তাও শোনেনি। আমরা চাই এটার মীমাংসা হয়ে যাক।’ ট্রেনে থাকা ১২ বছর বয়সী এক কুস্তি খেলোয়াড় বলে, ‘খেলায় যারা জিতেছিল তাদের টাকা, মেডেলসহ সবই ব্যাগে ছিল। ওই ব্যাগই হারিয়ে যায়। খুঁজতে গেলে পুলিশের সাথে ধাক্কা লেগে যায়। ওই পুলিশ তখন এক আপুকে থাপ্পড় মেরে দেয়। তারপর এক ভাইয়া এসে ঝামেলা না করার জন্য বলে। তখন তাঁকেও গলা ধরে থাপ্পড় মারে। পুলিশ তখন হুমকি দেয়, তোদের সবার ক্যারিয়ার নষ্ট করে দেব। এরপরই এই মামলা করা হয়েছে।’ যে পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে মারামারি তার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী খেতুর গ্রামে। মারামারিতে পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়ার নাক ফেটে যায়। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বসে আছেন। হাতে ও মুখে ছিলাফোলা জখম। গোলাম কিবরিয়া দাবি করেন, তাঁর তিনটি দাঁতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খেলোয়াড়দের ঘুষিতে। কিবরিয়া বলেন, ট্রেন থামার পর তিনি নামছিলেন। তখন খেলোয়াড়রা ট্রেন থেকে নেমে আবার উঠছিল। তিনি আগে নামতে দেওয়ার জন্য বলেন। এই নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে খেলোয়াড়রা তাকে মারেন। ১২-১৩ জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে তিনি পেরে ওঠেননি। তিনি দাবি করেন, একজন খেলোয়াড়কেও তিনি মারেননি। কিবরিয়ার ভাই গোলাম সারওয়ার জানান, তাঁর ভাই পুলিশ সদস্য বলে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ঢাকার পুলিশ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে। দুপুরেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। রাতে তাঁরা গোলাম কিবরিয়াকে ঢাকায় নিয়ে যাবেন বলেও জানান গোলাম সারওয়ার।

সর্বশেষ সংবাদ

মাদক ব্যবসায়ী মা-ছেলে গ্রেফতার!
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১১:৫৭
কোহলির সেঞ্চুরিতে পাত্তাই পেল না পাকিস্তান
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১১:৫৭
নিউজিল্যান্ডকে যে লক্ষ্য দিতে চায় বাংলাদেশ
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১১:৫৭
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675