• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

আত্মসাৎ করা ৯ ব্রাহামা গরু চড়া দামে বিক্রি করেন ইমরান

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪ ৬:০৬

আত্মসাৎ করা ৯ ব্রাহামা গরু চড়া দামে বিক্রি করেন ইমরান

অনলাইন ডেস্ক : কোরবানির বাজারে ব্রাহামা জাতের ৯টি গরু চড়া দামে বিক্রি করেন সাদিক ফার্মের মালিক ইমরান হোসেন। প্রতিটি গরু প্রায় কোটি টাকায় বিক্রয় করা হয় বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় সাভারের কেন্দ্রীয় গো-জনন কেন্দ্র থেকে হাতিয়ে নেওয়া ১৫টি ব্রাহামা জাতের গরু প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৪ এ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই প্রদর্শন করা হয়েছিল।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এমন অনিয়মসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের দুই পরিচালক ও সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলায় কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক ডা. মো. মনিরুল ইসলাম, পরিচালক (উৎপাদন) ডা. এ বি এম খালেদুজ্জামান, গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের বায়ার অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার (লিভ রিজার্ভ) ডা. ফিরোজ আহমেদ খান, উপ-পরিচালক (লিভ/রিজার্ভ ট্রেনিং অ্যান্ড রিজার্ভ পদ) ডা. এ বি এম সালাহ উদ্দিন, সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন এবং ইমরানের বন্ধু তৌহিদুল আলম জেনিথকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাদিকের স্বত্বাধিকারী মো. ইমরান হোসেন কোনো প্রকার এলসি ছাড়া এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে পশু আমদানির ছাড়পত্র গ্রহণ না নিয়ে ২০২১ সালের ৫ জুলাই আমেরিকা থেকে ১৮টি ব্রাহমা গরু আমদানি করেন। আমদানির পর বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করে গরুগুলো ছাড়করণের চেষ্টা করেন। আমদানি নিয়ন্ত্রিত ব্রাহামা জাতের গরু প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা, আমদানি নীতি আদেশের অনুচ্ছেদ ২৬ এর উপ-অনুচ্ছেদ ৪১ এর বিধান ও কোয়ারেন্টাইন শর্তাবলী প্রতিপালিত না হওয়ায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জব্দ করা গরুগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জিম্মায় নিয়ে সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের তত্ত্বাবধানে ব্রাহামা জাতের গরুগুলো তিন বছর লালন-পালন করা হয়। যেখানে প্রতি মাসে খাবার, বাসস্থান, বিদ্যুৎ, পানি ও শ্রমিক খরচ বাবদ গড়ে ৩ কোটি ৮২ লাখ ৫৮ হাজার ৩২১ টাকা খরচ হয়। আদালতের নির্দেশনায় জব্দ করা গরুগুলো বিধি মোতাবেক প্রজনন এবং মাংস উৎপাদনে ব্যবহার করার আদেশ প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  উন্মুক্ত স্থানে নারী-পুরুষ সবার জন্য ধূমপান নিষিদ্ধ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

তিনটি গরু বিভিন্ন রোগে মারা যাওয়ায় পরবর্তীতে জীবিত ১৫টি ব্রাহামা জাতের গরু চলতি বছরের মার্চ মাসে আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে নিলাম না করে ব্রাহামা প্রজাতির ওই গরুগুলোসহ মোট ৪৪৮টি সরাসরি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি ও সাদিকের স্বত্বাধিকারী মো. ইমরান হোসেন ও সাদিক এগ্রোর স্বত্বাধিকারী তোহিদুল আলম জেনিথসহ অন্যান্যদের নিকট হস্তান্তর করেন। এ জাতীয় গরুর বেসরকারি পর্যায়ের কৃত্রিম প্রজনন দেশীয় গোশিল্পের এবং দুগ্ধ শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিধায় তা মাংস হিসেবে বিক্রয় করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু সাদিক এগ্রো ব্রাহামা গরুগুলোর সিমেন সংগ্রহপূর্বক কৃত্রিম প্রজননের ব্যবস্থা করে ব্যাপক আকারে ব্রাহামা গরুর পালনের মাধ্যমে হস্ত সরকারি নীতিমালার বরখেলাপ করে দেশীয় গোশিল্পের এবং দুগ্ধশিল্পের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করেছে।

আরও পড়ুনঃ  সিআইডি প্রধানসহ পুলিশে বড় রদবদল

অনুসন্ধান প্রতিবেদন বলছে, আসামি মো. ইমরান হোসেন ও তোহিদুল আলম জেনিথসহ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিশনের সদস্যরা ব্রাহামা প্রজাতির ১৫টি গরু জবাইপূর্বক মাংস বিতরণ না করে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। শুধু তাই নয় পরবর্তীতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বিডিএফএ এবং বিপিআইসিসি কর্তৃক আয়োজিত ঢাকার আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে অনুষ্ঠিত প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৪ এ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আত্মসাৎ করা গরুগুলো প্রদর্শন করেন। এছাড়া কোরবানির বাজারে গরুগুলো উচ্চ দামে বিক্রয়ের জন্য তোলা হয়। গত ৩ জুলাই দুদকের অভিযানে ব্রাহামা জাতের ৬টি গরু উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ৯টি গরু পবিত্র ঈদ-উল-আজহার সময় প্রতিটি প্রায় কোটি টাকা দরে বিক্রয় করা হয় বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুনঃ  নিয়ামতপুরে সুলভ মূল্যের খাদ্যসামগ্রী বিক্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪২০/৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিষিদ্ধ ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরুসহ ৪৪৮টি গবাদিপশু কোনো ধরনের নিলাম ছাড়া সাদিক অ্যাগ্রোর মাধ্যমে জবাই করে ৬০০ টাকা কেজি দরে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি, গোপনে ব্রাহমা গরু বিক্রি ও গরুর সিমেন বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে গত ২, ৩ ও ৪ জুলাই সাদিক অ্যাগ্রোর মোহাম্মদপুর, সাভার, নরসিংদী ও খামারবাড়ি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে অভিযান চালায় দুদক টিম। অভিযানে অধিকাংশ অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ১৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ছাগল সাদিক অ্যাগ্রো থেকে কিনে এক লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করেছিলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে ছাগলটি আর ওই খামার থেকে নেননি। এ ঘটনার পর সাদিক অ্যাগ্রো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে অবৈধভাবে খাল ও সিটি কর্পোরেশনের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা সাদিক অ্যাগ্রোর খামার ভেঙে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675