অনলাইন ডেস্ক : ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাজারের হরিমন্দির ও কালীমন্দিরে নির্মাণাধীন প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে সন্দেহভাজন হিসেবে সঞ্জিত বিশ্বাস (৪৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, এই ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক।
সোমবার বিকেলে ফরিদপুর জেলা পুলিশের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়। গ্রেপ্তার সঞ্জিত বিশ্বাস ভারতের নদীয়ার নিশিকান্ত বিশ্বাসের ছেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাজারে হরিমন্দির ও কালীমন্দিরে নির্মাণাধীন প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রোববার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় দেখেন হরিমন্দিরে কার্তিক ঠাকুরের হাতের আঙুল, ময়ূরের গলা মোচড়ানো, ঘোড়ার কান ও খুর, অসুরের হাতের আঙুল এবং কালীমন্দিরে গণেশের হাতের আঙুল ও শুঁড় ভাঙা। তখন উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে এসপি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ঘটনার বিষয়ে তদন্তকালে কালীমন্দিরের সামনে পরিত্যক্ত খাটের ওপর শোয়া অবস্থায় একজন ও খাটের পাশে মাটিতে আরেকজনকে দেখা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে একজনকে (বৃদ্ধ ব্যক্তি) স্থানীয়রা পরিচিত বলে শনাক্ত করেন। অপর ব্যক্তিকে নাম–পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তিনি জানাননি। তখন সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই ব্যক্তি কখনো বাংলা এবং কখনো হিন্দিতে কথা বলেন। নাম বলেন সঞ্জিত বিশ্বাস (৪৫), বাবা নিশিকান্ত বিশ্বাস। গ্রাম নদীয়া এবং তিনি ভারতীয় নাগরিক বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার নিয়ে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া তাঁকে আমরা জিডি–মূলে ১৫১ ধারা মোতাবেক আদালতে পাঠিয়েছিল। এ ঘটনার তদন্ত অব্যাহত আছে।’
ভাঙ্গা পূজামণ্ডপ কমিটির সভাপতি বাবু জগদীশ চন্দ্র ও হরিমন্দিরের সভাপতি স্বপন সাহা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্বৃত্তরা সুযোগ বুঝে অপকর্মটি করেছে। আমরা সর্বজনীন দুর্গা উৎসব শান্তিতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পালন করতে চাই। এ ব্যাপারে প্রশাসনসহ ভাঙ্গার সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা কামনা করছি।’
খবর পেয়ে রাতে সেনাবাহিনীর একটি টহল টিম ও ফরিদপুর পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে পূজামণ্ডপ কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল বলেন, ‘যারাই এসব অপকর্ম করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূজা চলাকালীন মণ্ডপে নিরাপত্তার পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পুলিশ বাহিনী কাজ করবে। একই সঙ্গে ভাঙ্গায় ৯২টি পূজামণ্ডপ পরিচালনা কমিটিকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।’-আজকের পত্রিকা