স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে নবজাতক সন্তান বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনায় স্বামী মো. রহিদুলের (৪০) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্ত্রী জান্নাতুল খাতুন (২৫)। রোববার রাতে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। আসামি রহিদুল নগরীর সিলিন্দা এলাকার বাসিন্দা।
জান্নাতুল তাঁর মামলার এজাহারে আসামি হিসেবে শুধু স্বামী রহিদুলের নাম দিয়েছেন। তবে তদন্তের সময় বাচ্চা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত আরও তিনজনকে পেয়েছে পুলিশ। রোববার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রহিদুলের পাশাপাশি এ তিনজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই তিনজন হলেন হলেন- নবজাতক কেনাবেচার দালাল তরিকুল ইসলাম, ক্রেতা গোলাম শাহানুর এবং বিউটি খাতুন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাফুজুল ইসলাম এই চারজনকেই গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার মামলার চার আসামিকেই আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাঁরা নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দেন। পরে আদালত ওই বাচ্চাকে তার মায়ের জিম্মায় দেন।
গত ১০ নভেম্বর জান্নাতুল খাতুন নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার একটি ক্লিনিকে কন্যা সন্তান প্রসব করেন। রহিদুলের আগের স্ত্রীর আরও দুটি সন্তান আছে। ১২ নভেম্বর রহিদুল নার্সিং হোমে জান্নাতুলকে জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য বাচ্চাটিকে শিশু হাসপাতালে নিতে হবে। এ কথা বলে তিনি বাচ্চা নিয়ে গিয়ে দালাল তরিকুলের মাধ্যমে গোলাম শাহানুরের কাছে ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। শাহানুর তাঁর বোনের জন্য বাচ্চাটি কিনেছিলেন।
কিন্তু দত্তক দেওয়ার মতো কোন কাগজপত্র করে না দেওয়ায় দুই দিন পর তিনি বাচ্চাটি আবার তরিকুলকে ফেরত দেন। পরে ৩০ হাজার টাকায় তরিকুল আবার নিঃসন্তান বিউটি খাতুনের কাছে বাচ্চাটি বিক্রি করেন। বিউটি খাতুনের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে। স্বামী বাচ্চা বিক্রি করে দেওয়ায় জান্নাতুলের কান্না থামছিলই না।
বিষয়টি দেখে এক প্রতিবেশী পুলিশকে জানান। পরে রোববার বিকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা কাঁকনহাট গিয়ে বিউটির কাছ থেকেই বাচ্চাটি উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে রহিদুলকে আটক করা হয়। তখন তিনি পুলিশকে জানান, অভাবের তাড়নায় তিনি বাচ্চাটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বাচ্চা বিক্রির টাকায় তিনি নার্সিং হোমের বিল পরিশোধ করেন।