স্টাফ রিপোর্টার : ‘আমরা আগামীতে যা করতে চাই তা জনগণকে সাথে নিয়ে করতে চাই এবং জনগণকে জানাতে চাই। বিএনপি এমন একটি দল যে দলের প্রতি জনগণের আস্থা আছে। বিএনপির সকল কিছুর উৎস জনগণ। তাই জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, বিগত স্বৈরাচারের সময় আমাদের নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। এটি গায়েবি মামলা নামে সারাদেশে পরিচিত। অবশ্যই আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কথা বলছি। এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া, চলমান প্রক্রিয়া এটি। একবারে হয়তো সম্ভব হবে না। পর্যায়ক্রমে নিশ্চয় আমরা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করাব বা করাতে সক্ষম হবো।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, ষড়যন্ত্র সফল হলে ফের ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়তে হবে নেতা-কর্মীদের। কাজেই প্রতিটি নেতা-কর্মীকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। যারা নির্বাচনী মাঠ ফাঁকা মনে করছেন চরম ভুল করছেন। সামনে অসম্ভব শক্তির অদৃশ্য দেয়াল অপেক্ষা করছে। টিকে থাকতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ যা চায় তাই করতে হবে। এজন্য বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে জনগণের দ্বারে দ্বারে যেতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীতে যা করতে চাই তা জনগণকে সাথে নিয়ে করতে চাই এবং জনগণকে জানাতে চাই। বিএনপি এমন একটি দল যে দলের প্রতি জনগণের আস্থা আছে। বিএনপির সকল কিছুর উৎস জনগণ। তাই জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। জনগণের সঙ্গে থাকলে সব কিছু অর্জন সম্ভব। আমাদের টিকে থাকতে হলে জনগণের সাথে থাকতেই হবে।’
বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে নেতাদের নানা প্রশ্নেরও জবাব দেন তারেক রহমান।
বগুড়ার অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে জানান, বর্তমানে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে আনছে, কিন্তু আদালতে সঙ্গে সঙ্গে জামিন হচ্ছে। অথচ আগে বিএনপির নেতাকর্মীর জামিন হয়নি এত দ্রুত। এই বিচারকদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ওদের পার্থক্যটা এখানেই। আমরা যে বৈষম্যের শিকার হয়েছি, সেটিকে আমরা ভাঙতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যের শিকার যাতে মানুষ না হয়, সেই প্র্যাকটিসটা আমরা গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন। বিগত স্বৈরাচার সরকার শুধু বিচার ব্যবস্থা নয়, প্রতিটি ব্যবস্থাকে ভেঙেচুরে নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা দেখেছি কোনটা ডামি নির্বাচন, কোনটা নিশিরাতের নির্বাচন, কোনটা ভোট ডাকাতির নির্বাচন।
কোনোবারই প্রকৃত জনপ্রতিনিধি ছিল না। তাই তারা যা ইচ্ছা তা-ই করেছে। আমরা আগামী দিনে চাইছি প্রকৃত একজন জনপ্রতিনিধি। আগামী দিনে যারা যোগ্য, সেই যোগ্য মানুষটিকে যোগ্য জায়গায় স্থান যদি আমরা দিতে পারি, তাহলেই এই দেশটাকে আমরা পরিবর্তন করতে পারব।’
রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে সকল তথ্য নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে কি না, এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘এখানে একটি বিষয় আছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কিছু বিষয় থাকে। এই বিষয়, যেগুলোকে স্বাভাবিক নিরাপত্তার নজরে দেখতে হবে। সব ডিসক্লোজ করা সব সময় বোধ হয় করা যায় না, সম্ভব না। এর বাইরে যেগুলো থাকবে সেগুলো অবশ্যই স্বচ্ছ থাকবে। যে কেউ দেখতে পারবে। এই সিস্টেমটা আমাদের গড়ে তুলতে হবে।
এর আগে সকালে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু,চেয়ারপারসনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মাহাদী আমিন, এবং কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বক্তব্য দেন।
কর্মশালায় আলোচনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশিদা বেগম হীরা ও কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিব। সভাপতিত্ব করেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত। বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নেতা ওবায়দুর রহমান চন্দন, আমিরুল ইসলাম আলীম, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, রেহেনা আক্তার বানু, নেওয়াজ হালিমা আরলী,কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রান ও পুর্নবাসন সহ সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল ইসলাম মিলন, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার ,মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন প্রমুখ।