অনলাইন ডেস্ক : প্রায় দুই মাস ছুটি কাটিয়ে বাফুফে ভবনে ফিরলেন সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের নারী ফুটবলাররা। আজ বিকেল পর্যন্ত ১৩/১৪ জন ফুটবলার ক্যাম্পে উঠেছেন। রাতে আরো কয়েক জন যোগ দেবেন। অধিনায়ক সাবিনাসহ কয়েকজন ফুটবলার ফেডারেশনে বাড়তি ছুটি চেয়েছেন। ছুটি কাটিয়ে ১৮ জানুয়ারি তাদের ক্যাম্পে আসার কথা।
নারী ফুটবলারদের চুক্তির মেয়াদ ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ছিল। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও বাফুফে নারী ফুটবলারদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক এখনো চুক্তি করেনি। চুক্তি না থাকায় নারী ফুটবলাররা নভেম্বর-ডিসেম্বরের বেতনও পাননি। নারী ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, ‘আমরা চুক্তির কাজ গুছিয়ে রেখেছি। চূড়ান্ত হলে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করব।’
সিনিয়র ফুটবলাররা প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে বেতন পেতেন। টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাদের ফেডারেশনের কাছে প্রত্যাশা বেশি। সেই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হচ্ছে সেটাই দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন নারী ফুটবলাররা।
টানা দুই বার সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নারী ফুটবলারদের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা এক কোটি টাকা আর্থিক পুরস্কার প্রদান করেছেন এক সপ্তাহের মধ্যেই। তাছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ওয়ালটন, চ্যানেল আই পুরস্কার প্রদান করেছে। ৯ নভেম্বর বাফুফে নির্বাহী কমিটির সভায় দেড় কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করলেও এখনো সেই অর্থ পায়নি নারী ফুটবলাররা।
বাফুফের তহবিলে সঙ্কট থাকলেও নির্বাহী কমিটির প্রায় সকলেই বেশ স্বচ্ছল। কর্মকর্তারা নিজেদের উদ্যোগে এই অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেই উদ্যোগ আর বাস্তবায়ন হয়নি। নির্বাহী কমিটির অনেকেই এই বিষয়ে আলাপ করতে আগ্রহী নন যাতে কোনো মতে এড়িয়ে যাওয়া যায়। ফলে এক প্রকার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা আজ আসছেন। কাল-পরশু থেকেই অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা। জাতীয় দলের কোচের বিষয়ে ফেডারেশন আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তাই সাধারণ সম্পাদক বললেন, ‘সহকারী কোচের অধীনে অনুশীলন চলবে। আমাদের এখন ফিটনেস নিয়ে কাজ হবে সেটা সহকারী কোচই দেখভাল করবে। হেড কোচ চূড়ান্ত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা জানাব।’
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি দুই জন কোচের বিষয়ে চূড়ান্ত হওয়ার আগে মন্তব্য করতে চান না। অথচ নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ এক সপ্তাহ আগে পিটার বাটলারই থাকছেন নারী দলের কোচ সেটা নিশ্চিত করেছেন। আবার পিটার বাটলারও গণমাধ্যমে এই সংক্রান্ত মন্তব্য দিয়েছেন। এতে বাফুফের পেশাদারিত্ব ও সমন্বয়হীনতা দু’টিই প্রকটভাবে ফুটে উঠে।
ফেব্রুয়ারিতে নারী ফিফা উইন্ডো ছিল। বাফুফে এই উইন্ডোতে সাবিনাদের খেলাতে পারছে না। তাই ইতোমধ্যে মার্চ উইন্ডোর জন্য দল জোগাড়ের দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে। ‘আমরা ১৩ দেশকে চিঠি দিয়েছি মার্চ উইন্ডোতে খেলার জন্য। হোম বা অ্যাওয়ে যেটাই হোক আমরা মার্চে নারী দলের ম্যাচ আয়োজন করতে চাই’, বলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক।
গত দুই বছর ধরেই নারী ফুটবল দলের প্রীতি ম্যাচ নিয়ে খবরের শিরোনাম হয় ফেডারেশন। বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান এক সপ্তাহে জানান দলগুলো আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, পরের সপ্তাহে বলেন অনিশ্চয়তা বা রাজী এরপর আবার কিছু দিন পর জানান খেলা হচ্ছে না। এই রকম ক্রম ঘটনা বেশ কয়েকবারই দেখা গেছে। বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান ফিফা কাউন্সিল সদস্য ছিলেন, এখন এএফসি’র নির্বাহী সদস্য। এএফসি নির্বাহী সদস্য হওয়ায় সাফের সভাগুলোতেও থাকেন পর্যবেক্ষক হিসেবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিচরণ করলেও নারী দলের ম্যাচ আয়োজনে এর তেমন ছাপ দেখা যায় না।