• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

ইউক্রেনের মোহভঙ্গ, ট্রাম্পের অপেক্ষায় উতলা জেলেনস্কি

প্রকাশ: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ ৪:২১

ইউক্রেনের মোহভঙ্গ, ট্রাম্পের অপেক্ষায় উতলা জেলেনস্কি

অনলাইন ডেস্ক : মাত্র কয়েক মাস আগেও কিয়েভের ভয় ছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলে ইউক্রেনকে ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হতে পারে। তবে আজ, কিয়েভ আশা করছে যে, ট্রাম্পই হয়তো শেষ পর্যন্ত তিন বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ইতি টানবেন।

চলতি সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বা বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে জড়ো হয়েছেন ইউক্রেনীয় নেতারা ও তাদের সমর্থকেরা। তাদের আশা, দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো এমন পরিবর্তন আনবেন, যা পুতিনকে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করবে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির জন্যও এটি একটি সম্মানজনক প্রস্থানপথ তৈরি করবে।

এ বিষয়ে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করা বলেন কার্ট ভলকার বলেন, ‘এটি একটি বাস্তবিক আশাবাদ।’ মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘২০২৪ ছিল অপেক্ষার একটি বছর। আমাদের নির্বাচন ছিল, বিভ্রান্তি ছিল। বাইডেন প্রশাসন কখনো বলত হ্যাঁ, কখনো বলত না। ২০২৫ সাল হচ্ছে কাজের বছর। আমরা অবশেষে অগ্রসর হচ্ছি (ভালো কাজের দিকে)।’

আরও পড়ুনঃ  ইইউর অভিন্ন আশ্রয় নীতির দ্রুত বাস্তবায়ন চায় ইতালি

এই বিষয়ে কিয়েভের মনে কোনো ভুল ধারণা নেই যে, শান্তির পথে প্রধান বাধা হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা নন, বরং ক্রেমলিনের বাসিন্দা। তবে বাইডেন যুগের স্থিতিশীলতা এবং ট্রাম্পের অস্থিরতার মধ্যে তুলনা করতে গিয়ে ইউক্রেনীয়রা মনে করছে, হয়তো ট্রাম্পের পথেই সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে।

জেলেনস্কি নিজেও স্বীকার করেছেন যে, ট্রাম্পই হয়তো মস্কো ও কিয়েভকে আলোচনার টেবিলে আনতে পারবেন। গতকাল মঙ্গলবার দাভোসে বক্তব্য দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জেলেনস্কি বলেন, ‘ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী। তিনি চাপ প্রয়োগের কৌশল জানেন।’ তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন নিয়ে তিনি আশাবাদী।

ইউক্রেনের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগকারী ডিটিইকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাকসিম টিমচেঙ্কো বলেন, ‘আমাদের এখন প্রয়োজন নিশ্চিত কোনো কিছু।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, ট্রাম্প প্রশাসন এই নিশ্চয়তা দিতে পারবে। অবশ্যই এই নিশ্চয়তা ন্যায়সংগত শান্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া উচিত নয়। তবে এটি হতে হবে কাজের একটি বছর।’

তবে সমস্যা হলো, সেই কাজ হয়তো খুবই কঠিন এবং বিব্রতকর হতে পারে। জেলেনস্কি হয়তো এমন কিছু ছাড় দিতে বাধ্য হবেন, যা এত দিন অকল্পনীয় ছিল। ইউক্রেনকে হয়তো মেনে নিতে হবে যে, যুদ্ধপূর্ব সীমানায় আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। যদিও জেলেনস্কি কখনোই দখলকৃত অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন না। একইভাবে ন্যাটোতে যোগদানের প্রয়াসও হয়তো ব্যর্থ হবে। জেলেনস্কি দাভোসে তাঁর বক্তব্যে যা বলেছেন এবং সেখানে উপস্থিত ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিরা যা জানিয়েছেন, তা থেকে এই বিষয়গুলো স্পষ্ট।

আরও পড়ুনঃ  রেকর্ড গতিতে গলছে পৃথিবীর হিমবাহগুলো

তবুও, অনেক ইউক্রেনীয় নেতা ও বিশেষজ্ঞ এই পরিস্থিতিতে কিছুটা আশাবাদী। দাভোসে ইউক্রেন হাউসে ট্রাম্পের অভিষেক উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কিয়েভ স্কুল অব ইকোনমিকসের প্রেসিডেন্ট তিমোফি মিলোভানোভ। পলিটিকোর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি ভালো নাও হতে পারে, তবে বাইডেনের চেয়ে এটা ভালো হবে।’

মিলোভানোভ আরও বলেন, ‘বাইডেন যুদ্ধকে একটি সংকট হিসেবে দেখেছেন। তিনি মনে করতেন, সময় পার হলে ঝড় থেমে যাবে। কিন্তু তা থামছে না। ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, এই ঝড় থামাতে হবে, যেভাবেই হোক। তিনি কীভাবে এটি থামবে, তা নিয়ে মাথা ঘামান না।’

আরও পড়ুনঃ  গাজায় ধ্বংসস্তূপে অনবরত মিলছে লাশ, বেড়েই চলেছে নিহতের সংখ্যা

ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস এবং কঠোর বক্তব্য হয়তো জেলেনস্কির জন্য একটি সুযোগ তৈরি করবে। যুদ্ধ ক্লান্ত ইউক্রেনীয়দের বোঝাতে তিনি হয়তো সক্ষম হবেন যে, বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিয়ে একটি শান্তিচুক্তি করা প্রয়োজন। তবে যদি জেলেনস্কি সঠিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন, পুতিনকেও কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হতে পারে।

রাশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সুদের হার ২১ শতাংশে স্থির রাখা হয়েছে। শ্রমশক্তির অভাব এবং ব্যাপক হতাহতের কারণে রাশিয়ার সমাজে চাপ বাড়ছে। এই বিষয়ে কার্ট ভলকার বলেন, ‘এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে পারে না।’

জেলেনস্কি দাভোসে তাঁর বক্তব্যে ইউরোপের প্রতিরক্ষা খাতে কম ব্যয়ের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি ট্রাম্পের ন্যাটোতে ৫ শতাংশ খরচের লক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জানান। পাশাপাশি তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অতিরিক্ত নিয়মকানুনের সমালোচনা করে স্বাধীনতার প্রতি জোর দেওয়ার আহ্বান জানান। জেলেনস্কি বলেন, ‘ট্রাম্প আমাকে বলেছেন, তিনি এ বছর যুদ্ধ শেষ করবেন। আমি তাঁকে বলেছি, আমরা আপনার অংশীদার।’

সর্বশেষ সংবাদ

 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675