ফরিদপুর প্রতিনিধি : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, গতকাল রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনাটি উসকানিমূলক ছিল কি না, তা সরকারের বিভিন্ন সংস্থা খতিয়ে দেখছে। আর এত বড় সহিংসতার প্রয়োজন ছিল কি না বা ঘটনাটি মীমাংসার সুযোগ ছিল কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হবে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৫৫তম পরিচালনা বোর্ডের সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
‘আমরা শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধারণ করতে বলবো’ মন্তব্য করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখন আমাদের দেশ গড়ার সময়। এ সময় নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সেটা কারও জন্যই শুভ হবে না।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থী সমাজের ওপর আমরা অনেক ভরসা রাখি। দেশ থেকে যে ফ্যাসিজম চলে গেল এবং গণতন্ত্রের পথের যাত্রার সুযোগ তৈরি হলো, এজন্য শিক্ষার্থীদের আমরা সবসময় অভিবাদন জানাই। তারা যেন এই জিনিসটাই তাদের মনজগতে রাখেন। গণতন্ত্রে যাওয়ার পথ এমনতিইে খুব কঠিন। তারপর আমরা যখন যাত্রাটা শুরু করলাম, তখন কোনো আচরণের কারণে সেটা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।
ভারতের অরুণাচলের সিয়াং নদী ও চীনের তিব্বত মালভূমির পূর্ব দিকে বাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, চীনের যে পরিকল্পনা, সেটা আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এটা হলো, বিশ্বের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। সে ব্যাপারে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবেই চীনকে জানিয়েছি ও প্রকল্প সম্পর্কে আমরা জানতে চেয়েছি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে চীন আমাদের জানিয়েছে, তাদের এই প্রকল্পের কারণে আমাদের দেশের কোনো ক্ষতি হবে না। আর ভারতের যেখানে বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হয়েছে, সেখানে তাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ রয়েছে। অতএব দুটি বিষয়েই আমরা কাজ করছি। আমাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে তারা যেন কাজ করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো।
নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট সম্পর্কে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা নদ-নদীর কথা বলি। নদী রক্ষার কমিশনের কথা বলি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কথা বলি। কিন্তু এত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট আছে, সেটা সম্পর্কে কেউ কথা বলে না। অথচ তার যে কার্যপরিধি, সেখানে যদি তাকে ঠিকমতো বরাদ্দ দেওয়া হয়, আর সেই বরাদ্দ সঠিকভাবে খরচ করা হয়, তাহলে অনেক ভালো ভালো কাজ আমরা নিজেদের সক্ষমতা দিয়েই করতে পারি। তাই গবেষণার জন্য আগামী বাজেটে পর্যাপ্ত না পেলেও বড় বড় কিছু বরাদ্দ আনতে আমরা চেষ্টা করবো।
নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বালু উত্তোলন অনেক বড় একটি ব্যাপার এবং বিরোধেরও জায়গা। বালু উত্তোলনের ফলে নদ-নদীতে কী প্রভাব পড়ছে, সে বিষয়ে গবেষণা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় পানিসম্পদ সচিব মো. নাজমুল হাসান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. ইউসুফ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক তাহমিদুল ইসলাম, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আবু হুরায়রা, পানিসম্পদ উপদেষ্টার একান্ত সচিব আবু নঈম, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা, ফরিদপুর পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।