অনলাইন ডেস্ক : ‘শেখ বাড়ি’ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। সেটিতে ভাঙচুর ও আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ঘোষণা দিয়ে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা থেকে ভাঙচুর চালান। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা নাগাদ পুরো বাড়িটি বিরাণে পরিণত হয়। শেষটুকু যতখানি আছে, তাও ভেঙে ফেলছে ছাত্র-জনতা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহানগরীর ২৩ শেরেবাংলা রোডে অবস্থিত শেখ বাড়ির ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া অংশ থেকে যে যা পারছে নিয়ে যাচ্ছে। বসেছে ভাঙারির দোকান। ওজন মেপে লোহার রড বিক্রি করছে ভাঙরিরা।
কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ বাড়িতে ভাঙারির দোকানির সংখ্যা এখন বেশি। তারা রড, লোহার বিভিন্ন অংশ ডিজিটাল মিটারে ওজন করে কেজি মূল্যে বিক্রি করছে। খুলনা অঞ্চলের বৃহৎ লোহামোকাম হিসেবে পরিচিত শেখপাড়া লোহাপট্টিতে এসব নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
অনেকে ইট সংগ্রহ করছে। পূর্ণাঙ্গ ইট, ভাঙা ইট, যে যার মতো সংগ্রহ করছে।
লোহার অন্যান্য বস্তুর মেলা বসিয়েছে অনেকেই। যারা এসব বিক্রি করছেন, তাদের বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা বলছেন, শেখ বাড়ি যারা বানিয়েছে, তারা জনগণের হক নষ্ট করেছে। এসব বস্তুতে জনগণের হক রয়েছে। তাদের অর্থ লুট করে এই বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই বাড়ি থেকে গুম-খুন-অত্যাচারের মতো কর্মকাণ্ডের নির্দেশ যেত। তাই অভিশপ্ত এ বাড়ির লোহালক্কড় জনগণই খুলে নিচ্ছে।
সকাল থেকে এই বাড়ির আশপাশে রিকশা, ভ্যানসহ নানা ধরনের বাহন দেখা গেছে। যারা এসব নিয়ে আসছে, তাদের মধ্য থেকেও অনেকে লোহার টুকরা, ইট সংগ্রহ করছে।
ছাত্র-জনা বলছে, শেখ বাড়ির লোকজন এ অঞ্চলে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। এখন মানুষ ঘৃণা ভরে তাদের বাড়ি লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। এটাই ইতিহাস। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না।
শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই পাঁচজন। শেখ হেলাল, শেখ জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেল ও শেখ বেলাল। তাদের মধ্যে শেখ হেলাল ও শেখ জুয়েল সংসদ সদস্য ছিলেন। আরেকজন সংসদ সদস্য ছিলেন শেখ হেলালের ছেলে শেখ তন্ময়। সবাই ঢাকায় থাকলেও খুলনায় এলে থাকতেন শেখ আবু নাসেরের এই বাড়িতে। তিনি ছিলেন শেখ হাসিনার চাচা।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মুখে ২০২৪ সালের ৪ ও ৫ আগস্ট কয়েক দফা হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে শেখ বাড়িতে। এর পর থেকে বাড়িটি পোড়া বাড়ি হিসেবে পড়ে ছিল।