সিলেট :
বিয়ানীবাজার শেওলা ইউপি ৪নং ওয়ার্ড চারবই গ্রামের গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট গুলো যেন নিষিদ্ধ ট্রাক্টর ও ট্রলির দখলে!গ্রামের সর্বস্তরের গ্রামীণ সড়কে এসব যানগুলো সারাদিনই বেপরোয়া ভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।যন্ত্রদানব এ যানগুলোর দিয়ে মাটি বহনে গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা,জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
বেপরোয়া চলাচলে গ্রামের মেঠোপথের মাটি আলগা হয়ে তা পরিণত হচ্ছে ধুলোবালিতে।বেপরোয়া গতি ও কানফাটা আওয়াজে চলাচলকারী ট্রাক্টরের কারণে গ্রামীণ জনপদে বাড়ছে শব্দ দূষণ।অবৈধ এ যানগুলোর প্রতি স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর নেই বললেই চলে!
স্থানীয়দের অভিযোগ,এসব অবৈধ যন্ত্রদানবের প্রতি স্থানীয় প্রশাসন উদাসিন। এলাকার প্রভাবশালীদের খুঁটির জোরে এসকল ট্রাক্টর চলছে বহাল তবিয়তে।সোস্যাল মিডিয়ায় গত ৪/৫ দিন থেকে ফেসবুকে প্রতিবাদ ও দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনেকে পোষ্ট করছে।সকলেই ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,শুধুমাত্র চাষাবাদের জন্য এসব আমদানি করা হলেও এখন অবৈধভাবে পণ্য পরিবহন কাজে এগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।এসব যানবাহনে নেই কোন বৈধ কাগজপত্র ও রোড পারমিট । তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় এসব যানবাহন চলাচলের কাজে নিয়োজিত রয়েছে ১৪-১৫ বছর সহ অপ্রাপ্ত বয়সের শিশু-কিশোর।ফলে এসব অবাধে চলাচলের সুযোগ পাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা।
সরেজমিনে উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের চারাবই গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে,পাড়া-মহল্লা ও গ্রামীণ এলাকার সংযুক্ত সড়ক গুলোতেও দিন-রাত চষে বেড়াচ্ছে এসব অবৈধ ট্রাক্টর ও ট্রলি।গ্রামীণ সড়কের চলাচলকারী এবং রাস্তার পাশে বসবাসকৃত জনসাধারণ অবৈধ ট্রাক্টরের জুলুমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।রোড পারমিট বিহীন ট্রাক্টর ও লাইসেন্স বিহীন চালকের কারণে দোকান পাট, রাস্তা-ঘাটের চলাচলকারী মানুষকে সার্বক্ষনিক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে।বিকট শব্দে সাদা পাউডারের মত ধুলা উড়িয়ে ট্রাক্টরগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।এসব ট্রাক্টর ও ট্রলির বেপরোয়া চলাচলে রাস্তা-ঘাট ভেঙে যেন ধুলার চর পড়েছে।
এ বিষয়ে পথচারিদের সাথে কথা বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন,এসব গাড়ি চলাচলের সময় আশেপাশের এলাকা কুয়াশার মতো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকে।এরকম অন্ধকারাচ্ছন্ন ধূলোর মধ্যে দিয়েই আমাদের যাতায়াত করতে হয়।আর ধুলোর মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করায় সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে।অতি দ্রুত মানুষের জীবন অতিষ্ঠকারী এসব যন্ত্রদানব প্রতিরোধ করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের বেশ কয়েকজন বলেন,এই ট্রলি দিয়ে সাধারণত মাটি পরিবহন বেশি করা হয়ে থাকে।গাড়ির মালিকরা বেশিরভাগই প্রভাবশালী তাই এদেরকে নিষেধ করলেও মানে না।মানুষের জান-মাল ও সড়ক অবকাঠামো ঠিক রাখতে চাইলে দ্রুতই এই যানটির চলাচল বন্ধ করা উচিত।
চারাবই গ্রামের সালিশ ব্যক্তিত্ব মোঃ কলিমউদ্দিন কলিম বলেন “এই দানব আকৃতির যান রাস্তায় চলাচলের সময় রাস্তা কাঁপতে থাকে।রাস্তার বেহাল দশা করেছে এই দৈত্যাকৃতির ট্রলি।শীঘ্রই এই দৈত্যাকৃতির যান সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ না করলে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়ে পড়বে।
কয়েকজন ট্রলি চালক এই প্রতিবেদককে বলেন,আমরা বেতনভুক্ত চালক।আমাদের নিজের গাড়ি নেই,কোন রেজিস্ট্রেশনও নেই। মানুষ তাদের মাটি,গাছসহ বিভিন্ন মালামাল আনা নেয়ার জন্য আমাদের কাছে আসে। আমরা টাকার বিনিময়ে তাদের কাজ করে দেই।
বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি মোঃ আখতার হোসেন খান জাহেদ বলেন,যারা এ ধরণের গাড়ি চালায় তাদের অনেকেই অনভিজ্ঞ ও অপরিপক্ক। এদের মধ্যে ১০/১৫ বছরের কিশোর ছেলেও রয়েছে।এসব চালকদের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স। হাতেগোনা কয়েকদিন পুরনো চালকদের সঙ্গে থেকে নামমাত্র নেয়া প্রশিক্ষণই তাদের মূল পুঁজি।এরপরই তারা চলে আসে চালকের ভূমিকায়।ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত না হওয়া এবং অনেক ক্ষেত্রে জেনেও না মানায় তাদের দ্বারা অনেক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়।এসব ট্রাক্টরগুলোর বেপরোয়া অবাধ চলাচল বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।