অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা থেকে রাজশাহীর পথে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ। তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
আজ শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

শুক্রবার রাতে ঢাকার সাভারের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার ওই ঘটনায় নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় আটক বাসচালক চালকসহ আরও তিনজনকে আটক করে ৫৪ ধারায় আদালতে হাজির করে। পরে তাঁরা ওই দিনই জামিনে মুক্তি পান।
এদিকে বাসে ডাকাতি ও যাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে মির্জাপুর থানার একজন সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর নাম আতিকুজ্জামান। তিনি ওই দিন থানার ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন।
মির্জাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন। মোশারফ হোসেন জানান, গত ১৮ তারিখে এএসআই আতিকুজ্জামান থানায় ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করতে এলে তাঁদের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর লিপিবদ্ধ না রাখার অপরাধ ও দায়িত্বে অবহেলা করেন। এ জন্য তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে একই ঘটনায় নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়। যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ না নেওয়া এবং ঘটনা চেপে রাখার প্রবণতা দেখানোর কারণে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়।
জানা গেছে, ডাকাতদের কবলে পড়া বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ৮-৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তারও তিন দিন আগে গত সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে।
টাঙ্গাইল পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল মুহিত (২৯), শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. সবুজ (৩০) ও ঢাকার সাভারের টান গেন্ডা এলাকার শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ (২৮)। তাঁদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল মুহিতের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় একটি ও ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানায় একটি বাস ডাকাতি মামলাসহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে।
মিজানুর রহমান বলেন, চলন্ত বাসে ডাকাতি ও যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি ও ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা জব্দ করা হয়। মামলা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তথ্যপ্রযুক্তি ও বিভিন্ন সোর্স ব্যবহার করে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন জেলাব্যাপী বিস্তৃত থাকায় কার্যক্রম পরিচালনা চ্যালেঞ্জিং ছিল। তারপরও আমরা অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনায় জড়িত অপর অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, বাসে নারী যাত্রীদের ধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।-তথ্যসূত্র: আজকের পত্রিকা