অনলাইন ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তার মুক্তির দাবি এখন শুধু জামায়াতের দাবি নয়, বরং বাংলাদেশের মুক্তিকামী ১৮ কোটি মানুষের দাবি।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর সরকারি এইচ সি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি উপেক্ষা করলে বা এই দাবির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালে আমরা ইতোমধ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আপনাদের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হবে। তাকে জেলে আটক রাখার এজেন্ডা ফ্যাসিবাদের এজেন্ডা, ভারতের এজেন্ডা।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অভিশপ্ত দল। তারা ক্ষমতায় থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, লুটপাট করেছে, এবং বিগত সাড়ে ১৫ বছর ধরে নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে। তারা অবৈধভাবে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, এত উন্নয়নের রোল মডেল হলে দেশ ছেড়ে পালালেন কেন?
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াত। যাকে তাকে জামায়াত-শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। বর্তমানে একটি দল বিগত সরকারের মতো বক্তব্য দিতে শুরু করেছে। তারা জামায়াতের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালানো বন্ধ করুক, জুলুম-চাঁদাবাজি বন্ধ করুক।
তিনি আরও বলেন, সাড়ে ১৫ বছর ঘরে বন্দি ছিলেন, এখন বের হতে পারছেন। বর্তমান পরিস্থিতিকে আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে গ্রহণ করুন, তাহলে দেশবাসীও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের জাগরণ শুরু হয়েছে। আমাদের ঐক্য আরও সুদৃঢ় হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণতি ভালো হয় না।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, গত ৫৩ বছরে যেখানে একটি সমৃদ্ধ ও সুখী রাষ্ট্র হওয়ার কথা ছিল, সেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে স্বৈরশাসন, লাঠির শাসন এবং সর্বশেষ ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। এর থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হলো পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ধর্ম-বর্ণ-দল নির্বিশেষে সবাই ভালো থাকবে, নারীরা সম্মানিত হবে, অমুসলিমরা নিরাপদে থাকবে। ইসলামী সরকার তাদের জানমালের নিরাপত্তা দেবে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করেই নির্বাচন দিতে হবে। যেনতেন সংস্কার মানবো না, তবে সংস্কারের নামে সময় ক্ষেপণও মানবো না। এ দেশের মানুষ জেগে উঠতে শিখেছে, তারা কারও প্রভুত্ব মানবে না।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহা. ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, জেলা আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল এবং সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির শেখ নুরুল হুদা, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম, প্রভাষক ওমর ফারুক এবং জেলা অফিস সেক্রেটারি রুহুল আমিন।
এর আগে সকাল ৯টায় একই স্থানে জামায়াতের মহিলা কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।