• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

ছয় গাড়ি পার্কিংয়েই খরচ পৌনে এক কোটি টাকা

প্রকাশ: রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ১১:৩৩

ছয় গাড়ি পার্কিংয়েই খরচ পৌনে এক কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার: মাত্র ৬টি বাস পার্কিংয়ের জন্য রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে (রুয়েট) পৌনে এক কোটি টাকা খরচ করে স্টিলের অস্থায়ী গ্যারেজ নির্মাণ করা হয়েছে। তিন পাশের ইটের গাঁথুনির দেয়াল আর ওপরে স্টিলের ছাউনির এই গ্যারেজের ডিজাইন তৈরির জন্য কনসাল্টেন্সি ফার্মকে ফি দেয়া হয়েছে আরো এক লাখ টাকা। বিশ^বিদ্যালয়ের ২৬টি গাড়ি রয়েছে, কিন্তু এই গ্যারেজ গাড়ি রাখা যায় মাত্র ৬টি। অতি সাধারণ মানের এই গ্যারেজের নির্মাণ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাধিক অধ্যাপক এই ব্যয়কে অস্বাভাবিক উল্লেখ করে জানিয়েছেন, এ টাকা দিয়েই স্থায়ী গ্যারেজ নির্মাণ করা যেতো।
নথিপত্রে দেখা গেছে, রুয়েটে রাজস্ব খাতের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে গাড়ির গ্যারেজ নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয় বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসিতে। প্রস্তাবটি যাচাই শেষে অনুমোদন দেয় ইউজিসি। গ্যারেজ নির্মাণে প্রাক্কলিতমূল্য ধরা হয় ৮১লাখ ৯১হাজার ৩৭৮টাকা। পরে ই-জিপিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে টেন্ডার আহ্বান করেন রুয়েটে প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর ঊষা কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সম্পাদিত হয়। ১২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৫ ফুট প্রস্থের স্টিলের গ্যারেজটি নির্মাণে চুক্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয় ৭৩ লাখ ৭২হাজার ৮০০ টাকা। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ১৮০ দিন সময় বেঁধে দেয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর ফলক উন্মোচন করে গ্যারেজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ। চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৬ জুন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হয় নি। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার অজুহাতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সময়সীমা বাড়িয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। ফলে ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। তবে এর আগেই ২০২২ সালের ২৭ জুলাই ফলক উন্মোচন করে গ্যারেজটির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ।
নির্মাণকাজ শেষে সংশ্লিষ্ট কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ক্লিন চিট দেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। সংশ্লিষ্ট কমিটির প্রতিবেদনে ভিত্তিতে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিলও পরিশোধে দপ্তরিক অনুমোদন দেন উপাচার্য। ফলে ঠিকাদারের সমস্ত বিলই পরিশোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্যারেজ নির্মাণকাজ ও উদ্বোধনের দুটি ফলক রয়েছে। দুটি ফলকেই একই উপাচার্যের নাম লেখা। সাদামাটা ডিজাইনে এই গ্যারেজটির ফিনিশিংয়ের কাজ করা হয়নি ঠিকমতো। ইলেকট্রিক ওয়্যারিং করা হয়েছে নামেমাত্র। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওয়্যারিং করা হয়েছে। ইলেকট্রিক সামগ্রীগুলোও খুলে পড়ার মতো অবস্থা। ক্যাম্পাসের একাধিক সূত্র বলছে, মাস দুয়েক আগেও কোটি টাকার এই গ্যারেজে গরু রাখা হতো। রুয়েটের কয়েকজন কর্মচারী ক্যাম্পাসে গরু লালন-পালন করেন। তাদের গরুর পালই সেখানে রাত-দিন থাকতো। তবে কিছুদিন থেকে গ্যারেজটিতে ৬টি বাস পার্কিং করে রাখা হয়।
এই গ্যারেজের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাধিক অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, রুয়েট হলো ইঞ্জিনিয়ার তৈরির কারখানা। রুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখাতেও চাকরি করেন বেশ কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার। তাহলে এ ধরনের গ্যারেজের ডিজাইনের জন্য কেন কনসাল্টেন্সি ফার্ম নিয়োগ করতে হবে? এছাড়া এই টাকা দিয়ে তো একটি স্থায়ী গ্যারেজই নির্মাণ করা সম্ভব ছিল। স্টিলের গ্যারেজ নির্মাণে এত টাকা খরচের যৌক্তিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঊষা কনস্ট্রাকশনের মালিক মঞ্জুর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেই আমরা কাজ পেয়েছিলাম। কাজটাতে আমাদের তেমন লাভও হয়নি। কারণ নির্মাণসামগ্রীর অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় আমাদের অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। তবে কাজের মান ভাল হয়েছে’।
এ বিষয়ে রুয়েটের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের ২৬টি গাড়ি রয়েছে। কিন্তু গাড়ির জন্য আলাদা গ্যারেজ ছিল না। প্রশাসন ভবনের সামনে কয়েকটি গাড়ি রাখা হতো। তাই ইউজিসির অনুমোদন নিয়েই জিওবি ফান্ড থেকে এই অস্থায়ী গারেজ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে গ্যারেজের জায়গাটি একটু ছোট হয়ে গেছে। একারণে বেশি গাড়ি রাখা যাচ্ছে না। আপাতত ৬টি গাড়ি রাখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো বড় গ্যারেজ নির্মাণ করা হবে। তবে গ্যারেজটি নির্মাণে অস্বাভাবিক ব্যয় হয়নি বলেও দাবি তাঁর।
এ বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এসব কাজ আমি দায়িত্ব নেয়ার আগেই হয়েছে। কাজেই আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি কেবল রুটিন কাজ করছি’।

সর্বশেষ সংবাদ

বাড়িতে তুলসী গাছ থাকতে ওজন ঝরানো নিয়ে চিন্তা?
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১০:৩১
রোজের ব্যবহারের একটি জিনিস থেকেই ঘরের দূষণ বাড়ছে!
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১০:৩১
গৃহবধূদের সঙ্গে শ্রমিকের তুলনা কেন!
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১০:৩১
পদত্যাগের গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন নাহিদ ইসলাম
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১০:৩১
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675