স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মহানগরীর সবচেয়ে বড় পাইকারি ও খুচরা বাজার সাহেববাজার। এখানে সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। কিন্তু গত কয়েকমাস থেকে ছিল সয়াবিন তেলের সঙ্কট। কিন্তু রোজা শুরুর আগ মূহুর্তে বোতলজাত সয়াবিন তেল যেন উধাও হয়ে গেছে। পাওয়া যাচ্ছে না কোন দোকানে। তবে কিছু কিছু দোকানে মিলেছে খোলা সয়াবিন তেল। যার দামও বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সাহেববাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বেশিরভাগ দোকানি বলেছেন সয়াবিন তেল নেই। কয়েকটি দোকানে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করলেও তারা ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা লিটার চেয়েছে। যদিও খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১৭০ টাকা।
বিক্রেতাদের দাবি, কোম্পানির ডিলাররা কয়েকদিন ধরে সয়াবিন তেল সরবরাহ করছেন না। ফলে তাদের দোকানে তেলের কোনো মজুদ নেই। চাহিদা তেল চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতাদের অভিযোগ, রজমান মাসকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা তেলের মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছেন। খোলা তেলের দামও বেশি রাখছেন।
তবে তেল বিক্রির ডিলাররা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, প্রতিদিন বড় মুদি দোকানে তেল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই তেল তারা কি করছে তা বলা যাচ্ছে না। তেল সরবারহকারী প্রতিষ্ঠানের এক বিক্রয় প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিচ্ছে কোম্পানি। তবে যা সরবারহ হচ্ছে সেগুলোও মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রয়কর্মীরা দিচ্ছেন ৩৩২ টাকা দরে। যেটি বিক্রি করার কথা ৩৫০ টাকায় কিন্তু দোকানিরা নিচ্ছে অতিরিক্ত দাম। কিন্তু এই তেল আবার সবাইকে দেওয়া হচ্ছে না।
নৈশ প্রহরী হিসেবে চাকরি করেন মো. শাহজামাল। রমজান মাসকে সামনে রেখে বাজারে তেলের সঙ্কট তৈরি করে দাম বেশি রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ ভোক্তা। তিনি বলেন, একদিন পর রমজান মাস। এ মাসে সব থেকে বেশি চাহিদা থাকে সয়াবিন তেলের। কিন্তুবাজারে এসে দেখি দোকানিরা বলছে, তেল নেই। শুনলাম এক দোকানে তেল আছে। সেখানে গিয়েও তেল পেলাম না।
সাহেববাজারের পিন্টু স্টোরের সত্বাধিকারী পিন্টু বলেন, কয়েক মাস থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল চাহিদামতো পাইনি। এর গেল এক মাস থেকে একটা বোতলও দেয়নি কোন কোম্পানী। বাধ্য হয়ে সয়াবিন তেল বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছি।
আরেক দোকানী সততা স্টোরের লিয়াকত আলী বলেন, বাজারে এখন তেল নেই। কয়েকমাস ধরে কোম্পানিগুলো তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ক্রেতা এসে ঘুরে যাচ্ছেন। আমার দোকানের নিয়মিত মাসিক ক্রেতাদের তেল দিতে পারছি না কয়েক মাস থেকে।
এদিকে ভিন্ন পন্থা বের করেছে নগরীর সুপারশপগুলো। তাদের কাছে তেল থাকলেও একটির বেশি তেল বিক্রি করছে না। যদিও তারা দাবি করছে, কোম্পানি থেকে তেল আসছে কম। তাই তাদের উপায় বের করে তেল বিক্রি করতে হচ্ছে।
নগরীর একটি সুপারশপে লেখা আছে, একটি পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ ৫ লিটারের একটি বোতল অথবা দুই লিটারের দুটি বোতল নিতে পারবেন। সাথে ১০০ টাকার পণ্য কেনা লাগবে। এই সুপারশপের বিক্রেতারা জানান, অতিরিক্ত কেউ যে তেল না নিতে পারে তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের নিয়মিত ক্রেতাদের জন্যও একই প্রযোজ্য।
তবে ক্রেতারা নিয়মিত বাজার তদারকি করতে বলছেন। রাজশাহীতে নিয়মিত বাজার তদারকিও হচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।