অনলাইন ডেস্ক : রবিবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার জানান, হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বাগ্যুদ্ধ দেখে ‘অস্বস্তি’ হয়েছিল তাঁর। তখনই তিনি মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির পাশে থাকার বার্তা তিনি আগেই দিয়েছেন। এ বার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার দাবি করলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি যাতে আবার আলোচনায় বসেন, সেই চেষ্টা তিনি করবেন। দু’জনের মধ্যে সেতু হবেন তিনি। রবিবার স্টার্মার আরও দাবি করেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে বসে যুদ্ধ থামাতে একটি শান্তিচুক্তি তৈরি করবে ফ্রান্স, ব্রিটেন। পরে বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পাঠিয়ে সেই নিয়ে আলোচনা করা হবে।
আমেরিকায় ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে সেখান থেকে সোজা ব্রিটেনে গিয়েছেন জ়েলেনস্কি। সেখানে স্টার্মারের সঙ্গে শনিবার বৈঠক করেন তিনি। সেই বৈঠকে ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষা খাতে ২৮০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২৪ হাজার ৪০০ কোটির বেশি টাকা) ঋণ দিয়েছে ব্রিটেন। তার পরেই রবিবার স্টার্মার বিবিসিকে জানান, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প এবং জ়েলেনস্কির বাগ্যুদ্ধ দেখে ‘অস্বস্তি’ হয়েছিল তাঁর। তখনই তিনি মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেন। স্থির করেন, বাগ্যুদ্ধ বাড়তে দেওয়া চলবে না। পরিবর্তে দুই রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। স্টার্মারের কথায়, ‘‘যুদ্ধ থামানোর জন্য ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং আরও দু’-একটি দেশ ইউক্রেনের সঙ্গে মিলে একটি পরিকল্পনা তৈরি করবে বলে স্থির হয়েছে। পরে সেই পরিকল্পনা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’ তিনি মনে করেন, তাঁরা ঠিক দিকেই এগোচ্ছেন।
আমেরিকায় খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে গিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয় হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে। সেখানে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্প, ভান্সের মতবিরোধ হয়। তাঁরা উত্তপ্ত বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার পরামর্শ দিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু জ়েলেনস্কি নিজের দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করেন। ট্রাম্প অভিযোগ করেন, লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন ইউক্রেন প্রধান। ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’-র সম্ভাবনা উস্কে দিয়ে জুয়া খেলছেন। এর পর হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যান জ়েলেনস্কি। মধ্যাহ্নভোজনও করেননি। বাতিল হয়ে যায় বহু আলোচিত খনিজ চুক্তি। পৃথিবীর সব দেশ দেখেছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এই প্রকাশ্য বাদানুবাদ। ইউরোপের দেশগুলিকে পাশে পেয়েছেন জ়েলেনস্কি। তার পরেই ব্রিটেন তাঁদের প্রতিরক্ষা খাতে ঋণ মঞ্জুর করে। এ বার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে চলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।