ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : ফরিদপুরের নগরকান্দায় ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা সবজান খাতুনকে ছাগল রাখার ঘরে তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন তারই ছেলে আবুল কালাম ও পুত্রবধূ নাসিমা বেগম। খবর পেয়ে সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবির।
তবে অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে গেছেন ওই বৃদ্ধার ছেলে আবুল কালাম। বৃদ্ধা সবজান খাতুন নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের দেলবাড়িয়া গ্রামের মৃত হামিদ শেখের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, পুত্রবধূ নাসিমা বেগম ও ছেলে আবুল কালাম বিভিন্ন সময়ে বৃদ্ধা সবজান খাতুনকে নানা রকম মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছিলেন। ঠিকমতো তার পরিচর্যা না করে তাকে সব সময় ছাগল রাখার ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখতেন। এ ব্যাপারে প্রতিবেশীরা আপত্তি করলে ছেলে আবুল কালাম দম্ভের সাথে বলতেন, ‘আমার মাকে আটকে রাখলে অন্যের কী?’ খবর পেয়ে নগরকান্দা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সোমবার দুপুরে ওই বাড়িতে ছুটে যান। তিনি এ ঘটনার সত্যতা পান। তবে ইউএনওর উপস্থিতি টের পেয়ে ছেলে আবুল কালাম পালিয়ে যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়টি আমাদের একেবারেই জানা ছিল না। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে জানতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ওই বৃদ্ধা দুই ছেলের মা। এক ছেলে রাজশাহী থাকেন। তিনি দীর্ঘদিন রাজশাহীতে ছেলের সাথে থাকতেন। তবে ১৫-২০ দিন আগে ওই ছেলে তার মাকে বাড়িতে তার ছোট ভাইয়ের কাছে রেখে যান। তারপর থেকে ওই বৃদ্ধাকে ছাগলের ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আটকে রাখা হতো।
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। নিজেরা ভালো ঘরে থাকলেও মাকে রাখা হয়েছিল ছাগল রাখার ঘরে। আমাদের উপস্থিতির কথা শুনে ছেলে আবুল কালাম পালিয়ে গেছে। তবে পুত্রবধূ নাসিমা বেগমকে আটক করেছে নগরকান্দা থানা পুলিশ।
তিনি বলেন, আমি ওই বৃদ্ধা মাকে নগদ টাকা, ইফতার সামগ্রী, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও হুইল চেয়ার প্রদান করেছি। পাশাপাশি ওই মায়ের জন্য একটি টিনের ঘর তুলে দেওয়া হবে। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের পক্ষে আমরা তার সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছি।