সাইদ সাজু, তানোর : রাজশাহীর তানোরে পূর্ব শক্রতার জের ধরে চাষাবাদের জন্য তিন বিঘা জমিতে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছেন গভীর নলকূপের অপারেটরের স্বামী মুন্ডুমালা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও কৃঞ্চপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের আইসিটি বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক সারওয়ার জাহান। চাঁদার টাকা না দেয়ার কারনে সেচ দিচ্ছেনা। একারনে পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে জমি। রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার হাসনাপাড়া চোরখোর মৌজায় অবস্থিত গভীর নলকূপের আওতায় সেচের জমিতে ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে রোববার সকালের দিকে ভুক্তভোগী কৃষক নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে অপারেটরের স্বামী চাঁদা দাবি করা সারওয়ার জাহান কে বিবাদী করে সহকারী প্রকৌশলী বিএমডিএ তানোর জোনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরেও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এমন চাঁদা বাজি অনিয়ম অতিরিক্ত হারসহ নানান বিষয়ে প্রতিনিয়তই দু চারটি করে লিখিত অভিযোগ হলেও রহস্য জনক কারনে নিরব ভূমিকা পালন করছেন অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান বলেও অভিযোগ রয়েছে। কারন তার বাড়ি উপজেলার যোগীশো গ্রামে। মুলত একারনে তিনি নামমাত্র অফিস করে শহরে চলে যান। অথচ অফিসে অভিযোগের খড়গ থাকলেও মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কোন সমাধানের ব্যবস্থা করেন না এই কর্মকর্তা। ফলে গভীর নলকূপের আওতায় কৃষকদের নিকট চাঁদাবাজ অপারেটরের অপসারণ করে সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপটি পরিচালনার জোর দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। সরেজমিনে দেখা যায়, মুন্ডুমালা পৌর এলাকার হাসনাপাড়া চোরখোর গ্রামের পূর্ব দিকে গভীর নলকূপ রয়েছে। যার জেএল নং ৫৬ ও দাগ নম্বর ৮৭৯। গভীর নলকূপের সামান্য পূর্ব দিকে ভুক্তভোগী কৃষক নাসির উদ্দীনের জমি পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তার জমির পরে ও আগের জমিতে ধান রোপন করা আছে। সেখান থেকেই মোবাইল করে বিএনপি নেতা প্রভাষক সারওয়ার জাহানের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, নাসির উদ্দীনের জমি গভীর নলকূপের স্কীম ভুক্ত না। জমি স্কীম ভুক্ত করতে হলে তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। তাছাড়া কোন শক্তি নেই তার জমিতে পানি দেয়ার। যত বড়ই কর্মকর্তা আসুক টাকা ছাড়া পানি দেয়া যাবে না। অপারেটর কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার স্ত্রী। আপনি তো শহরে থাকেন তাহলে গভীর নলকূপ পরিচালনা করে কে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন কিভাবে চলবে সেটা আমার ব্যাপার বলে প্রচুর দাম্ভিকতা দেখান। সেখানেই ছিলেন গভীর নলকূপের ডাইভার মালেক তার কাছে জানতে চাওয়া হয় গভীর নলকূপের অপারেটর কে, থাকে কোথায়, তিনি জানান প্রভাষক সারওয়ার জাহানের বউ সালমা, তারা শহরে থাকে। আমি নলকূপ দেখভাল করি। কৃষক নাসির উদ্দীন অতীতে এই নলকূপ থেকে পানি নিয়ে কি চাষাবাদ করেছেন, তিনি জানান, দীর্ঘ দিন ধরে এনলকূপ থেকে পানি নিয়ে চাষাবাদ করেছে, সে স্কীম ভুক্ত কৃষক। আমাকে পানি দিতে নিষেধ করেছে এজন্য দিইনি।
অনেকেই অকপটে স্বীকার করে বলেন এসব কৃষকের উপর একপ্রকার জুলুম। এতদিন চাষাবাদ করে আসল আর এখন বলছে স্কিম ভুক্ত কৃষক না। যত মরন কৃষকের।
অথচ গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগ পেলে তাকেই পরিচালনা করতে হবে। অথচ দলের প্রভাব খাটিয়ে তথ্য গোপন করে স্ত্রীর নামে নিয়োগের ব্যবস্থা করেছেন। তারা সেখানে থাকেন না। শহরে বসবাস করেন। অভিযোগে উল্লেখ, বিগত প্রায় ২১ বছর ধরে গভীর নলকূপ আওতায় জমি চাষাবাদ করে আসছি। কিন্তু অপারেটরের স্বামী প্রভাষক সারওয়ার জাহান পূর্ব শক্রতার জের ধরে জমিতে সেচের পানি দিচ্ছেনা। সেচের পানি চাইলেই বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করে আসছে।পুনরায় পানি দেয়ার কথা বলা হলে রাগান্বিত হয়ে তিন বিঘা জমির জন্য ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। নইলে পানি দিবেনা। আমি অসহায় কৃষক। চাষাবাদ করে সংসার পরিচালনা করি। প্রকাশ থাকে যে আমি উত্ত গভীর নলকূপের একজন স্কীম ভুক্ত কৃষক এবং বিবাদী জমির স্কীম বাবদ বিগত ২০০৪ সালে ২ হাজার ৪০০ টাকা গ্রহণ করে, যাহার স্বাক্ষরিত কপি রয়েছে। নাসির উদ্দীন ও তার ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ দিন ধরে চাষাবাদ করে আসছি, আর এখন সারওয়ার বলছে স্কিম ভুক্ত কৃষক না। কৃষকের উপর এমন অরাজকতা সঠিক না। আবার অপারেটর শহরে থাকে, ডাইভার নিয়োগ দিয়ে গভীর নলকূপ পরিচালনা করছে। তার চাদার কারনে হয় তো চাষাবাদ করতে পারব না। গভীর নলকূপ কৃষকের চাষাবাদের জন্য স্থাপন করা হলেও দলীয় ভাবেই রাজত্ব চলে আসছে। এছাড়াও পাঁচন্দর ইউনিয়ন ইউপির কৃঞ্চপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ড ওলামা বিভাগের সভাপতি মিজানুর রহমান ওরফে তালেবান প্রতি বিঘায় বাড়তি ৫০০ টাকা করে চাঁদাবাজি করছেন। আলম নামের এক কৃষক জানান, আমার ১০ বিঘা জমিতে সেচ দিতে বাড়তি ৫ হাজার টাকা নিয়ে সেচ দিয়েছে। অথচ কার্ডের মাধ্যমে আমরা সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। মিজানুর রহমান ওরফে তালেবান বলেন, বিভিন্ন কাজ করা হয়েছিল এজন্য ৫০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। সে স্বৈরাচার সরকারের সময় থেকে অধ্যবদি অপারেটর হয়ে আছন। বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী (অতি) জামিনুর রহমান জানান, অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপারেটর শহরে থাকে, কিভাবে নিয়োগ হয় জানতে চাইলে তিনি জানান, তদন্ত করে প্রমানিত হলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।