অনলাইন ডেস্ক : কলকাতা থেকে শিমলা যাচ্ছিলেন ওপার বাংলার টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী তিথি বসু। উঠেছিলেন নেতাজি এক্সপ্রেসে। কথা ছিল কালকায় নামবেন তিনি।
কিন্তু তার আগেই হঠাৎ করেই ভাইরাল এই অভিনেত্রী। ছড়িয়ে পড়েছে কিছু ছবি, সঙ্গে একগুচ্ছ অভিযোগ। আর এই অভিযোগগুলো তুলেছেন ট্রেনের সহযাত্রীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিথির সঙ্গে ট্রেনে থাকা এক যাত্রী বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে নেতাজি এক্সপ্রেস করে কালকা যাচ্ছি। কামরায় শিশু থেকে বৃদ্ধ, নানা বয়সের মানুষ আছে। আমাদের সঙ্গেই কম বয়সীদের একটি গ্রুপও যাচ্ছে। তাদের মধ্যে দুইজন ব্লগার। কিন্তু ওরা এটাই বুঝতে চাইল না পাব্লিক প্লেসে ওদের যেমন উপভোগ করার অধিকার আছে, বাকিদেরও রয়েছে। কিন্তু গোটা যাত্রা জুড়ে হাহা-হিহি, জোরে মিউজিক–এ কেমন ধরনের ব্যবহার?’
সেই যাত্রী আরও বলেন, ‘অনেকবার বন্ধ করার অনুরোধ সত্ত্বেও তাদের চিৎকার আর জোরে গান চালানো বন্ধ হয়নি। এক পর্যায়ে খারাপ ভাষা ব্যবহার করতে শুরু করে তারা। জানিনা কীভাবে গোটা বিষয়টা ব্যক্ত করব’।
এরপরেই তিথির এক ছবি শেয়ার করে সেই ব্যক্তি আরও দাবি করেন, সেই গ্রুপের মধ্যে তিথিই সবচেয়ে বেশি খারাপ ভাষা প্রয়োগ করেছে।
এই পোস্টটি ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। তিথি পরিচিত মুখ। ‘মা’ ধারাবাহিকের ছোট ঝিলিকের চরিত্রে দেখা গেছে তাকে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্য আসার পরেই পাল্টা মুখ খুলতে দেখা যায় অভিনেত্রীকেও।
তিথি বলেন, ‘আমার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। কেউ যদি আমার ছবি তুলে ভাইরাল হতে চায় তাতে আমার কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু মানুষ কখনও দুই দিকটা বিচার করে না। একটা পরিচিত মুখ দেখেছে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মেয়ে, তকমা লেগে গেছে খারাপ। আমরা দুপুর থেকে ট্রেনে গান চালিয়েছি। সকালে চালাইনি। গান চালানোর পর আমাদের বলা হয়, গানের সাউন্ড বন্ধ করুন। যিনি পোস্ট করেছেন তিনি নয়, অন্য একজন বলেন। তিনি বলার পরেই গানের সাউন্ড কমিয়ে দেই। এরপর গান বন্ধ করে দেওয়া হয়। সাড়ে পাঁচটার পর সবাই বগিতে মজা করছে। আমরাও গান চালাই। তখনও এসে সেই আন্টি বলে, ‘গান কেন চলছে?’ আমরা বলি, গান বন্ধ করব না। সাউন্ড কমাতে পারি। এরপর তিনি আরপিএফের কাছে অভিযোগ জানান। আমরা গান বন্ধ করে দেই। একমাত্র ওই আন্টি ছাড়া আর কারও কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না। সবাই আমাদের সঙ্গে মজা করছিল। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় যিনি লিখেছেন সে কিন্তু দৃশ্যপটেই ছিল না। প্রতিবাদও করেনি, কিছুই করেনি।’
তিথির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি বয়স্ক মানুষকে গালাগালি দিয়েছেন! ঝামেলা নাকি বেশ বড় আকার ধারণ করেছে! সত্যি কি তাই? মেনে নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, একটা ঝামেলা হয়েছে। আমার মুখ চেনা মানে আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করব না তা তো নয়। আমরা আন্টি বলে কথা বলার পরেও সেই ব্যক্তি বাজে কথা বলে গেছে। আমিও বলেছি। আমার সাফ হিসেব, যে শ্রদ্ধা করবে সে শ্রদ্ধা পাবে। যে করবে না সে পাবে না।’
যদিও এই ঘটনায় তিথির দিকে পাল্লা ভারি নয়। নেটিজেনরা তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সেসব মানুষদের তিথির কাছে পাল্টা প্রশ্ন, ‘পাব্লিক প্লেসে, আস্তে-জোরে যাই হোক না কেন, গান চালানো কি সঙ্গত? তার প্রতিবাদ করলে কোন যুক্তিতে খারাপ ব্যবহার করা যায়?’
বিষয়টি গড়িয়েছে আরপিএফ অবধি। জল কোথায় গিয়ে থামে এখন সেটাই দেখার বিষয়।