অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচন কশিনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, প্রবাসীদের যেকোনো পরিসরে ভোটের আওতায় আনা হবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বুধবার বলেছেন, আজকের মধ্যে বিশেজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি পরামর্শক টিম গঠন করা হবে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে একাধিক পদ্ধতি দরকার। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের যেকোনো পরিসরেই হোক না কেনো তাদের ভোটের আওতায় আনার কথা বলেছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রথম তার ভাষণে প্রবাসীদের ভোটের অধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন। এজন্য নির্বাচন কমিশনও এই প্রত্যাশা ধারণ করে। তিনি জানান, ‘আমরা ১৭৮টি দেশে স্টাডি করে দেখেছি ১১৫টি দেশ তাদের প্রবাসী নাগরিকদের জন্য ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে। সবচেয়ে অনুশ্রিত পদ্ধতি হচ্ছে দূতাবাসে, এরপর হচ্ছে পোস্টাল ব্যালট, তারপর হচ্ছে অনলাইন বা প্রক্সি ভোটিং।’
মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রবাসীদের যে বিস্তৃতি তাতে দূতাবাসে সেটা সীমিত। এজন্য তিনটিকে শর্টলিস্ট করেছি। পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ও প্রক্সি ভোটিং। তিনটিরই কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, আবার কিছু সুবিধাও আছে। কমিশনের কাছে বিষয়টি উত্থাপনের পর নির্বাচন, আইন, কারিগরি ও নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার আমরা কর্মশালা করি। সেখানে ১০টি টিম তাদের প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। ঢাবি, বুয়েট, এমআইএসটি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিল।’
তিনি বলেছেন, ১০টি উপস্থাপনার মধ্যে তিনটা পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা দেখেছি।
নির্বাচন কমিশনার আরো বলেছেন, অনলাইন ভোট এখনো জনপ্রিয় হতে পারেনি। অনেক দেশ চার-পাঁচ বছর ধরে করছে। কর্মশালার আলোচনায় ওঠে আসা পদ্ধতিগুলো ফাইন টিউন করতে হবে। আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম হচ্ছে, একটা অ্যাডভাইজরি টিম গঠন করবো। তিনি বলেছেন, তিনটি পদ্ধতির সফলতা, দুর্বলতা পর্যালোচনা করে কী করে দুর্বলতা কাটানো যায়, সে ব্যবস্থা তারা করবেন। এরপর আমরা অংশীজনদের সঙ্গে বসবো। আমরা যাই করি না কেনো যে সময়টা আমরা পাবো তার মধ্যেই কাস্টমাইজ করতে হবে। তাই সময় না পেলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এজন্য আমরা একটা দিনও সময় নষ্ট করছি না।
এবার প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনতে পারবেন এই আশা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, তবে কোন পদ্ধতিতে হবে সেটা কারিগরি টিম কাজ করার পর চূড়ান্ত হবে।
সানাউল্লাহ বলেন, প্রক্সি ভোটকে আমরা বলেছি, যদি সব ভোটারকে আনতে চাই তাহলে প্রক্সি একমাত্র অপশন। এখনো কমিশনের অবস্থান একই আছে। প্রক্সি ভোটের দুর্বলতা অনেকে তুলে ধরেছেন। সফলতাও তুলে ধরেছেন। অন্যগুলোর ক্ষেত্রেও তাই। কোনো অপশনকেই আমরা সিঙ্গেল আউট করছি না। বাংলাদেশের জন্য কোনো একটি সিঙ্গেল অপশন প্রযোজ্য না। সম্মিলিত অপশনের দিকে যেতে হবে। তিনটা পদ্ধতিকে যদি আনা যায়, তাহলে আমরা তিনটা পদ্ধতিকেই আনবো। পাশাপাশি নিবন্ধন পার্টটা অনলাইন হবে। যে ধরনের ভোটই হোক না কেনো অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এখন প্রবাসী যে দেশে থেকে ভোট দিতে চান, সেই দেশে ওই পদ্ধতি কার্যকর কি না সেটা দেখতে হবে। অনলাইন ভোটিংয়ে যেতে হলে সময় আরো বেশি লাগবে।
তিনি বলেছেন, আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার আওতায় আনতে চাই তাহলে কোনো না কোনো পদ্ধতি আনতে হবে। পৃথিবীতে ২৫টির মতো দেশ প্রক্সি ভোট করছে।
প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে চাইলে সব পদ্ধতিতেই সীমাবদ্ধতা আছে। তবে আমাদের সেই সীমাবদ্ধতা কমিয়ে আনতে হবে।-বাসস