স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার মুঞ্জু হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসক-নার্স না থাকায় অক্সিজেনের অভাবে বেসরকারি এই হাসপাতালে বেনু বেগম (৭০) নামের অপারেশন করা এক নারীর মৃত্যু হয়।
আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মারা যাওয়া বেনু বেগমের বাড়ি নগরীর বোয়ালিয়া থানার সুজানগর মিতালী ক্লাব এলাকায়।
বেনু বেগমের স্বজনেরা জানান, পায়ের হাড় ভেঙে গেলে ৬ এপ্রিল তাঁকে মুঞ্জু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর পায়ের হাড়ের অপারেশন করেন ডা. হাবিবুল হাসান।
কিন্তু অপারেশন পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তাঁকে কোনো পর্যবেক্ষণ কক্ষে না রেখে সরাসরি ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বেনু বেগমের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ সময় তাঁর জরুরি অক্সিজেন প্রয়োজন হয়।
কিন্তু হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক–নার্স ছিলেন না। অক্সিজেন সিলিন্ডারও ছিল না। রোগীর স্বজনেরা দায়িত্বশীল কাউকে পাননি। একসময় ছটফট করতে করতে রোগী বেনু বেগম মারা যান।
এদিকে অবহেলায় বেনু বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় রোগীর স্বজনেরা হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাঙচুর করার জন্য তৎপর হন। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমারসহ অন্য স্টাফরা পালিয়ে যান।
পরে সেখানে ছুটে যান পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এরপর বিএনপি নেতারা ক্লিনিক মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমঝোতা করে দেন।
নিহত বেনু বেগমের সন্তান সনি বলেন, ‘অপারেশনের পর আমার মা সুস্থ ছিলেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ার পর চিকিৎসক ও নার্স ছিলেন না। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে আমার মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন না। চিকিৎসায় অবহেলায় আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।’
চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমার বলেন, ‘রোগীর স্বজনেরা যেসব অভিযোগ করছেন, সেগুলো সঠিক না। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরও রোগী মারা গেছেন।’ মৃত্যুর ওপরে কারও হাত নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে রাজশাহীর ডেপুটি সিভিল সার্জন মাহাবুবা খাতুন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি জানি না। যদি রোগীর স্বজনেরা সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন, তবে আমরা ব্যবস্থা নেব। চিকিৎসায় অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’
নগরীর রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিক সেখানে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে রোগীর স্বজনেরা এখনো কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’