অনলাইন ডেস্ক : কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর তলানিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। ইতোমধ্যেই কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ভারতের নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ গতকাল বেশ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। পাল্টাপাল্টি এসব পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ইসলামাবাদ আকস্মিকভাবে তাদের আকাশসীমা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর ফলে ভারতের বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগোর আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর সময়সূচি ও রুটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিমান সংস্থা দুটি জানিয়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্যের ফ্লাইটগুলোকে বিকল্প দীর্ঘ পথ ব্যবহার করতে হতে পারে। যাত্রীদের বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে তাদের ফ্লাইটের নির্ধারিত সময় ও রুট ভালোভাবে জেনে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, আকাশে দীর্ঘ পথে উড়ান পরিচালনার কারণে বিমান সংস্থাগুলো টিকিটের দাম বাড়াতে পারে। বিশেষত আন্তর্জাতিক রুটে এই ভাড়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেক।
পেহেলগামের ঘটনার পর দিল্লি ইসলামাবাদকে কড়া ভাষায় বার্তা দিয়েছে। পাকিস্তান নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত করা হয়েছে এবং পানি চুক্তি বাতিলের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ইসলামাবাদ হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, পানি চুক্তি বাতিলকে তারা যুদ্ধের সমতুল্য হিসেবে বিবেচনা করবে।
কাশ্মিরে হামলার কারণে সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার দেশে ফেরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফেরার পথে মোদিকে বহনকারী উড়োজাহাজ পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে যায়। যা নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে আগাম সতর্কতার ইঙ্গিত দেয়।
গত মঙ্গলবার ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীরা হামলা চালান। এতে ২৫ ভারতীয়সহ ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারত।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করছে, তাদের কাছে এমন তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, যা হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার দিকেই নির্দেশ করে। যদিও ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামের একটি সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করেছে, তবে এই সংগঠনটি পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হামলাকারীদের স্কেচ প্রকাশ করা হয়েছে এবং তাদের ধরতে জোরদার অভিযান চলছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কাতার, জাপান, রাশিয়া ও চীনের মতো আন্তর্জাতিক মহল এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ভারতের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে।
এই পরিস্থিতিতে বিমানযাত্রীদের তাদের ফ্লাইটের সর্বশেষ তথ্য নিয়মিতভাবে জানার এবং সম্ভাব্য পরিবর্তন সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।