স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর ঘোড়ামারা এলাকায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে রিকশাকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিল একটি ছিনতাইকারী চক্র। পুলিশের তথ্যমতে, গ্রেপ্তার হওয়া রিকশাচালক মাসুম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
এ কাজের জন্য রিকশাচালক মাসুমকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই ছিনতাইয়ে যুক্ত করে চক্রটি। ভুক্তভোগী দিলীপ কুমার প্রামাণিকের গতিবিধি এক মাস ধরে নজরদারিতে রাখে তারা। তিনি রিলায়েন্স অটো নামক একটি দোকানের ব্যবস্থাপক। চক্রটি জানতো, শুক্রবার ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় সেসব দিনের বিক্রির টাকা রোববার সকালে দিলীপ অফিসে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার রিকশাচালক মাসুম (৩০)। গত বুধবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদের কাছে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন।
মাসুমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্র ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় ওই দুই দিনের কেনাবেচার টাকা দিলীপের বাসায় থাকে বলে চক্রটি জানতে পারে। রোববার সকালে তিনি টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে চক্রটি পরিকল্পনা সাজায়। তারপর কীভাবে রিকশা নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে এবং কোন রাস্তায় যেতে হবে, এ নিয়ে মহড়াও করেছে। ঘটনার আগের রোববার তিনি রিকশা নিয়ে কুমারপাড়ার চালপট্টির ওই বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন পরিকল্পনা সফল হয়নি।
বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ওই রিকশাকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছে ছিনতাইকারীরা। পরিকল্পনামাফিক তারা ওই এলাকায় এক মাস ধরে নজরদারি করেছে। আগেও রিকশা নিয়ে ফাঁদ পেতেছিল চক্রটি, তবে সফল হতে পারেনি। পরে গত রোববার ঘটনাটি ঘটায়।
গত রোববার সকালে বোয়ালিয়া থানা এলাকার ঘোড়ামারা মোড়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন দিলীপ কুমার প্রামাণিক। তিনি রিলায়েন্স অটো নামের একটি অটোরিকশার যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানের ব্যবস্থাপক।
পুলিশ ও দোকানের মালিক পক্ষ জানায়, আগের দিনের বিক্রির ১৩ লাখ টাকা নিয়ে দিলীপ কুমার রোববার সকালে শিরোইলে ঢাকা বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মাসুমের রিকশায় ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে, রিকশাটি হঠাৎ একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়। ঠিক তখনই একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তি রিকশার গতি রোধ করেন। তাঁদের একজন দিলীপের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন।
এ সময় ছিনতাইকারীরা তার পিঠে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার ডান হাতের কনুই ও বাঁ হাতের আঙুল কেটে যায়। ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর সময় প্রায় আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে যায়, তবে বাকি টাকা নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত সে টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।