অনলাইন ডেস্ক : জ্যাভলিন থ্রো-য়ে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর দেশের বড় দুই তারকা নীরাজ চোপড়া এবং আরশাদ নাদিম। দুজনের মধ্যে সখ্যতার কথাও কারও অজানা নয়। ‘বন্ধু’ আরশাদ নাদিমকে আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রবল বিতর্কের মধ্যে পড়লেন নীরাজ। তার পরিবারকেও কটু কথা শোনাতে ছাড়েনি নেটদুনিয়া। এমন পরিস্থিতিতে অবশেষে মুখ খুললেন নীরজ চোপড়া।
টোকিও অলিম্পিকে জ্যাভলিন থ্রোয়ে সোনা জিতেছিলেন ভারতের নীরাজ। প্যারিস অলিম্পিকে পেয়েছিলেন রুপো। পরপর দু’টি অলিম্পিকে পদকজয়ী নীরাজ চোপড়া একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। বেঙ্গালুরুতে হবে ‘এনসি ক্লাসিক’ নামের সেই প্রতিযোগিতা। সেখানেই পাকিস্তানের জ্যাভলিন থ্রোয়ার প্যারিসে সোনাজয়ী আরশাদ নাদিমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নীরাজ। কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলার পর সেটি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
নীরাজ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আরশাদ নাদিমকে এনসি ক্লাসিকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। চারিদিকে শুধু ঘৃণা আর কটুক্তি। আমার পরিবারকেও ছাড়া হচ্ছে না। একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আরশাদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। আমার লক্ষ্য ছিল এনসি ক্লাসিকের মাধ্যমে বিশ্বের সেরাদের ভারতে আনা। সব ক্রীড়াবিদের কাছে আমন্ত্রণ সোমবার পাঠানো হয়েছিল। পহেলগাঁও কাণ্ডের আগেই আমন্ত্রণ চলে গিয়েছিল। পরের ৪৮ ঘণ্টায় যা ঘটেছে, তার পর আরশাদের এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।”
সপ্তাহের শুরুতে সাংবাদিক বৈঠক করে নীরজ জানিয়েছিলেন, এনসি ক্লাসিক হরিয়ানা থেকে সরিয়ে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্বের সেরা জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সেই তালিকায় ছিল আরশাদের নামও। যদিও পাক জ্যাভলিন থ্রোয়ার প্রতিযোগিতায় দেবেন কি না তা নিশ্চিত করে জানানো হয়নি। পরে প্রতিযোগীদের যে তালিকা দেওয়া হয়, সেখানে আরশাদের নাম ছিল না।
নীরাজ লেখেন, “আমি খুব কম কথার মানুষ। তার মানে এই নয় যে, কোনও ভুল দেখলে কথা বলব না। আর যখন আমার দেশপ্রেম এবং পরিবারের সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, তখন তো মুখ খুলবই। আমার কাছে দেশ সব সময় আগে। যে সব মানুষ নিজের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাঁদের সমবেদনা জানাই। পহেলগাঁওয়ে যা ঘটেছে, তা নিয়ে গোটা দেশের মতো আমিও শোকাহত এবং ক্ষুব্ধ। আমি এই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী যে, আমার দেশ ঠিক এর জবাব দেবে এবং দেশের শক্তি প্রদর্শন করবে।”
অলিম্পিক পদকজয়ীর দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তিনি মর্মাহত। নীরাজ লিখেছেন, “এত বছর ধরে গর্বের সঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। সেখানে আমার দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন উঠলে খারাপ লাগে। ভেবে কষ্ট হচ্ছে যে, মানুষকে এটা বোঝাতে হচ্ছে। কোনও কারণ ছাড়া আমার পরিবারকে আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা খুবই সাধারণ মানুষ। এই সবের মধ্যে আমাদের টানবেন না। অনেক ভুল তথ্য সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। আমি চুপ করে আছি বলে সেগুলো সত্যি হয়ে যাবে না।”