বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় রাস্তা পাকাকরণের কাজ শুরু করা নিয়ে গ্রামবাসীর দু পক্ষের মধ্যে বিবাদমান সমস্যার সমাধান দিলেন ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম। আজ শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল সকাল সাড়ে দশটায় পূর্বের একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে সারেজমিনে তদন্তে যান বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম।
উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের রঘুপাড়া গ্রামের রাস্তা পাকাকরণের কাজ শুরু হবে কোথায় থেকে, এনিয়ে গ্রামবাসীর দুপক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিলে এ বিষয়ে অত্র ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁরই প্রেক্ষিতে ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম আজ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামসহ অত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জুকে নিয়ে সরেজমিনে রাস্তাটি পরিদর্শন করেন।
গণিপুর ইউনিয়নের কাজীহাটা মোড় থেকে মূলত কাঁচা রাস্তাটি শুরু হয়ে রঘুপাড়া গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রায় পৌনে দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা কুঠিবাড়ি হাটে (মোহনপুর উপজেলার) গিয়ে পৌঁছেছে। এই রাস্তাটি পৌনে দুই কিলোমিটার হলেও পাকাকরণের জন্য অনুমোদন হয়েছে এক কিলোমিটার। যার কারণে সম্পূর্ণ রাস্তা পাকাকরণ হচ্ছে না। সমস্যার শুরু এখানেই।
গ্রামবাসীর একটি পক্ষ চাচ্ছেন কাজীহাটা মোড় থেকে রাস্তা পাকাকরণ শুরু হোক তাতে করে রঘুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রঘুপাড়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসা এবং রঘুপাড়া সাব পোস্ট অফিসে যাতে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী এবং সাধারণ মানুষ ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারেন সেজন্য এই কাজীহাটা থেকেই রাস্তাটি পাকা করণ করা অত্যন্ত জরুরী বলে তাঁরা মনে করেন।
অপরদিকে গ্রামের আরেকটি অংশের সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন কুঠিবাড়ি হাটের শেষ প্রান্ত যেখানে বাগমারার সীমানা শুরু সেখান থেকে রাস্তাটির পাকাকরণের কাজ শুরু হোক। তাতে তাঁরা নির্বিঘ্নে কুঠিবাড়ি হাট সহ গণিপুর ইউনিয়ন পরিষদ এবং বাগমারা থানায় অনায়াসে যেতে পারেন। এরূপ যুক্তিতে গ্রামবাসীর মধ্যে দলাদলি তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও তাঁর পক্ষদ্বয় অত্র ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান রঞ্জুকে দায়ী করছেন। তাঁদের যুক্তি চেয়ারম্যান সাহেব স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে স্কুলে যাওয়ার কথা না ভেবে তিনি তাঁর একটি ঘনিষ্ঠ পরিবারকে প্রাধান্য দিয়েছেন যার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
তাঁরা জানান, রাস্তাটি কাজিহাটা থেকে মাপজোক করা হলেও চেয়ারম্যান চক্রান্ত করে অনুমোদন নিয়েছেন বাগমারার শেষ সীমানা থেকে। অথচ মোহনপুরের শুরু কুঠিবাড়ি হাট থেকে বাগমারার সীমানা পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা রয়েছে। এখন যদি বাগমারার শেষ সীমানা থেকে রাস্তার কাজ শুরু হয়, তাহলে মাঝখানে রাস্তা পাকা করণ হচ্ছে আর দুই প্রান্তেই কাঁচা রাস্তা থেকেই যাচ্ছে। তাহলে কেউ এই সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। তাই তাঁদের দাবি কাজীহাটা মোড় থেকে রাস্তাটি শুরু হোক।
ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম তদন্ত শেষে উভয়পক্ষকে জানান, যেহেতু বাগমারার শেষ সীমান্ত থেকে এটি করার অনুমোদন হয়ে গেছে সেহেতু এই জুন মাসের মধ্যে এটি পরিবর্তন করে অন্য প্রান্ত থেকে শুরু করা সম্ভব নয়। সেহেতু জিডিপি ৫ এর বরাদ্দ হতে প্রায় ৫০০ ফিট রাস্তা স্কুল পর্যন্ত এখনই করার জন্য আমি ব্যবস্থা করব এবং আমি যদি বাগমারায় থাকি তাহলে অবশ্যই বাঁকি প্রায় ১১০০ ফিট রাস্তা পাকা করণ কাজ করে দেব বলে আপনাদের আশ্বস্ত করছি। এ ব্যাপারে আমি আপনাদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ।
ইউএনও মহোদয়ের কথায় আশ্বস্ত হয়ে উপস্থিত সকলেই সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে কাজটি করার জন্য তাঁকে অনুরোধ জানান।