স্টাফ রিপোর্টার : ছয় দফা দাবিতে রাজশাহীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে নগরের রেলগেট এলাকা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে শিক্ষার্থীরা সড়কের একদিক ছেড়ে দেন। তবে অন্য অংশটি বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বন্ধই ছিল। শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা।

তাঁদের দাবিগুলো হলো—জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধভাবে দেওয়া পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট থেকে বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে ‘ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টর’ পদবি পরিবর্তন করে মামলার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল এবং বিতর্কিত নিয়োগবিধি দ্রুত সংশোধন করতে হবে।
এ ছাড়া ডিপ্লোমা নেই ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। এর পরিবর্তে উন্নত বিশ্বের মতো চার বছর মেয়াদি, মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করে একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে। উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (দশম গ্রেড) পদ ডিপ্লোমা নেই ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও অনেক সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে তাদের নিচু পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারিগরি খাত পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।
তাঁদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, কারিগরি শিক্ষায় চলমান বৈষম্য দূর করে দক্ষ জনসম্পদ গড়তে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে। পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডুয়েটের অধীনে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে আগামী সেশন থেকেই শতভাগ আসনে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম, বৈষম্য ও অদূরদর্শী নীতির কারণে এ খাতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে এবং দেশের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। তাই তাঁদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।
নগরের বোয়লিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘সড়ক অবরোধ থাকায় মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরাতে তাঁরা কাজ করছেন। ঘটনাস্থলে সেনাসদস্যরাও এসেছেন। আশা করছেন তাঁরা শিক্ষার্থীদের বোঝাতে সক্ষম হবেন।’