ঢাকা সকাল ৮:১৩। সোমবার ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ। ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।
  1. অপরাধ
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. আরো
  6. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  7. কবিতা
  8. কলাম
  9. কোভিড-১৯
  10. খুলনা
  11. খেলা
  12. চট্টগ্রাম
  13. চাকুরী
  14. চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  15. জয়পুরহাট
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জাটকা ধরা বন্ধ হলে, ইলিশ উঠবে জাল ভরে

subadmin
এপ্রিল ২৭, ২০২৫ ৬:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশের জলরাশি এবং খাদ্য সংস্কৃতিতে ‘ইলিশ’ একটি অপরিহার্য নাম। বাঙালির আবেগ, ঐতিহ্য, এবং জাতীয় পরিচয়ের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই রুপালি মাছটি শুধু একটি খাদ্যই নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতি ও অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ বাংলাদেশের নদ-নদী এবং সমুদ্রের জলে বিচরণকারী এই সোনালি-রূপালি মাছটি বিশ্বের অন্যতম সুস্বাদু মাছ হিসেবে পরিচিত। বাঙালির রন্ধনশৈলী, সাহিত্য, গান, কবিতা, এমনকি লোকজ উৎসবেও ইলিশের প্রভাব অপরিসীম।
সরষে ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, ইলিশ ভাজা হরেক পদের রান্না, হরেক রকম স্বাদ। বাঙালির বর্ষবরণ ইলিশ ছাড়া হয় না। দেশে মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশ মাছের অবদান প্রায় ১২ শতাংশ। জিডিপিতে ইলিশের অবদান প্রায় ১ শতাংশ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যে হারে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে তাতে আগামী কয়েক বছরে উৎপাদন আরও বাড়বে। বিশ্বের প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ ইলিশ উৎপাদন দেশ হবে বাংলাদেশ। ‘জাটকা ধরা বন্ধ হলে, ইলিশ উঠবে জাল ভরে’—প্রতিপাদ্যে এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ইলিশকে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইলিশের এ গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক অবস্থা ‘জাটকা’ রক্ষায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও একই ধারাবাহিকতায় ৮ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করেছে। মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময় বাংলাদেশে মোট তিনবার—অক্টোবর-নভেম্বর ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষা করার জন্য, মার্চ-এপ্রিল ২ মাস ইলিশের অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত ৬টি এলাকায় জাটকা বড়ো হতে দেওয়ার জন্য এবং মে-জুলাই ৬৫ দিন সাগরে প্রাকৃতিকভাবে মাছের জোগান বাড়ানোর জন্য। এ ছাড়া নভেম্বর-জুন ৮ মাস ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য জাটকা ধরা, বহন করা, বাজারজাতকরণ ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে; অর্থাৎ এই ৮ মাস পরই ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৪৭ দিনই মাছ ধরা নিষেধ, একটা বছরের প্রায় ৪০ ভাগ সময় একজন জেলে মাছ ধরতে পারবেন না। আজকের জাটকা আগামী দিনের ইলিশ। জাটকা ধরা হলে পরিপক্বতা লাভের সুযোগ বিঘ্নিত হয়ে বড়ো ইলিশ পাওয়া যায় না। ফলে পরবর্তী সময়ে মা ইলিশ থাকে না বিধায় বংশবৃদ্ধির সুযোগ থাকে না। প্রাকৃতিকভাবে মা ইলিশ নদীতে ডিম ছাড়ার পর তা থেকে পোনা, পোনা থেকে জাটকা এবং পরবর্তী সময়ে বড়ো ইলিশে পরিণত হয়। একটি মা ইলিশ ২.৫ লাখ থেকে শুরু করে ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়ে অর্থাৎ একটি মা ইলিশ ধরলে ২৩ লাখ পোনা উৎপাদন বন্ধ হয়। জাটকা ও ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরার কারণে ইলিশের উৎপাদন কমে যায়। ফলে জেলেদের উপার্জনও কমে যায়। তাই ইলিশের ভবিষ্যৎ উৎপাদন এবং জেলেদের উপার্জন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
জাটকা ইলিশ মাছের নতুন প্রজন্মের প্রবেশন স্তর। পরিযায়ী প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী ইলিশ পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ কতকগুলো বড়ো নদীর উজানে গিয়ে স্রোত প্রবাহে ডিম ছাড়ে। ভাসমান ডিম থেকে রেণু বেরিয়ে এসব এলাকায় কিছু দিন থাকে এবং এখানেই খায় ও বড়ো হয়। ছয় থেকে দশ সপ্তাহের মধ্যে পোনা দৈর্ঘ্যে ১২-২০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়, তখন এদের জাটকা বলে। বাংলাদেশের মৎস্য আইন অনুযায়ী, আগে জাটকার আকার ছিল ৯ ইঞ্চি। ২০১৪ সালের গেজেট সংশোধন করে ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটারের (ঠোঁট থেকে লেজের প্রান্ত পর্যন্ত) কম দৈর্ঘ্যের ইলিশকে জাটকা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এক কেজি ওজনের ইলিশ কমপক্ষে ৪০-৫০ সেন্টিমিটার এবং ২ কেজির অধিক হলে ৬০-৬২ সেন্টিমিটার হবে। এ বছর দেশের ইলিশ সমৃদ্ধ ২০টি জেলায় ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৫’ উদ্‌যাপন করা হয়েছে।দেশে পদ্মা ও মেঘনা অববাহিকায় ইলিশের মোট অভয়াশ্রম রয়েছে ছয়টি (পাঁচটিতে মার্চ-এপ্রিল মাছ ধরা বন্ধ, আন্ধারমানিক ব্যতীত), যার মোট আয়তন ৪৩২ কিলোমিটার। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, প্রাণিজ পুষ্টির চাহিদা পূরণ, দারিদ্র্য মোচনে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য সেক্টরে গুরুত্ব অপরিসীম। অভ্যন্তরীণ মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয় এবং সামুদ্রিক জলাশয়ের উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার জন্য সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। জাতীয় জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান ২.৪৫ শতাংশ আর কৃষিজ জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান ২১.৬৮ শতাংশ (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪) । নদী, বিল, হাওরসহ শত শত জলাশয়ের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ আহরণের সাথে জড়িয়ে আছে কয়েক লাখ মানুষ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা (এফএও) বিশ্বের মৎস্যসম্পদবিষয়ক প্রতিবেদন ‘ওয়ার্ল্ড স্টেট অব ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০২৪-এর তথ্য মতে, মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয়, চাষের মাছ উৎপাদনে বিশ্বে পঞ্চম এবং ইলিশ আহরণে প্রথম।
দেশের জিডিপিতে প্রায় ১ শতাংশের বেশি অবদান রয়েছে এই রূপালি ইলিশ। একক মাছের প্রজাতি হিসেবে দেশের মৎস্য উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে ইলিশ। দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ১২ দশমিক ২২ শতাংশ আসে শুধু ইলিশ থেকে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ২০ হাজার কোটি টাকারও ঊর্ধ্বে। এ ছাড়া বর্তমানে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ইলিশ উৎপাদনে প্রথম। ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে প্রতিবছর নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত মোট আট মাস জাটকা ধরা নিষিদ্ধ থাকে। এ সময় জাটকা ধরলে কমপক্ষে এক বছর থেকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। চান্দ্রমাসের ভিত্তিতে প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে প্রতিবছর আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমার চার দিন আগে থেকে পূর্ণিমার দিনসহ পরের ১৭ দিন মিলিয়ে মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা, মজুত, পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকে। জাটকা যেন ইলিশ ধরার জালে আটকে না যায়, তাই সরকার ইলিশ ধরার ফাঁস জালের সাইজ ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নির্ধারণ করেছে। ইলিশ রক্ষায় প্রতিবছর সাধারণত মার্চ বা এপ্রিল মাসে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করে সরকার। মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী কারেন্ট জাল, বেহুন্দি ও অন্যান্য অবৈধ জাল নির্মূলে প্রতিবছর বিশেষ কম্বিং অপারেশন পরিচালিত হয় মৎস্য অধিদফতরসহ সরকারের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা ইউনিট থেকে। এ ছাড়া জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সচেতনতামূলক টিভিসি, জিঙ্গেল, স্ক্রল, বিজ্ঞাপন প্রচারের পাশাপাশি লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, ফোল্ডার, পুস্তিকা বিনা মূল্যে প্রচার করে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়ের প্রচার সেল নামে পরিচিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দফতর।
প্রতিবছরই ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে ইলিশের জন্য অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা, আট মাস জাটকা ও প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা, জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন, সমুদ্রে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা, বিশেষ কম্বিং অপারেশনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। ইলিশ রক্ষায় সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা-২০২৩ এর ৩(১) বিধি অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সব প্রকার মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়। যাতে সামুদ্রিক মৎস্য বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী, মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এ কমিটি বিজ্ঞানসম্মত তথ্যগুলো যাচাই করে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকাল ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ (আটান্ন) দিন নির্ধারণের সুপারিশ করে।যার ফলে, সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা-২০২৩ সংশোধন করে সামুদ্রিক মৎস্য সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ (আটান্ন) দিন সব প্রকার মৎস্য নৌযানের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর থেকে আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নানা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু রয়েছে। এসব কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছরই ২০ জেলার ৯৬টি উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত তিন লাখ এক হাজার ২৮৮টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে চার মাসের জন্য মোট ৪৬ হাজার ৭৮৮.০৮ মেট্রিক টন চাল প্রদান করা হয়। গত আট বছরে জাটকা আহরণে বিরত ২০ লাখ ৯৫ হাজার ৬৮৫টি জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি হারে চার মাস ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করা হয়েছে। জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালীন ছাড়াও গত পাঁচ অর্থবছরে মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন ২২ দিনের জন্য পরিবারপ্রতি ২০ কেজি হারে মোট ২৬ লাখ ২৯ হাজার ৫০৯টি জেলে পরিবারকে ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে জেলেদের জীবনমান উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জীবনমান উন্নয়নের জন্য মৎস্য অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়িত জাটকা সংরক্ষণ, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান এবং গবেষণা প্রকল্পের আওতায় মোট ৫৩ হাজার ৩০৯ জন সুফলভোগীকে জাটকা ও পরিপক্ব ইলিশ সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানসহ ক্ষুদ্র ব্যবসা, হাঁস-মুরগি পালন, গরু-ছাগল পালন, ভ্যান বা রিকশা, সেলাই মেশিন, ইলিশ ধরার জাল প্রদান, খাঁচায় মাছ চাষ ইত্যাদি আয়মূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা তথ্য মতে, বর্তমানে ১২৫টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। পদ্মার শাখা নদী মহানন্দা ও তিস্তা নদী এবং মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেদির হাওরেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।বিগত ১০ বছরের ব্যবধানে দেশে ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮৩.৯৫ শতাংশ, যা বর্তমান সরকারের অন্যতম একটি সাফল্য। ইলিশ উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশও বর্তমানে বাংলাদেশকে ইলিশ উৎপাদনের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১৭আগস্ট ইলিশ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ৫ লাখ ২৯ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে রয়েছে। এ দেশের প্রায় ৬ লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০-২৫ লাখ লোক ইলিশ পরিবহণ, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানি ইত্যাদি কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তাই ইলিশ সম্পদের উন্নয়নের মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের হাতের নাগালে ইলিশ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ইলিশ সম্পদ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত।দেশের অর্থনীতির চাকা উন্নতির পথে ধাবমান রাখতে ইলিশ হতে পারে মোক্ষম পণ্য। সরকার এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইলিশের উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি করে সমস্যা সমাধানের পথ সুগম করবে বলে আশা করা যায়। আর সমাধানে ব্যর্থ হলে ভঙ্গুর হয়ে যাবে সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনার অন্যতম খাত ইলিশ।

সেলিনা আক্তার
পিআইডি ফিচার

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০