বাঘা প্রতিনিধি: মোটা পলিথিন ও পেপারে মোড়ানো মৌসুমি আমে ঠাসা ঝুড়ি-কার্টন। কুরিয়ারে পাঠানো হবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। অনলাইনভিত্তিক বেচাকেনাও বেড়েছে। উপহার কিংবা আত্মীয়স্বজনের বাসায় আম পাঠানোর এ পদ্ধতিতে এখন জমজমাট রাজশাহীর বাঘা উপজেলা।
আম পরিবহনে যুক্ত হয়েছে উপজেলার অন্তত ১০টি কুরিয়ার সার্ভিস। মৌসুম শুরুর পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন হাজার মণ আম যাচ্ছে এ সার্ভিসের মাধ্যমে। বেশিরভাগই অনলাইনে অর্ডার নেওয়া। এ কারণে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় থাকছে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে। সার্ভিস চার্জ হিসেবে সুন্দরবন ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের মধ্যে কেজিপ্রতি ১২ টাকা আর অন্য জেলায় প্রতি কেজি ১৬ টাকা করে নিচ্ছে। সওদাগর কুরিয়ার সার্ভিস ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের মধ্যে নিচ্ছে কেজি প্রতি ১১ টাকা আর ঢাকার বাইরে প্রতি কেজি ১৩ টাকা করে।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা আম বিক্রি শুরু করেছেন। গ্রুপভিত্তিক আম বেচাকেনায় যুক্ত হয়েছেন একঝাঁক তরুণ। তাদের অধিকাংশই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ক্রেতারা অনলাইনে মার্কেটপ্লেস ও ফেসবুক পেজ দেখে আম নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন করছেন। অর্ডার পেয়ে চাষিদের বাগান থেকে সরাসরি আম কিনে কুরিয়ারে পাঠানো হচ্ছে।
বাড়িতে অলস বসে না থেকে ফেসবুকে পেজ খুলে অনলাইনে আম ব্যবসা শুরু করেন বাজুবাঘা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা ডলার আহম্মেদ, রাজশাহী ম্যাংগো প্রোডাক্টসের তানজিম হাসান স্বদেশ, রাজশাহী হিমসাগর ডট কমের মেহেদী হাসান। তাঁরা জানান, গুণগত মান দেখে এলাকার বাগান মালিকদের কাছ থেকে আম কিনে প্যাকিং করেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অনেকেই হোম ডেলিভারি দায়িত্ব নিয়ে আম পৌঁছে দিচ্ছেন বাসায়।
কার্টনভর্তি আম নিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে আসেন আব্দুল হালিম। সেই আম তিনি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙা উপজেলায় বোন-ভগ্নিপতির বাসায় পাঠাবেন। আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমের মৌসুমে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা রাজশাহীর আমের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আম পেয়ে তাঁরা যেমন খুশি হন; আমাদেরও খুব ভালো লাগে। আমের মৌসুমে স্বজনদের জন্য উপহার পাঠানো রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
বাঘা শাখার সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম ও এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপক আশরাফ আলী বলেন, ‘আমের মৌসুমে ব্যবসাটা অনেক ভালো চলে। অনলাইনে বেচাকেনা হওয়ায় ব্যবসা আরও জমে উঠেছে। আমরাও চেষ্টা করি ভালো সার্ভিস দেওয়ার।’