স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে এবার চিহ্নিত সন্ত্রাসীও কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া হত্যা, মাদক, চাঁদাবাজি, বোমাবাজি মামলার আসামিও ভোটে দাঁড়িয়েছেন। এরা ভোটের মাঠে উত্তেজনা ছড়িয়েছেন। ঘটেছে সহিংসতাও। তবে তাদের গোয়েন্দা নজরদারির ভেতরেই রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৫ এর রাজশাহীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার। সোমবার সকালে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।
বুধবারের (২১ জুন) সিটি নির্বাচন নিয়ে সোমবার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র্যাব অধিনায়ক। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মামলার আসামিরা প্রার্থী হয়েছেন এ বিষয়টি নির্বাচন কমিশনার যখন এসেছিলেন তখনও তোলা হয়েছিল। বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তারা সবাই জামিনে আছেন। নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী তারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে তাদের কার্যক্রম আমরা নজরে রেখেছি। আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা চালু রয়েছে। ভোটের দিন তারা সহিংসতা করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘একটা ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলরের গ্রুপের মধ্যে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। দুটি মামলাও হয়েছে। তবে সরাসরি দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। যার ফলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারিনি। যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সেভাবেই হচ্ছে।’
র্যাব অধিনায়ক জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বুধবার ভোর ৬টা থেকে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবের প্রায় ৩০০ জন সদস্য মাঠে থাকবেন। মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা এবং বোমা নিস্ক্রিয়কারী হিসেবে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। র্যাব-৫ এর ১৫টি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং পেট্রোল, স্ট্রাইকিং ফোর্স কমান্ডারসহ ১০টি জীপ, দুটি স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ টিম, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা দল, সুপার মোবাইল মোটরসাইকেল টিম এবং অ্যাম্বুলেন্স টিম নির্বাচনের দিন দায়িত্বে থাকবে।
এছাড়া যেকোন উদ্বুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রয়নের জন্য র্যাব-৫ এর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে। র্যাব সদর দপ্তরে র্যাবের স্পেশাল ফোর্স হেলিকাপ্টারসহ যেকোন পরিস্থিতিতে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও সার্বিক পরিস্থিতি তদারকির জন্য নির্বাচন সেল এবং কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। শহরে ঢোকা এবং বের হওয়ার সময় তল্লাশি করা হচ্ছে। ২২ জুন পর্যন্ত র্যাবের এ সকল কার্যক্রম বলবৎ থাকবে বলেও জানান তিনি।
এই নির্বাচনে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে অথবা সহিংসতা বা নাশকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে র্যাব কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জানিয়ে তিনি জানান, অবৈধ অনুপ্রবেশকারী অথবা সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার নন এ রকম নাগরিকদের নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ অথবা ভোটের দিন নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষে অনুপ্রবেশকারী কোন ব্যক্তিদের অপতৎপরতা আইন-শৃংখলা বাহিনী কঠোর ভাবে দমন করবে।
তিনি বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্রের ব্যাপারে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রয়েছে এবং আমরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছি। নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ অনুযায়ী নির্বাচন চলাকালে সকল নাগরিককে কোন প্রকার লাইসেন্সধারী অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন না করার জন্য কঠোর ভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়পত্র বহন করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’
র্যাব অধিনায়ক জানান, নির্বাচনের দিন নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেট কোন সহযোগিতা চাইলে র্যাব দ্রুততম সময়ে সাড়া দেবে। সাংবাদিকদের ব্রিফিং শেষে তিনি র্যাব সদস্যদের মহড়া পরিদর্শন করেন।