স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী নগরীর শিরোইল কলোনি, হাজরাপুকুর, আসাম কলোনী, রবের মোড়, কানামোড়, ছোট বনগ্রাম, শিরোইল, বাস্তহারা, ভদ্রামোড়, পদ্মা আবাসিকসহ শহরজুড়ে ‘মাদকসম্রাজ্ঞী’ হিসাবেই পরিচিত শ্যামলী বেগম। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদকসম্রাজ্ঞীদের মধ্যে এক নম্বরে আছেন তিনি।
অথচ শ্যামলীর বিরুদ্ধে কোনো তথ্য নেই চন্দ্রিমা থানার ওসি মাবুব আলমের কাছে।
ওসি বলছেন, মাদক ছাড়া কাওকে গ্রেফতার করা যায়না! ২ যুগ ধরে মাদক ব্যবসা করে আসা শ্যামলী একসময় খুচরা হেরোইনের পুরিয়া বিক্রি করতেন। এখন রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে হেরোইন এনে ট্রেনযোগে ঢাকায় পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করছেন তিনি। রেলওয়ে বস্তিতে নিজস্ব বাহিনী গড়েছেন তিনি। শ্যামলীর বিরুদ্ধে কেও কথা বল্লে বাহিনী দ্বারা প্রতিহত করা হয় তাদের।
বিনিময়ে তাদের হেরোইন খাওয়ানো হয় ফ্রিতে। এছাড়া বস্তিতে আগুন দেওয়া, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া তার কাছে নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাড়িছে। গোপন সুত্রে জানা গেছে, তার বস্তির পাশে ট্রেন ধোলায় কারখানা (ওয়াসফিড)। সেখানে ধোলাই করা হয় ঢাকার চারটি ট্রেনসহ আন্তনগর ট্রেনগুলো। ওয়াসফিডের কিছু কর্মচারিদের সাথে পরস্পর যোগসাজসে হেরোইনের বড় বড় চালান ট্রেনের গোপন জায়গায় রেখে পাচার করা হয়। পুলিশের সোর্স রাজ্জাক হত্যা মামলার আসামি শ্যামলী ও তার স্বামী খায়রুল। হত্যাসহ মাদকের অসংখ্য মামলা রয়েছে শ্যামলীর বিরুদ্ধে। রেলওয়ে কোয়ার্টার ও বস্তি এলাকার বাসিন্দারা জানান, শ্যামলীর মাদক স্পটে ভোর থেকে গভির রাত পর্যন্ত চলে মাদক কেনা বেচা।
দৈনিক অসংখ্য মাদকসেবীরা আসে শ্যামলীর কাছে মাদক নিতে এবং তারা আমাদের রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচল করে। কিছু বল্লে মারমুখি আচারণ করে তারা।
মাদক সেবনকারি সুশিল, নাগরাজ, জায়জুল, মানিক, গাজিয়া, পুন্নু ও মেহেদীসহ আরও অনেকে বলেন, আমরা দৈনিক দুই বেলা শ্যামলীর কাছ থেকে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকার হেরোইন ক্রয় করি। টাকা কম হলে মাদক দেয়াতো দুরে থাক উল্টো গালিগালাজসহ মারধরও করে মাদকসম্রাজ্ঞী শ্যামলী। দৈনিক এক থেকে দেড় লাখ টাকার মাদক কেনাবেচা হয় শ্যামলীর স্পটে। খুচরা ও পাইকারি মিলে মাসে ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকার মাদক সেল করে সেখানে। বস্তির লোকজনরা বলেন, প্রশাসনের লোকজন যায় আর আসে।
তার বাসায় গিয়ে যে স্থানে মাল রাখা থাকে সেখানে বাদে বাসার অন্যান্য জায়গায় খতিয়ে দেখেন। নামকাওয়াস্তে, লোক দেখানো অভিযান শেষে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা নিয়ে চলে যায় তারা। এছাড়া শ্যামলী বস্তিবাসিদের প্রায়সময় বলেন, প্রশাসনকে আচলের তলে বেধে রাখি। প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ টাকা এমনিতে দেয়না তাদের! আমার এখানে অভিযান দিতে আসলে আমার অনুমতি নিয়ে আসতে হবে! মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনসহ থানা ও ডিবি পুলিশ সদস্যরা আমার সাথে ইমুতে কথা বলেন।
এব্যাপারে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, মাদক সম্রাজ্ঞী শ্যামলীর বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নাই। এছাড়া মাদক না পেলে কাওকে গ্রেফতার করা যায়না। জানতে চাইলে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, ঢাকায় একটি মিটিংয়ে আছি। পরে আপনাকে ফোন দিচ্ছি।