বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসএমই খাতের সম্ভাবনা অপার

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে উন্নত দেশগুলো তাদের উৎপদন ও সরবরাহ চেইন বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পণ্যে চাহিদা বাড়বে। দেশের অভ্যন্তরে যে আমদানিনির্ভর বাজার রয়েছে, আমাদের উদ্যোক্তারা যদি তাও ধরতে পারে তাহলে এসএমই খাত অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটা কার্যকর ভূমিকা রাখার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। যুগান্তরকে তিনি রোববার এসব কথা বলেছেন। সাক্ষৎকার নিয়েছেন মাহাদী হাসান

দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবস্থান কেমন?

মাসুদুর রহমান : কোভিড-পরবর্তী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প যে পর্যায়ে থাকবে আশা করেছিলাম, সেখানে নেই। করোনার কারণে উদ্যোক্তারা বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। পাশাপাশি এই শিল্পের অধিকাংশ পণ্য তৈরি করা হয় বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে। কিন্তু ২০২০ সালে বড় বড় উৎসবে কোনো পণ্য উৎপাদন করতে পারেননি। উপরন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, এর প্রভাবও আমাদের ওপর এসে পড়েছে। এ কারণে আমাদের ভোক্তারাও ব্যয় সংকোচন করেছেন। ফলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এখন টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন।

এই শিল্প দেশের অর্থনীতেতে কী ধরনের অবদান রাখছে?

মাসুদুর রহমান : দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের। এই একটি পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে এ খাতের গুরুত্ব কতটুকু। এটা কি পরিমাণ আবদান রাখে। পাশাপাশি যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসএমই খাত চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করে। আমাদের এখানে সেটি এখনো হয়ে উঠেনি। আমাদের জাতীয় আয়ে এসএমই খাতের অবদান ২৫-২৭ ভাগ। কিন্তু ভারতে ৬০ ভাগ, ভিয়েতনামে ৪৫ ভাগের ওপরে।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় এসএমই খাত কীভাবে সাহায্য করতে পারে?

মাসুদুর রহমান : কোভিড ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে সারা বিশ্বে একটা পরিবর্তন আসছে। চীনকেন্দ্রিক যে উৎপাদনব্যবস্থা এবং সাপ্লাই চেন তৈরি হয়েছিল, তা বড় অর্থনীতির দেশগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করার চেষ্টা করছে। এটা আমাদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। আমাদের সক্ষমতার প্রমাণ মিলেছে তৈরি পোশাক শিল্পের মাধ্যমে। এ খাতে একটি বড় নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারের যে চাহিদা আছে তার বড় একটা অংশ বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। এখন আমাদের উদ্যোক্তারা যদি অভ্যন্তরীণ বাজারটিকেও ধরতে পারে, তাহলে এসএমই খাত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটা কার্যকর ভূমিকা রাখার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

উদ্যোক্তাদের আর্থিক সংকটে কাটাতে এসএমই ফাউন্ডেশন কী ভূমিকা রাখছে?

মাসুদুর রহমান : আমাদের যে আর্থিক কাঠামো রয়েছে তাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণ এবং ঋণ নিয়ে যাওয়াটা একটা বড় সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি সমাধানে সরকারি পর্যায়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের প্রণোদনা বিতরণের দায়িত্ব দিয়েছিল। তবে যে অর্থ দেওয়া হয়েছিল, তা অত্যন্ত সীমিত। এ অর্থ দিয়ে ব্যাপকসংখ্যক উদ্যোক্তাকে সন্তুষ্ট করতে পারব না।

জাতীয় এসএমই মেলা আয়োজনের উদ্দেশ্য কী?

মাসুদুর রহমান : আমরা প্রতিবছর জাতীয় এসএমই মেলার আয়োজন করে থাকি। আটটি বিভাগীয় শহরে আঞ্চলিক মেলা করা হয়। মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতা, সরবরাহকারী এবং করপোরেট যে ক্লাইন্টদের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের সংযোগ তৈরি করে দেওয়া। মেলায় এসএমই খাতের বিভিন্ন ক্যাটাগরির উদ্যোক্তারা পণ্য নিয়ে আসেন। সেখান থেকে অধিকাংশ ক্রয় করেন বড় বড় ব্যবসায়ী। মেলার মাধ্যমে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে যোগাযোগ ও পণ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বাজার সংযোগ তৈরি হয়।

সর্বাধিক পঠিত

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com