লালপুর প্রতিনিধি: আর স্কুলে যাবে না শিশু মাইশা খাতুন (৯)। আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে অটো ভ্যানের চাপায় মারা গেছে সে। নাটোরের লালপুর উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের নবীনগর (কবিরাজপাড়া) নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সে নবীনগর (কবিরাজপাড়া) গ্রামের মো. মোবারক হোসেনের মেয়ে ও নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের নবীনগর (কবিরাজপাড়া) নামক স্থানে বাড়ির সামনে লালপুর-ঈশ্বরদী রাস্তা পার হয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে শিশু মাইশা খাতুনকে একটি অটো ভ্যান ধাক্কা দিলে রাস্তায় ছিটকে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়। এরপর ভ্যানটি তার পেটের ওপর চাপা দিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক সাময়িক চিকিৎসা শেষে পেটের আলট্রাসনোগ্রাফির জন্য প্রেসক্রিপশন করে দেন। পরিবারের লোকজন তাকে গোপালপুর আনোয়ার জেনারেল হাসপাতাল থেকে আলট্রাসনোগ্রাফি করে বাড়িতে নেন। এরপর হঠাৎ বেলা দেড়টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাইশাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সোহেল রানা বলেন, প্রাথমিকভাবে তার ডান হাত ও কপালে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। কপালে আঘাতের কারণে সেলাই দেওয়া হয়। সে সময় পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করার কথা বলায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ভ্যানের চাকা পেটের ওপর দিয়ে চলে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ ক্ষত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর দেড়টার দিকে তাকে পুনরায় হাসপাতালে নেওয়ার আগেই সে মারা যায়।
নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. জালাল উদ্দীন বাবু বলেন, সে ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী ছিল। শিশু মাইশার অকাল মৃত্যুতে শুধু বিদ্যালয় নয়, পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মাইশার বাবা মুদিদোকান ব্যবসায়ী মো. মোবারক হোসেন বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলে দোকানে চলে যাই। পরে দুর্ঘটনার কথা শুনে ছুটে আসি। অনিয়ন্ত্রিত চার্জার ভ্যান আমার মেয়েটার জীবন কেড়ে নিল।’
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।