• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • newsgonodhoniprotidin@gmail.com
  • +88-01727-202675

শিক্ষককে নিজের ও মেয়ের পা ধরান সেই আলোচিত অধ্যক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের তুমুল আলোচিত অধ্যক্ষ সেলীম রেজা কলেজের এক শিক্ষককে তাঁর পা ধরতে বাধ্য করেন। শুধু তাই নয়, অধ্যক্ষ তাঁর মেয়ে এবং এই কলেজের শিক্ষার্থী শ্রাবণী রেজারও পা ধরতে বাধ্য করান ওই শিক্ষককে। ভুক্তভোগী প্রভাষক মো. আহাদুজ্জামান শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছেন।

কার্যালয়ে আটকে রেখে মারধর এবং তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগে আহাদুজ্জামান গত বছরের ৮ নভেম্বর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এছাড়া অধ্যক্ষ শিক্ষকদের বেতন থেকে প্রতিমাসে ৩ শতাংশ টাকা জোর করে আদায় করেন বলে অভিযোগ করা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আদালত সিআইডির অভিযোগপত্র গ্রহণ করে সম্প্রতি অধ্যক্ষ সেলীম রেজা এবং তাঁর সহযোগী একই কলেজের শিক্ষক ওমর কোরাইশির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আহাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষকদের বরখাস্ত করা অধ্যক্ষের নেশা। কারণ, সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তুলতে মোটা অংকের টাকা আদায় করেন তিনি। চাহিদামতো টাকা না দেওয়ায় অধ্যক্ষ তাঁকে ১৯ মাস ধরে সাময়িক বরখাস্ত করে রেখেছেন।

রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সাময়িক বরখাস্ত থাকা কলেজের শিক্ষক সেরাজুল ইসলাম, শাহিন আক্তার, সাদিকুল ইসলাম ও আবু সালেহ মো. নাজমুস সাদাতও উপস্থিত ছিলেন। সেরাজুল ইসলাম ১১ মাস ধরে সাময়িক বরখাস্ত আছেন। অন্য তিনজন সাময়িক বরখাস্ত আছেন ৬ বছর ধরে।

সংবাদ সম্মেলনে আহাদুজ্জামান বলেন, ‘অধ্যক্ষ সেলীম রেজার মেয়ে শ্রাবণী রেজা রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজেই পড়াশোনা করতো। অধ্যক্ষের মেয়েকে আমি একদিন শ্রেণিকক্ষে এক ছাত্রের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখি। তখন আমি তাকে বকাবকি করি। শ্রাবণী ভাবে, বিষয়টি আমি তার বাবাকে বলে দিলে সমস্যা হবে। এ জন্য সে আমার নামেই উল্টো অভিযোগ করে যে, আমি তাকে শ্লীলতাহানি করেছি। এর প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ আমাকে সবার সামনে প্রকাশ্যে তার এবং মেয়ের পা ধরতে বাধ্য করেন। অধ্যক্ষের কথামতো পা না ধরলে আমার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ উঠবে না ভেবে আমি এতে বাধ্য হই। মামলার তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, আমি শ্লীলতাহানি করিনি। আমাকে যে পা ধরানো হয়েছিল তার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ করে রেখেছি।’

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্রও তুলে ধরা হয়। বলা হয়, নিয়ম না থাকলেও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদুল হক দায়িত্বে আছেন আটবছর ধরে। তিনি অধ্যক্ষের কথামতোই চলেন। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকেরা অধ্যক্ষ এবং সভাপতিকে অপসারণ এবং তাদের চাকরিতে বহাল করার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির রাজশাহী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাজকুমার সরকার, রাজশাহী মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক রনজিৎ সাহা এবং জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান মধুও উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, বছরের পর বছর শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা অমানবিক। রাজাবাড়ী কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সামনে আসছে সেগুলোর যথাযথ তদন্ত প্রয়োজন।

আহাদুজ্জামানের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর থেকে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা পলাতক আছেন। তাঁর মোবাইল নম্বরও বন্ধ। তাই এসব বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদুল হককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাই অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁরও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675