স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি বাজারে সরকারি জায়গা বরাদ্দ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবসা করছেন ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। এখন তাদের দোকানপাট ভেঙে জায়গাগুলো নতুন করে বরাদ্দ দিতে চায় উপজেলা প্রশাসন। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে পাঁচটি বট-পাকুড় গাছ। খবর রটেছে, জায়গা বরাদ্দ দিতে তরতাজা গাছগুলো এখন কেটে ফেলা হবে।
এ অবস্থায় গাছগুলোর প্রাণ রক্ষা করে সেগুলো দ্রুত সংরক্ষণের পদক্ষেপ নিতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) স্মারকলিপি দিয়েছেন তরুণরা। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী ও পবার ইউএনও লসমী চাকমার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তারা।
এ সময় গবেষণাধর্মী উন্নয়নমূলক যুব সংগঠন ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জের (ইয়্যাস) সভাপতি শামীউল আলীম শাওন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল, ইয়্যাসের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, সদস্য রবিন শেখ, ফারজানা নাজনীন মুন্নি, গ্রীন ভয়েস রাজশাহীর সমন্বয়ক আব্দুর রহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে যে, ‘বড়গাছি বাজারে সরকারি জায়গায় বেড়ে উঠা বড় বড় পাঁচটি বট-পাকুড় গাছ কাটার জোর প্রচেষ্টা চলছে। আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পেয়েছি একটি পাকুড় গাছের বেদিও ভেঙে ফেলা হয়েছে গাছটি কাটার উদ্দেশ্যে। স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ভয়ের কারণে এলাকার লোকজন সরাসরি প্রতিবাদ করতেও ভয় করছেন। জানা যাচ্ছে সরকারি জায়গাটিতে মার্কেট করার লক্ষ্যে গাছগুলো কাটা হবে। গাছগুলোতে বিভিন্ন পাখির বসবাস। মানুষ এর ছায়ায় বসে। গাছগুলো পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখে। তাই আমরা এই গাছগুলো না কাটার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চাই।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইজারা নিয়ে ওই হাটটি চালান বড়গাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেন সাগর ও তার বাবা যুবলীগ নেতা এমদাদুল হক। তারা এই হাটের জায়গা নতুন করে ব্যবসায়ীদের মাঝে বন্দোবস্তো দেওয়ার কাজ করছেন। জায়গা বরাদ্দ দিতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীদের মাঝে জায়গা বরাদ্দ দেবেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)।
জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকার বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, ‘কথাটা আমার কানেও এসেছে। কিন্তু হাটটা যেহেতু তাদের নামে ইজারা দেওয়া আছে, তাদের বাদ দিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই। এখন জায়গা বরাদ্দ পাচ্ছেন এমন ১০-১২ জন আমার কাছে এসেছিলেন। টাকা-পয়সার লেনদেনের বিষয়ে আমি তাদের নির্ভয়ে বলতে বললাম। কিন্তু তারা সবাই বললেন যে, জায়গা বরাদ্দ নিতে টাকা দিতে হচ্ছে না।’
গাছ কাটার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে গিয়ে গাছগুলো দেখে এসেছি। একেবারে তাজা গাছ সবগুলো। বট-পাকুড় একসঙ্গে থাকলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও একটা ব্যাপার আছে। আমি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি যে, গাছগুলো কাটা হবে না। যেমন আছে তেমনই থাকবে।