রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

নথি চুরির মামলা সিআইডিতে

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের তিন সহকারী কৌঁসুলির (এপিপি) মোহরারের বাড়ি থেকে মামলার চুরি হওয়া ৬০১ নথি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। দেড় বছর পর পুলিশ মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে পাঠিয়েছে। সিআইডি নতুন করে মামলাটির তদন্ত শুরু করেছে।

গত বছরের ২৪ মার্চ রাতে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এর এপিপি জালাল উদ্দীন, বজলুর রহমান ও সোহেলা আক্তার ডানার মোহরার হোসেন আলীর বাড়ি থেকে মামলার নথিগুলো চুরি হয়। এ ঘটনায় ২৬ মার্চ মোহরার হোসেন আলী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি মামলা করেন। এরপর প্রায় দেড় বছর ধরে পুলিশ তদন্ত করলেও মামলার কূলকিনারা করতে পারেনি। পরে পুলিশই মামলাটি সিআইডিকে দিয়েছে।

জানতে চাইলে রাজশাহী নগর পুলিশের (আরএমপি) কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত করছিলেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জীবন চন্দ্র বর্মন। দীর্ঘ সময়েও আসলে চুরির রহস্য জানা যায়নি। নথিও উদ্ধার হয়নি। এ কারণে মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কাজী মোস্তাসিন গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছেন।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নথি চুরির মামলা হলে আরএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছিলেন। সেই কমিটিও রহস্যজনক এ চুরির কূলকিনারা করতে পারেননি। ব্যর্থ হয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও। এ কারণে আরএমপির পক্ষ থেকেই পুলিশ সদর দপ্তরে মামলাটি সিআইডির কাছে পাঠাতে চিঠি দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে চাঞ্চল্যকর এ মামলা সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, যে ৬০১টি মামলার নথি চুরি হয়েছে সেগুলো জেলার ৮টি থানায় দায়ের হয়েছিল। এরমধ্যে মোহনপুর থানার ৭০টি, বাঘার ৪২টি, দুর্গাপুরের ৬০টি, বাগমারার ৮১টি, পুঠিয়ার ৭২টি, তানোরের ১১২টি, চারঘাটের ৮৩টি ও গোদাগাড়ী থানার ৮১টি মামলার নথি ছিল। এরমধ্যে নিষ্পত্তি হওয়া ১৮৮টি মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিও ছিল। বাকিগুলো ছিল বিচারাধীন। মামলাগুলোর বেশিরভাগই ছিল মারামারি এবং মাদক সংক্রান্ত। বাড়িতে নির্মাণ কাজ চলছিল বলে নথিগুলো সিঁড়ির পাশে রাখা ছিল তালাবদ্ধ অবস্থায়। চোরের দল সিঁড়িঘরের তালা ভেঙে নথি ছাড়াও লোহার সেলফ ও একটি বাইসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়।

জানতে চাইলে ওই আদালতের এপিপি বজলুর রহমান বলেন, ‘মামলাগুলোর একটা কপি আদালতে আছে। তাই মামলা পরিচালনায় কোন সমস্যা হচ্ছে। ওই মামলাগুলোর অনেকগুলোরই ইতোমধ্যে বিচার শেষ হয়েছে। অন্যগুলো চলমান আছে।’ তিনি বলেন, ‘মামলা পরিচালনার স্বার্থেই নথিগুলো এপিপিদের দেওয়া হয়। রাখার স্বার্থে কিংবা সহকারী হিসেবে মোহরারের কাছে নথি থাকে। চুরির ঘটনা কেন, সেটি তদন্তকারী সংস্থাই অনুসন্ধান করবে।’

রাজশাহী সিআইডির পুলিশ সুপার মো. আবদুল জলিল বলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তর মামলাটি আমাদের তদন্ত করতে দিয়েছে। ইতোমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরমধ্যে আমাদের তদন্ত কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে ছুটিতে আছেন। তিনি আসার পর দ্রুত তদন্ত কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।’

সর্বাধিক পঠিত