অনলাইন ডেস্ক : আগেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে এই চক্রে অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কার শেষ সিরিজটি নিয়মরক্ষার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। তাতে কি! সামনেই যে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ভিন্ন ফরম্যাটের টুর্নামেন্ট হলেও ব্যাট-বলের প্রস্তুতিটা এখানেই ঝালিয়ে নিচ্ছে অজিরা। স্বাগতিক লঙ্কান বোলারদের পিটিয়ে দুই সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরিতে তারা এশিয়ান ভূমিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে।
প্রথম টেস্টে আগে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে ৬৫৪ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে। যা কোনো এশিয়ান দেশে টেস্টের এক ইনিংসে অজিদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। রানপাহাড় গড়ার পথে অজি ব্যাটারদের হয়ে লঙ্কানদের মাটিতে প্রথম দ্বিশতক করেছেন উসমান খাজা। তার ইনিংসটি ছিল রেকর্ডময়। এ ছাড়া স্টিভ স্মিথ ও জশ ইংলিসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরিতে পিষ্ট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। আজ (বৃহস্পতিবার) দ্বিতীয় দিনের শেষভাগে ৪৪ রানেই তারা ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে।
এর আগে এশিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রানের টেস্ট ইনিংসটি ছিল ১৯৮০ সালের। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেবার তারা এক ইনিংসে ৬১৭ রান করেছিল। এর বাইরে অবশ্য আর মাত্র একবারই এশিয়ায় ৬০০ রানের বেশি করতে পেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। আজ তারা নিজেদের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কায় কোনো সফরকারী দল হিসেবেও করেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড, যেখানে টেস্ট ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭০৭ রান করেছিল ভারত (২০১০)।
পুরো ইনিংসে বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের প্রথমদিনই অবশ্য তারা জোড়া সেঞ্চুরিতে বড় রানের আভাস দিয়েছিল। ২ উইকেটে ৩৩০ রানের পর থেকে সফরকারী স্মিথের দল আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করে। দিন শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে রানের পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরির পর ৩৫২ বলে ১৬টি চার ও ১ ছক্কায় ২৩২ রান করেন খাজা। ডন ব্র্যাডম্যানের পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে (৩৮ বছর ৪২ দিন) ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটি এখন উসমান খাজার।
স্মিথের সঙ্গে খাজার তৃতীয় উইকেট জুটিও সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে। দুজন মিলে তুলেছেন ২৬৬, যা শ্রীলঙ্কায় অস্ট্রেলিয়ার যেকোনো উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ। আগের সেঞ্চুরি করা স্মিথ আজ থেমেছেন ১৪১ রানে। ২৫১ বলের ইনিংসে তিনি ১২টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান। তখনই স্কোরবোর্ডে বড় রান জমা হওয়ায় হাত খুলে খেলার সাহস পান জশ ইংলিস। ফলে তিনি আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে অভিষেক টেস্টের হিসাবে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন ৯০ বলে। ৯৪ বলে ১০টি চার ও ১ ছক্কায় ১০২ রান করেন তিনি।
ইনিংস ঘোষণার সময় অ্যালেক্স ক্যারিও ফিফটির পথে ছিলেন। তবে ৪৬ রানে অপরাজিত থেকেই তিনি মাঠ ছেড়েছেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম ইনিংসে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন প্রবাথ জয়সুরিয়া ও জেফ্রি ভ্যান্ডারসি।
শ্রীলঙ্কা দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করেছে ১৫ ওভার। ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো (৭) আউট হয়ে যান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই। ম্যাথু কুনেমানের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন তিনি। এরপর মিচেল স্টার্ক দিমুথ করুণারত্নেকে (৭) আর নাথান লায়ন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে (৭) তুলে নিলে স্বাগতিকরা ভীষণ চাপ মাথায় নিয়ে দিন শেষ করে। অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ বোলার হিসেবে সবমিলিয়ে ৭০০ উইকেটের মাইফলক পূর্ণ করেছেন স্টার্ক।