অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের ওপর কি পরিমাণ জুলুম করা হয়েছে, তার সাক্ষী এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ। আমাদের বুক থেকে আমাদের দায়িত্বশীল শীর্ষ ১৮ জন নেতাকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নিরপরাধ মানুষগুলোকে অপরাধী সাজিয়ে দুনিয়া থেকে তারা বিদায় করেছে। যারা আমাদেরকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিল, আল্লাহ তাআলা তাদেরকেই ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন। এ পরিবর্তনের ফয়সালা জমিনে হয়নি, হয়েছে আল্লাহর আসমান থেকে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ মজলুম হয়েছিল, তাই তারা সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিল।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় নোয়াখালী পৌরসভার পৌর বাজারে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ তাআলা ফেরাউনকে শুঁটকি বানিয়ে মিশরের মিউজিয়ামে মোমি হিসেবে রেখেছেন, যাতে দুনিয়ার স্বৈরাচাররা জুলুমবাজরা এ ফেরাউনকে দেখে শিক্ষা নেয়। আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, আমরা যেন কোনো দিন জুলুমবাজ না হয়ে যাই। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদর দপ্তরে যে ৫৭ জন চৌকস দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা করে হত্যার রাজনীতি শুরু করেছিল, সেই রাজনীতি তারা অব্যাহত রেখেছিল ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এই নোয়াখালীর মাটিতেও বহু রক্ত ও জীবন ঝরেছে।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে যাদের জীবন গিয়েছে, আমি তাদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাদের মায়েদের কান্না, বাবাদের কান্না, ভাই-বোনের কান্না সন্তানের কান্না আমার নিজের কানে শোনার সুযোগ হয়েছে। সারা দেশকে একটা জাহান্নামে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তাদের ঠিকানায় পাঠিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তি দিয়েছেন। সরকারের কাছে আমাদের স্পষ্ট বার্তা হচ্ছে, যারা নিহত হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে, সেই শহীদ পরিবারকে যথাযথ মর্যাদা প্রদান করুন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করুন। আর যারা আহত হয়ে কষ্ট পাচ্ছেন, সবকিছুর ওপরে অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের উত্তম এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। শহীদ ও আহতদের কাছে আমরা চির ঋণী।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় সুবর্ণচরে একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, আমাদের একজন মায়ের ইজ্জতের ওপর হাত দেওয়া হয়েছে। তাকে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছিল। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, যারা এমন কাজ করেছে তারা চার পা ওয়ালা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। তখন আমরা আসতে পারি নাই, কেন আসতে পারি নাই? সেটা আপনারা জানেন।
নোয়াখালী শহর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মো. ইউসুফের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভুঁইয়া, মাওলানা আলা উদ্দিন, মাওলানা শামছুদ্দিন, ফেনী জেলা আমির মুফতি আব্দুল হান্নান, নোয়াখালী জেলা নায়েবে আমির মাওলানা সাইয়েদ আহাম্মদ, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন, নোয়াখালী জেলা জামায়াতে ইসলামের সাবেক আমির ডাক্তার বোরহান উদ্দিন, নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও নোয়াখালী জেলা জামায়াতে ইসলামীর শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, নোয়াখালী পৌর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, নোয়াখালী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক, নোয়াখালী শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।