প্রিমিয়ার লিগ: ১০ জন নিয়ে খেলেও প্যালেসকে পরাজিত করেছে আর্সেনাল

প্রিমিয়ার লিগ: ১০ জন নিয়ে খেলেও প্যালেসকে পরাজিত করেছে আর্সেনাল

অনলাইন ডেস্ক : জাপানীজ ডিফেন্ডার তাকেহিরো তোমিইয়াসুর লাল কার্ড সত্তেও প্রিমিয়ার লিগে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছে আর্সেনাল। সোমবার সেলহার্স্ট পার্কে পেনাল্টি থেকে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেছেন মার্টিন ওডেগার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের ওডেগার্ডের গোলে আর্সেনাল লিগে টানা দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করেছে। তবে মিকেল আর্তেতার দলকে এই তিন পয়েন্ট নিশ্চিতে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে। বিশেষ করে ৬৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারনে তোমিইয়াসুকে মাঠ ত্যাগ করতে হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলাটা কঠিন হয়ে পড়েছিল। যদিও এই লাল কার্ড নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। থ্রো করতে গিয়ে লম্বা সময় নেবার কারনে প্রথম হলুদ কার্ডটি দেখেছিলেন জাপানীজ এই ডিফেন্ডার। এরপর জর্ডান আইয়ুকে ফাউলের অপরাধে দ্বিতীয় কার্ডটি দেখেন। যদিও এই ঘটনাটি সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যেত।
গোল ব্যবধানে শীর্ষে থাকা ব্রাইটন ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির থেকে পিছিয়ে টেবিলের তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আর্সেনাল। আর্তেতা অবশ্য একজন কম নিয়ে খেলেও শেষ পর্যন্ত লিড ধরে রেখে তিন পয়েন্ট অর্জন করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, ‘দারুন জয়, আমি খুব খুশী। ঘরের বাইরে ১০ জন নিয়ে ৩০ মিনিট খেলা সত্যিই কঠিন। কিছু খেলোয়াড়কে শারিরীক দক্ষতায় কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। তবে বদলী খেলোয়াড়রা আজ নিজেদের প্রমান করেছে। তারা দেখিয়ে দিয়েছে ঠিক কোন কাজটা তাদের করতে হবে। আজকের ম্যাচটা কঠিন ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সব কাটিয়ে ওঠাই লক্ষ্য ছিল।’
সময়ক্ষেপনের জন্য তোমিইয়াসুর প্রথম কার্ড প্রসঙ্গে হতাশ আর্তেতা বলেছেন, ‘এটা স্ট্যান্ডার্ড ছিল। আমার মনে হয় এখানে সে আট সেকেন্ড নিয়েছে। এই কার্ডের কোন অর্থ নেই।’
গত মৌসুমে শেষ মুহূর্তে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা হাতছাড়া হবার পর এবার আর সেই ভুল করতে চায়না গানার্সরা। প্রথম ম্যাচে নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে শুরু করার পরেই আর্তেতা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শুরু থেকেই তারা এগিয়ে যেতে চায়। যদিও এখনো পর্যন্ত নিজেদের শতভাগ মাঠে দিতে পারেনি আর্সেনাল। তবে ২০০৪ সালের পর প্রথমবারের মত লিগ শিরোপা জয়ে কোন ছাড় দিতে নারাজ গানার্সরা। গত আসরে এ্যাওয়ে ম্যাচে লিগের সেরা রেকর্ড গড়েছিল আর্তেতার দল। সফরকারী হিসেবে তারা ১০ ম্যাচে কোন গোল হজম করেনি, যা প্রিমিয়ার লিগে একটি রেকর্ড। আরো একবার সেই রেকর্ড ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েই কাল প্যালেসের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। নতুন গোলরক্ষক ডেভিড রায়ার্স ব্রেন্টফোর্ড থেকে ধারে আসার পর অবশ্য ছিলেন বদলী বেঞ্চে। বরাবরের মত গোলবার সামলানোর দায়িত্ব ছিল এ্যারন রামসডেলের ওপর। ম্যাচের শুরুতেই এবেরেচি এজের দুর পাল্লার স্ট্রাইক রুখে দিয়ে রামসডেল আত্মবিশ^াস দেখিয়েছেন।
সিটি বস পেপ গার্দিওলার মত ডিফেন্ডারকে কিছুটা উপরে উঠিয়ে খেলার তাগিদে আর্তেতাও কাল রাইট-ব্যাক থমাস পার্টিকে মিডফিল্ড পজিশনে উঠিয়ে এনেছিলেন। এ কারনে আর্সেনাল পজিশনের দিক থেকেও আধিপত্য ধরে রেখেছিল। কিন্তু গ্যাব্রিয়েল জেসুসের ইনজুরিতে দলে ডাক পাওয়া এডি এনকেইটা প্রথমার্ধে চাপটা ভালমত সামলাতে পারেননি। ২৪ বছর বয়সী এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড জোয়াকিম এ্যান্ডরসনকে কাটিয়ে গোলরক্ষক স্যাম জনস্টোনকে একা পেয়েও বারের উপর দিয়ে বল বাইরে পাঠিয়ে দেন। উইলিয়াম সাবিলার স্লাইডিং ট্যাকেলে আইয়ু ডি বক্সের ভিতর বাঁধা পেরেও ভিএআর পেনাল্টির সিদ্ধান্ত এড়িয়ে যায়। ডিক্লান রাইসের পাসে মাত্র ছয় গজ দুর থেকে আবারো এনকেইটা গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ওডেগার্ডের ২৫ গজ দুর থেকে শক্তিশালী শট কর্ণারের মাধ্যমে কোনমতে রক্ষা করেন জনস্টোন।
তবে ৫৩ মিনিটে ওডেগার্ড আর কোন ভুল করেননি। স্পট কিক থেকে এই নরওয়েজিয়ান আর্সেনালকে এগিয়ে দেন। গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির ফ্রি-কিকে এনকেইটাকে আটকাতে গিয়ে জনস্টোন ফাউল করে বসেন। পেনাল্টিতে জনস্টোনকে উল্টো দিকে পাঠিলে বল জালে জড়ান ওডেগার্ড। পার্টির দারুন একটি শট জনস্টোন রক্ষা না করলে আর্সেনাল তখনই ব্যবধান দ্বিগুন করতে পারতো। ৬৭ মিনিটে তামিইয়াসু আইয়ুকে আটকাতে গিয়ে দ্বিতীয় ফাউল করে বসেন। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারনে ভিএআর আইনানুযায়ী কোন রিভিউর প্রয়োজন না থাকায় তামিইয়াসুকে মাঠত্যাগ করতে হয়। কিছুক্ষন পরে পার্টি আবারো এজেকে ডি বক্সে ফাউল করলেও প্যালেসের পেনাল্টির আবেদন নাকচ হয়ে যায়। ম্যাচের একেবারে শেষভাগে টাইরিক মিশেলের ক্রসে ওডসোনে এডুয়ার্ড প্যালেসের হয়ে সবচেয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *