Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

উদ্বোধনের অপেক্ষায় রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

উদ্বোধনের অপেক্ষায় রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানী ঢাকার পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নভোথিয়েটার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার’ তৈরি করা হয়েছে রাজশাহীতে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এরই মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এই প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।

আজ মঙ্গলবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান রাজশাহী এসে এই নভোথিয়েটার পরিদর্শন করেছেন। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। তবে আগামী মাসেই এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টজন।

রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় নভোথিয়েটারটি পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজশাহী একটি শিক্ষানগরী। স্থানীয় এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তুলতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে নভোথিয়েটার।’

তিনি আরও বলেন, ঢাকার পরে বিভাগীয় শহরে এটিই প্রথম নভোথিয়েটার। শিক্ষানগরী এবং প্রকৃষ্ট জায়গা বলেই ঢাকার বাইরে রাজশাহীকে নভোথিয়েটার নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে নভোথিয়েটার অত্যন্ত প্রয়োজন। এটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল।

নভোথিয়েটার শিক্ষার্থীদের কাজে আসবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা কোনো ব্যবসার জায়গা নয়। তাই নভোথিয়েটারের দায়িত্ব কোনো ব্যবসায়ীকে দেওয়া হবে না। নভোথিয়েটারের মূল লক্ষ্য থাকবে আধুনিক মানুষ তৈরি করা। নভোথিয়েটার রাজশাহীর সম্পদ। এটা রক্ষণাবেক্ষণ আপনাদের দায়িত্ব। রাজশাহীতে নভোথিয়েটার স্থাপনে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের অবদান অনেক বেশি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ২৩২ কেটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার নির্মাণকাজ শুরু হয়। করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কাটিয়ে এর কাজ শেষ হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের ধোয়া-মোছার কাজ।

প্রকল্পের মূল আকর্ষণ প্ল্যানেটরিয়াম বসানোর কাজ শেষ হয় কয়েক মাস আগেই। সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে তিন তলায় যেতে ভেতরে দুটি বড় সিঁড়ি ছাড়াও রয়েছে লিফট ও এস্কেলেটর। তৃতীয় তলায় পূর্ব-উত্তর কোনায় বসানো হয়েছে ডুম বা গম্বুজ। সফটওয়্যার চালুর সঙ্গে সঙ্গে ক্লিক করলেই গম্বুজের চারপাশ থেকে হালকা আলোয় আলোকিত হতে শুরু করে মাথার ওপরের সাদা পর্দা। চারপাশের মোট ৫টি প্রোজেক্টর একসঙ্গে চালু হয়ে শুরু হয় পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য দ্য বিগ ব্যাং শো।

পরীক্ষামূলক প্রদর্শনীতে দেখা যায়, নভোথিয়েটারে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি, সূর্য, চাঁদ, গ্রহ, নক্ষত্র সবই এক পর্দায় ভেসে উঠছে নিমেষেই। নিখুঁত সাউন্ডের জন্য পুরো হলে লাগানো হয়েছে ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম। যা প্রদর্শনীর মাধ্যমে নিয়ে যাবে সরাসরি মহাশূন্যে গ্রহ-নক্ষত্রের খুব কাছে। একসঙ্গে ১৫০ জন আসনগুলোতে বসে অসীম মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে ও দেখতে পারবেন। দিনে অন্তত ৬ থেকে ৭টি শো চালানো সম্ভব বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী গণপূর্ত-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, প্রকল্পে শুধু ভবন তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১৪০ কেটি টাকা। বাকি অর্থ ব্যয় হয়েছে নভোথিয়েটারের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য খাতে। স্থাপন করা হচ্ছে বিশ্বের আধুনিক টেলিস্কোপ। যা দিয়ে গবেষকেরা নভোমণ্ডলের গবেষণা আরও এগিয়ে নিতে পারবেন।

ঘুরে দেখা গেছে, নভোথিয়েটারের প্রতিটি ফ্লোরে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক ডেকোরেশন। লাইটিং, ভবনের সম্মুখে সুদৃশ্য পানির ফোয়ারা। পুরো ভবনে সেন্ট্রাল এসি স্থাপন, টিকিটিং সিস্টেম পুরোপুরি অটোমেটেড ও ডিজিটাল। আধুনিক ফায়ার প্রোটেকশন ও ডিটেকশন ব্যবস্থাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতে লাগানো হয়েছে ১৪০টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা। আশা করা হচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here