সৌদি আরবকে এশিয়ান কাপ উপহার দিতে চান মানচিনি

সৌদি আরবকে এশিয়ান কাপ উপহার দিতে চান মানচিনি

অনলাইন ডেস্কা: সৌদি আরবকে এশিয়ান কাপ ফুটবলেল শিরোপা উপহার দিতে চান সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কোচ রবার্তো মানচিনি। ইতালিয়ান দলের দায়িত্ব ছাড়ার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে গতকাল সৌদি আরব জাতীয় দলে আকর্ষণীয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন মানচিনি।

ইন্টার মিলান ও ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক এই কোচকে সোমবার গণমাধ্যমের সামনে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। ২০২৬ বিশ^কাপের পরেও কোচ হিসেবে তাকে ধরে রাখতে চায় সৌদি আরব। সে কারনেই সবুজ জার্সিধারীদের সাথে ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তি করেছেন মানচিনি।

এর আগে অবশ্য মানচিনি স্বীকার করেছেন ইতালি ছাড়ার পিছনে সৌদি আরবের প্রস্তাব দায়ী নয়। বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলারে তিনি সৌদির সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। আগামী বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কাতারে এশিয়ান কাপে সৌদি আরবের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে মানচিনি বলেছেন, ‘আমি যাদুকর নই। ২৭ বছর পর প্রথমবারের মত এশিয়ান কাপ জয়ই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের হাতে আর চার মাস সময় আছে। এর মধ্যে চারটি প্রীতি ম্যাচ রয়েছে। বিশ^কাপ বাছাইপর্বের দুটি ম্যাচ আছে। এরপর এশিয়ান কাপের প্রস্তুতির জন্য আমাদের হাতে ২০ দিন সময় থাকবে। আমরা জানি সেখানে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার মত বড় দল রয়েছে। কিন্তু আমি নিশ্চিত সেখানে আমরা যেতে পারবো ও শিরোপা জয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’

আরও পড়ুনঃ  ৩ ফিফটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড সংগ্রহ

৫৮ বছর বয়সী মানচিনিকে সৌদি আরব নিয়োগ দেবার মাধ্যমে আরো একটি বড় চুক্তি সম্পন্ন করেছে। ইতোমধ্যেই দেশটির পেশাদার লিগের শীর্ষ চার ক্লাব বেশ কিছু শীর্ষসারির ইউরোপীয়ান খেলোয়াড়কে দলে ভিড়িয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার সৌদিতে আসার একদিন পরেই মানচিনি রিয়াদে আসেন। এর আগে এখানকার লিগে যোগ দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, করিম বেনজেমাদের মত তারকারা।

সৌদি আরব বর্তমানে বিশ^ র‌্যাঙ্কিংয়ে ৫৪তম স্থানে আছে, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনে তাদের কয়েকটি প্রতিপক্ষের তুলনায় অবস্থান অনেকটাই নীচে। গত বছর প্রথমবারের মত মঠে নামা সৌদি আরবের নারী দলটি বিশ^ ফুটবল র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৮৬টি দলের মধ্যে ১৭২তম স্থানে রয়েছে।

গত বছর কাতার বিশ^কাপে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে তৎকালীণ কোচ হার্ভে রেনার্ডের অধীনে আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করে আলোচনায় আসে সৌদি আরব। পরবর্তীতে রেনার্ড সৌদির দায়িত্ব ছেড়ে ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান।
মানচিনির ইতালি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত অনেককেই হতাশ করেছে। এ মাসের শুরুতে তার উপর অনুর্ধ্ব-২১ ও অনুর্ধ্ব-২০ দলের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সৌদি আরবের বিপুল পরিমান অর্থের প্রস্তাবে তার রাজী হবার সিদ্ধান্ত বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। যদিও ইতালি দল থেকে পদত্যাগের কারন হিসেবে সৌদির প্রস্তাব তিনি অস্বীকার করছেন।

আরও পড়ুনঃ  শেষের ঝড়ে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং স্কোর

মানচিনির স্থানে ইতালি দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নাপোলির সাবেক কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তি। পাঁচ বছর মানচিনি আজ্জুরিদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ইউরো ২০২০ শিরোপা ঘরে তুলে সমস্যা জর্জরিত ফুটবল দলটিকে পুনরায় লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। কিন্তু গত বছর প্লে-অফে পুঁচকে নর্থ মেসিডোনিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে ইতালি বিদায় নেবার পর হতাশা আরো বেড়ে যায়। এনিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপে খেলতে ব্যর্থ হলো ইতালি।

সাম্পদোরিয়ার হয়ে পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৯৯১ সালে সিরি-এ শিরোপা ছাড়াও চারটি ইতালিয়ান কাপ জয় করেছিলেন মানচিনি। এই ক্লাবের হয়ে সদ্য প্রয়াত গিয়ানলুকা ভিয়াল্লি সাথে আক্রমনভাগের নেতৃত্ব দিয়েছেন মানচিনি। কোচ হিসেবে ইন্টার মিলানের হয়ে তিনটি সিরি-এ শিরোপা জয় করেছেন। ২০১২ সালে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে।
সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশন মানচিনির সাথে চুক্তির পরিমান প্রকাশ করেনি। তবে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে সৌদি ফেডারেশন এক বিবৃবিতে বলেছে, ‘এই নিয়োগ সৌদি আরবে জাতীয় দলের নব যুগের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মানচিনির সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা আমাদের দলের জন্য নতুন এই মাইলস্টোন প্রতিষ্ঠ করবে।’

আরও পড়ুনঃ  যে কারণে নেইমারদের দায়িত্ব নিতে অনাগ্রহী আর্জেন্টাইন কোচ

আগামী ৮ সেপ্টেম্বর সৌদি মালিকানাধীন প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব নিউক্যাসলের হোম গ্রাউন্ড সেন্ট জেমস পার্কে কোস্টা রিকার সাথে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মানচিনির অধীনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে সৌদি আরব। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর একই ভেন্যুতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরো একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।

চুক্তির মেয়াদ এটাই প্রমান করে আগামী বিশ্বকাপে মানচিনির অধীনেই হয়তো সৌদিকে মাঠে দেখা যাবে।-বাসস

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *