পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনে ব্যাপক সহিংসতা-বিক্ষোভ

পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনে ব্যাপক সহিংসতা-বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক: মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় ইউরোপের দেশ সুইডেনে ব্যাপক বিক্ষোভ-সহিংসতা হয়েছে। বিক্ষোভের সময় দেশটিতে বেশ কিছু যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর পর সহিংস দাঙ্গার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার সালওয়ান মোমিকা নামে ইরাকের একজন ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর সুইডেনে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা মালমো শহরে জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার দায়ে ১০ জনকে আটক করেছে। মূলত কোরআনে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদে শতাধিক লোক সেখানে জড়ো হওয়ার পর বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  তিন দিনের সফরে ট্রাম্পের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন বুধবার

বিবিসি বলছে, মোমিকা নামের ওই ব্যক্তি গত রোববার বিকেলে শহরের প্রধান চত্বর বলে পরিচিত ভার্নহেমস্টরগেটে কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেন। তিনি এর আগেও একাধিক ইসলামবিরোধী বিক্ষোভে কোরআনের অবমাননা করেছেন এবং তার কর্মকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে কূটনৈতিক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

কর্মকর্তারা বলেছেন, বিক্ষোভের সময় তাদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের গাড়ির দিকে বৈদ্যুতিক স্কুটার নিক্ষেপ করে। এছাড়া মালমো শহরের রোজেনগার্ড এলাকায় পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।

মালমোর এই এলাকায় বিশাল সংখ্যক অভিবাসী বসবাস করেন এবং অতীতেও এই এলাকাটি সহিংস বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  যুদ্ধবিরতির পর লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ৭১

মালমো শহরের পুলিশ কমান্ডার পেট্রা স্টেনকুলা স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন, ‘আমি জানি এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে তা মানুষের মধ্যে তীব্র আবেগ জাগিয়ে তোলে, তবে আমরা রোববার বিকেলে যেরকম বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা দেখেছি, তা আমরা সহ্য করতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রোজেনগার্ডে আবারও সহিংসতা ও ভাঙচুর দেখতে পাওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বিবিসি বলছে, স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের দেশগুলোতে চলতি বছর দফায় দফায় কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। গত জুন মাসে মোমিকা নামের ওই ব্যক্তি স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে ঈদ-উল-আজহার দিনে কোরআনের একটি অনুলিপিতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

বাক-স্বাধীনতার নামে সুইডিশ পুলিশ মমিকাকে এই কাণ্ড ঘটানোর অনুমতি দিয়েছিল। তবে পরে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ  মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল চীন

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহামে উগ্রপন্থি সুইডিশ রাজনীতিবিদ রাসমুস পালুদানকে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করার অনুমতি দেয় সুইডেন। আর সেখানেই বিক্ষোভের নামে পবিত্র কোরআন আগুনে পোড়ান ড্যানিশ উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের নেতা রাসমুস পালুদান।

এর আগে গত বছরের এপ্রিলে মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসে পালুদানের কোরআন পোড়ানোর ঘোষণা সুইডেনজুড়ে দাঙ্গার জন্ম দিয়েছিল।

এছাড়া প্রতিবেশী ডেনমার্কেও বেশ কয়েক দফায় প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। গত মাসে এই দেশটি বলেছে, তারা প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআনের অবমাননা নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *