অনলাইন ডেস্ক: ভূমধ্যসাগরে উদ্ভুত ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও তার প্রভাবে সৃষ্ট ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় লিবিয়ার উপকূলীয় শহর দেরনা ও তার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার মরদেহের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর বাইরে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
স্থানীয় সময় বুধবার সকালে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন রাজধানী ত্রিপোলিতে ক্ষমতাসীন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্ডারসেক্রেটারি সাদেদ্দিন আবদুল ওয়াকিল।
নিখোঁজদের একটি বড় অংশ জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে সমুদ্রে ভেসে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাকিরা আটকা পড়ে আছেন শহরের বিভিন্ন ধ্বংস্তুপের নিচে, যেখানে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
দেরনার হাসপাতালকর্মীরা জানিয়েছেন শহর ও তার আশপাশের এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গগুলোতে আর মরদেহ রাখার জায়গা নেই। বুধবার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে গিয়ে সিএনএন দেখেছে, ধ্বংস্তুপ থেকে উদ্ধার মৃতদেহগুলোকে রাখা হয়েছে রাস্তার পাশেই।
সোমবার ভূমধ্যসাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল লিবিয়ার পূর্ব উপকূলীয় শহর দেরনায় আছড়ে পড়ে। প্রবল ঝড়ো হাওয়া-বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসে শত শত বাড়িঘর উড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেরনা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী ওয়াদি দেরনার দু’টি বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ায় গোটা শহর প্রায় ভেসে যায়। লিবিয়ার আবহাওয়া দপ্তর ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঝড়ের সময় সাগর থেকে অন্তত ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস আঘাত হেনেছে শহরটিতে।
বস্তুত, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে দেরনা। বাইরে থেকে এই শহরটিতে প্রবেশের পথ ছিল ৭টি। ঝড়ের পর ৫টিই অকেজো হয়ে পড়েছে।
সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুতর ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ধ্বংস হয়ে গেছে শহরটির টেলিফোন ও মোবাইল নেটওয়ার্কও। ফিলিস্তিন থেকে আগত নারী আয়াহ সিএনএনকে বলেন, ‘আমার দুই চাচাত ভাই দেরনায় থাকেন। ঝড়ের পর থেকে তাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না, কোনো খোঁজ-খবরও পাওয়া যাচ্ছে না। আমি খুবই উদ্বিগ্ন, কারণ আমি এখনও জানি না তারা বেঁচে আছে কি না।’