Home রাজশাহী রাজশাহীর উপশহর মহিলা কলেজ শিক্ষককে যোগদান করতে না দেওয়ায় কমিটি ভেঙে দিলো শিক্ষা বোর্ড

রাজশাহীর উপশহর মহিলা কলেজ শিক্ষককে যোগদান করতে না দেওয়ায় কমিটি ভেঙে দিলো শিক্ষা বোর্ড

রাজশাহীর উপশহর মহিলা কলেজ শিক্ষককে যোগদান করতে না দেওয়ায় কমিটি ভেঙে দিলো শিক্ষা বোর্ড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী নগরীর উপশহর মহিলা কলেজে একজন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতে নাসরিন সুলতানা নামের এক শিক্ষককে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদানের অনুমতি দানের জন্য শিক্ষা বোর্ড থেকে বার বার কলেজ কর্তৃপক্ষ চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা বোর্ডের সেই নির্দেশনা মানেনি কলেজ পরিচালনা পর্ষদ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ৮ নভেম্বর কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশনা জারি করে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক এনামুল হক।
তাঁর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, একাধিক নির্দেশনা অমান্য করার কারণে প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ধারা ৩৮ লঙ্ঘিত হওয়ায় রাজশাহীর উপশহর মহিলা কলেজের বর্তমান পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। এ অবস্থায় অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
কলেজ সূত্র মতে, এ কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে নাসরিন সুলতানা নামের এক শিক্ষককে ২০০০ সালের ৮ এপ্রিল প্রথমে নিয়োগ দিয়ে যোগদান করানো হয়। কিন্তু ওই পদে গত বছরের আগস্টে ওই কলেজটি এমপিওভূক্ত হওয়ার পরে নাসরিন সুলতানা জানতে পারেন তার পরবর্তিতে শাফিয়াজ আখতার বানু নামের একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জালিয়াতি করে নাসরিন সুলতানা যোগদানের পরে শাফিয়াজকে একই স্থানে মোট তিন বার যোগদান দেখানোা হয়েছে। ফলে নাসরিন সুলতানাকে বাদ দিয়ে শাফিয়াজের নাম এমপিও ভূক্তকরণ হয়েছে।
এ ঘটনায় নাসরিন সুলতানা উচ্চ আদালতে একটি আপিল আবেদন করলে আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেন। পাশাপাশি শাফিয়াজের যোগদান অবৈধ ঘোষণা করে নাসরিন সুলতানাকে পুনরায় যোগদান করিয়ে এমপিওভূক্তি করণের নির্দেশনা দেন আদালত। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ওই নির্দেশনা মানেননি। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড উপশহর মহিলা কলেজের সভাপতিকে বার বার চিঠি দিয়েও সেটি কার্যকর করাতে ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কমিটি বিলুপ্ত করে অ্যাডহক কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন।
নাসরিন সুলতানা বলেন, ‘আমাকে অন্যায়ভাবে এমপিওভূক্ত থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমি উচ্চ আদালতে নির্দেশনা নিয়ে এবং শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় বার বার কলেজে গেলেও আমাকে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। আমি এর বিচার চাই।’
জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যোগদান করাতে পারেন কলেজ সভাপতি। এখানে আমার কোনো হাত নাই। তবে উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে। সেটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাউকেই এমপিওভূক্তির নাম জন্য পাঠাতে পারছি না। এ নিয়ে শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে একটি ভুল বঝাবুঝি চলছে। সেটি নিরসন করা হবে।
বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি মজিবুল হক বকুর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, ‘উচ্চ আদালতের একটি রায় আছে নাসরিন সুলতানার নাম অন্তভূক্তি করে সেটি এমপিওভূক্তির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সেই নির্দেশনা মানছেন না। এর বাইরেও আরও কিছু নির্দেশনা বার বার দেওয়া হলেও সেগুলো মানছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ কারণে কলেজ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here