• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

কাশিয়াডঙ্গা ইউনিয়ন ভুমি অফিসে চলছে প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্য!

প্রকাশ: শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ ৩:৫১

কাশিয়াডঙ্গা ইউনিয়ন ভুমি অফিসে চলছে প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্য!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পবা উপজেলার কাশিয়াডঙ্গা ইউনিয়ন ভুমি অফিসে হয়ারনির শেষ নেই। সকলের সামনেই প্রকাশ্যে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ সহকারী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় সয়লাব করে ফেলেছে তার অফিস। এই কর্মকর্তার খপ্পরে পড়ে সেবা নিতে আসা জনসাধারণের ভোগান্তি । সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং সঠিক তদারকি না করার ফলে ইকবাল হোসেন এমন কাজ করে এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন বলে অভিযোগ করছেন। এইসব ভুক্তভোগী জনসাধারণের প্রশ্ন এই হয়রানীর শেষ কোথায়? সেবা নিতে এসে ভূক্তভোগীরা আরো বেশি হয়রানীর স্বিকার হবেন বলে ভয়ে মুখ খুলতে রাজী নন কেউ। তারা বলছেন, উর্দ্ধতণ কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছেন ঘুষ বাণিজ্য
এক সেবা গ্রহিতা বলছিলেন নিজের ৩৬ শতাংশ জমির নামজারি (নাম খারিজ) করতে মাসের পর মাস ঘুরতে হচ্ছে। ঘুষ না দেয়ায় কাজ হচ্ছে না। তার কথায় সায় ‘ঠিক ঠিক’ আওয়াজ তুলে সায় দিচ্ছিলেন নামজারি ও খাজনা দিতে আসা অন্যান্য সেবা প্রত্যাশীরাও। নামজারি, ডিসিআর ও দাখিলার নামে এখানে অবাধে চলা ঘুষ-বাণিজ্যের রমরমা অবস্থার চিত্র তুলে ধরতে তারাও হয়ে উঠেন সরব।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাখঢাক না করেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন থেকে শুরু করে অফিসের পিয়ন, ঘুষ-দুর্নীতির রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন ’ অনিয়মকে রূপ দিয়েছেন নিয়মে! আর এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণকে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী লোকজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও কোন ফল হয় না বলে অভিযোগ তাদের। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনও দুর্নীতির দুষ্টচক্রের পক্ষেই উল্টো সাফাই গান, এমন নেতিবাচক নজিরও তাদের ফেলে দিয়েছে প্রশ্নের মুখে।
বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে কাশিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, উপ সহকারী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন ভলিয়ম বইতে নথি দেখছেন। তাঁকে ঘিরে জনাবিশেক মানুষের জটলা। সেখানে সেবাগ্রহীতাদের কাগজপত্র যাচাই করছেন। তাঁরা কেউই ওই অফিসের কর্মচারী নন। স্থানীয় লোকজনের কাছে উমেদার নামে পরিচিত হলেও মূলত তাঁরা ‘দালাল’। এ ইউনিয় অফিসে তৎপর এমন দালালের সংখ্যা অন্তত১০ জন। তাঁদের কাজ ভূমি অফিসের কর্মচারীদের যোগসাজশে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করা। এমনকি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও থাকে তাঁদের জিম্মায়। এর মধ্যে ২/৩ জন নারী সদস্য ও আছে তারা উপ-সহকারী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের ব্যাক্তিগত সোর্স পরিচয়ে সেবা গ্রহীতাদের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
সেবা গ্রহিতারা অভিযোগ করে বলেন, এখানে ঘুষ ছাড়া সেবা নিতে হলে জমির মালিকদের জন্য পদে পদে অপেক্ষা করে হয়রানি। এ জন্য অনেকে ভূমি অফিস এড়িয়ে দালালদের মাধ্যমে কাজ সমাধান করেন।
গ্রাম এলাকায় জমির কাগজসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রথমেই যেতে হয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। পরের ধাপে সেবা দেয় উপজেলা ভূমি অফিস। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন এসব অফিসের দেওয়া সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে ভূমিহীনদের মাঝে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত, খতিয়ানের ভুল সংশোধন, নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণীর আপত্তি-নিষ্পত্তি, দেওয়ানি আদালতের রায় বা আদেশমূলে রেকর্ড সংশোধন, ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন নিষ্পত্তি, জমা একত্রকরণ ও বিবিধ কেসের আদেশের নকল বা সার্টিফায়েড কপি প্রদান ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ  বগুড়ার সোনাতলায় পাঁচ দিনব্যাপী সন্যাসীর মেলা শেষ হলো

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ইকবাল হোসেনের এই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, জমির মাঠ পর্চা নিতে এই ভূমি অফিসে ২শ থেকে ৫শ’ টাকা দিতে হয়। আর কর্মকর্তার সবচেয়ে বড় দুর্নীতির জায়গা হল জমির মিউটিশন করা ও খাজনা কাটানো। জমি ক্রয় করার পরে প্রত্যেক জমির মালিককেই বাধ্যতামূলক জমির রেকর্ড (মিউটিশন) করতে হয়। সরকারি ধার্য্য অনুযায়ী মিউটিশন ফি ১১৭৫ টাকা। কিন্তু ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ সহকারী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন জমির মালিকদেরকে বিভিন্নভাবে এটাওটা বুঝিয়ে হয়রানী করে ১০ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকার চুক্তি করেন জমির মিউটিশনের জন্য। ১০ টাকা খাজনার জন্য গুনতে হয় ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। তখন জমির মালিকগণ নিরুপায় হয়ে কর্মকর্তার ফাঁদে পা দিয়ে হাজার হাজার টাকা গচ্ছা দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক ভুক্তভোগী বলেন, ৯ মাস আগে আমি জমির খাজনা দিতে কাশিয়াডঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে ভূমি কর্মকর্তা আমাকে ৩০ টাকার একটি খাজনার চেক কেটে দিয়ে ২ হাজার টাকা নেয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়,ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ সহকারী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না। নামজারি (নাম খারিজ), ডিসিআর ও দাখিলার জন্য তাকে আলাদা আলাদা টাকা দিতে হয়। কখনো টাকা দিলেও জুটে না নামজারি। খাজনার দাখিলার জন্য (ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ) সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়েও অতিরিক্ত টাকা আদায় করলেও আবার রশিদ দেয়া হয় সরকারি হিসাবেই। এসবের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা। দৌরাত্ম বেড়েছে দালাল সিন্ডিকেটেরও।
এসব সেবা নিতে জমির মালিকদের অনেককেই দালালের দ্বারস্থ হতে হয় বলে স্বীকার করেছেন ইউনিয়ন উপ সহকারী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভূমি ব্যবস্থাপনায় আগে থেকে দালাল চক্র জড়িত। কিছু ভূমির মালিক নামজারি করতে দালালদের দায়িত্ব দেন। তা ছাড়া কাজের চাপে পড়লে আমরাও তাঁদের সহযোগিতা নিই।’ উক্ত বিষয় নিয়ে কাশিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন উপ সহকারী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, তার বিষয়ে কোন অভিযোগ থাকলে পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাথে যোগাযোগ করেন।

আরও পড়ুনঃ  সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে জনতা আইন নিজের হাতে তুলে নেবে : সরকারের উদ্দেশে আজহারী

সর্বশেষ সংবাদ

ছোট অপরাধ বাড়ছে, বড় অপরাধ কমে এসেছে : আসিফ মাহমুদ
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫ ১২:২০
পুঠিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মাদরাসা ছাত্রী নিহত
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫ ১২:২০
ওএসডি হলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৮২ কর্মকর্তা
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫ ১২:২০
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675