আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণা: সেই প্রতারক মোস্তাফিজ গ্রেপ্তার

আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণা: সেই প্রতারক মোস্তাফিজ গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার : আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজশাহীর গ্রীণ প্লাজা রিয়েল এ্যাস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। মঙ্গলবার ভোরে রাজশাহী মহানগর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালিয়া থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে অনেকগুলো প্রতারণা অভিযোগ রয়েছে। এরমধ্যে একটি ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার রাতে মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে বারো লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়। জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার এজাজুল হক নামের এক ব্যক্তি এ মামলাটি দায়ের করেন।

এজাজুল হক অভিযোগ করেন তার নিকট একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে ১২ লাখ টাকা নেন মোস্তাফিজ। কিন্তু তিনি ওই ফ্লাটটি না দিয়ে উল্টো এজাজকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সমস্ত কাগজপত্র জোর করে কেড়ে নেন।

আরও পড়ুনঃ  প্রায় ১৫ বছর পর ঢাকা ও ইসলামাবাদের এফওসি’র আয়োজন

এদিকে পুলিশের আরেকটি সূত্র জানায়, মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে ৬৩ লাখ টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগে মোস্তাফিজের আরো একটি অভিযোগ দেয়া হয় বোয়ালিয়া থানায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক নারী সেই অভিযোগ দেন। তবে পুলিশকে মধ্যস্থতা করে তার নামে ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য মোস্তাফিজকে চাপ প্রয়োগ করতে অভিযোগটি দেন সেই নারী।

ওই নারীর অভিযোগ, নগরীর ঘোড়ামারা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনে মোস্তাফিজ ৬৪ লাখ টাকা দাম ধরে তার নিকট বিক্রি করেন। এরই মধ্যে ওই নারী মোস্তাফিজকে ৬৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু এখন আরো ১১ লাখ টাকা বেশি দাবি করছেন মোস্তাফিজ। ওই টাকা না দিলে ওই নারীকে ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছেন মোস্তাফিজ।

আরও পড়ুনঃ  রিমান্ড শুনানি হয়নি, আ.লীগ-ছাত্রলীগের ৮ জনকে কারাগারে প্রেরণ

ওই নারী এর আগে এক রাজশাহীর সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। মেয়রের হস্তক্ষেপে তিনি ফ্ল্যাট বুঝে পেলেও তাকে রেজিস্ট্রি দেননি মোস্তাফিজ।

প্রসঙ্গত, মাত্র ১০-১২ বছর আগেও রাজশাহীর একটি বেসরকারি কোম্পানির অফিস সহকারী ছিলেন মোস্তাফিজ। পড়াশোনার খরচ যোগাতে প্রয়াত এক ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে বাবা এবং তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানাকে মা পাতিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। তাদের নিকট থেকেও প্রতারণা করে প্রায় কোটি টাকা এবং ৩ কাঠার একটি জমি আবাসন ব্যবসার নাম করে নেন মোস্তাফিজ। এরপর থেকে মোস্তাফিজের উত্থান শুরু হয় রাজশাহী নগরীতে। একের পর এক প্রতারণা করে মাত্র পাঁচ সাত বছরের মাথায় সেই প্রতারক মোস্তাফিজ অন্তত ২০ কোটি টাকার মালিক হয়ে যান।

আরও পড়ুনঃ  রাবি ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

তাকে নিয়ে গত ২১ মার্চ একটি অনুসন্ধানী খবর প্রকাশ হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে আরো নানা অভিযোগ আসতে থাকে। অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন সেই প্রতারক মোস্তাফিজ।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *