• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  • somoyerkotha24news@gmail.com
  • +880-1727-202675

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে মিষ্টি নিয়ে আইসিইউতে

প্রকাশ: বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩ ১০:৫৬

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে মিষ্টি নিয়ে আইসিইউতে

স্টাফ রিপোর্টার: নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় পড়ে গিয়ে প্যারালাইজড হওয়ায় শ্রুতলেখকের মাধ্যমে পরীক্ষা, তারপর শ্বাসকষ্ট। টানা এক মাস নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিউতে) ভর্তি। সঙ্গে ভেন্টিলেশনে। মেয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন মা-বাবা। শেষ পর্যন্ত আইসিইউর ফাঁড়া কাটলেও দুই মাস ফিজিওথেরাপি দিতে হয়। তারপর মেয়ে পড়ার টেবিলে বসেন। সেই মেয়ে এবার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

মেয়েটির নাম ফারিহা আফরিন। বাড়ি রাজশাহী নগরের বুলনপুর ঘোষপাড়া এলাকায়। তিনি ভর্তির সুযোগ পেয়ে গত সোমবার দুপুরে মাকে সঙ্গে করে মিষ্টি নিয়ে হাজির হন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউর ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামালের কাছে। তিনি মিষ্টি পেয়ে হতবাক। প্রথমে বুঝতে পারেননি কেন তাঁর কাছে এ উপহার নিয়ে আসা। পরে জানতে পারেন, চার বছর আগে মেয়েটি টানা এক মাস আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রতিদিন মনে হতো আজই তাঁর শেষ দিন।

আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘সব রোগীকেই আমরা একই রকম যত্ন নিই। কিন্তু এই মেয়েটি আমাকে মনে রেখেছে, এ জন্য ভালো লাগছে।’ যোগাযোগ করা হলে ফারিহা আফরিন শোনালেন তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে গল্প। বললেন, ‘আমার অতীতের অসুস্থতা ছিল আরও ভয়াবহ। আমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়তাম, তখন আমার “জিবিএস” হয়েছিল। এটা একরকম ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হয়। আমি তখন বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। প্রথম আমার একটি হাত প্যারালাইজড হয়ে যায়। লিখতে পারছিলাম না। তারপরও আমি স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাই। ওই দিন আমি বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলাম। তখন আমার পা প্যারালাইজড হয়ে গেল। তবু আমি পরীক্ষা দিতে চাই। শেষ পর্যন্ত আমার স্কুলের শিক্ষকেরা সপ্তম শ্রেণির একটি মেয়েকে শ্রুতলেখক হিসেবে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেন।’

আরও পড়ুনঃ  উত্তরায় চীনা নাগরিককে হত্যা করে পালায় অপর দুই চীনা : সিসিটিভি ফুটেজ

ফারিহা বলতে থাকেন, ‘আমি উত্তর বলি আর ওই মেয়ে লিখল। এরপর আমার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হলো। আমি আর কথা বলতে পারি না। পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষাটা আর দেওয়া হলো না। প্রথম অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার নম্বর গড় করে আমাকে পাস করিয়ে দেওয়া হলো। আর আমাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলো। সারা দিন আমি ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে পড়ে থাকলাম। কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। এরপর আমাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হলো। ওই চিকিৎসক আমাকে আইসিউতে ভর্তির সুপারিশ করলেন। কিন্তু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিউর শয্যা ফাঁকা না থাকায় আমাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালের আইসিউতে নেওয়া হলো। আমি তখন মৃত মানুষের মতো হয়ে গিয়েছিলাম, চোখের পাতা পর্যন্ত নাড়াতে পারতাম না। এক দিন পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে শয্যা পাওয়া গেল। আমি সেখানে টানা এক মাস চিকিৎসাধীন ছিলাম। পুরো সময় আমাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হলো।’

আরও পড়ুনঃ  বিভাগীয় পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠিত

ফারিহা আফরিন আরও বলেন, ‘২০১৯ সালের প্রথম দিন, অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে আমাকে বাসায় আনা হলো। তারপর প্রায় দুই মাস আমাকে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হলো। আমি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠি। ২০২০ সালে পিএন সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২২ সালে নগরের কাশিয়াডাঙ্গা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিই। এবার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। সংবাদটি শোনার পরেই আমার মনে হয়েছে, আমি আইসিইউতে এক মাস মৃত মানুষের মতো ছিলাম। আমার বাবা এক মাস হাসপাতালের বারান্দায় কাটিয়েছেন। অনেক রাতে বাবার কাছে খবর গেছে যে আমি মারা গেছি। সে অবস্থা থেকে আমি আজ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। আইসিইউর ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামালের অবদানের কথা কোনো দিন ভুলতে পারব না। সে জন্যই মাকে সঙ্গে করে এসেছিলাম।’

আরও পড়ুনঃ  বাগমারার তাহেরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের বিদায়-নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

ফারিহা আফরিনরা দুই ভাই-বোন। বড় ভাই রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যায়ে পড়েন। মা লায়লা আঞ্জুমান একটি কলেজের প্রদর্শক। বাবা মো. আনোয়ার হোসেন কৃষিভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক। তিনি বলেন, ‘টানা এক মাস হাসপাতালের বারান্দায় কাটিয়েছি। রাতে রাতে খবর এসেছে মেয়ে মারা গেছে। আমার সেই মেয়ে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমি আইসিইউর ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফার কথা কোনো দিন ভুলব না।’

সর্বশেষ সংবাদ

মাদক ব্যবসায়ী মা-ছেলে গ্রেফতার!
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১১:৫৭
কোহলির সেঞ্চুরিতে পাত্তাই পেল না পাকিস্তান
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১১:৫৭
নিউজিল্যান্ডকে যে লক্ষ্য দিতে চায় বাংলাদেশ
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১১:৫৭
 

রাজনীতি-এর আরও সংবাদ

 



সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার

ঢাকা অফিস: ১২১,ডি.আই.টি, এক্সটেনশন রোড, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। রাজশাহী অফিস: বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: somoyerkotha24news@gmail.com, মোবাইল: 01727202675